বিএনপির হাতেই মুক্তিযোদ্ধার সঠিক তালিকা?

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ১০, ২০১৭, ০৬:৪৯ পিএম

ঢাকা: একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা নিয়ে দেড় বছর আগে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনাও হয়েছিল।

মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রসঙ্গে ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া অভিযোগ করেছিলেন, ‘সরকার নানারকম মুক্তিযোদ্ধা তালিকা তৈরি করছে। যাদের অন্যায়ভাবে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেয়া হচ্ছে; আমরা ক্ষমতায় এলে সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করে তাদের যথাযথ সন্মান ও সন্মাননা দেব।’

সেদিন খালেদা জিয়া আরো বলেছিলেন, ‘আজকে বলা হয়, এতো লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানারকম তথ্য আছে।’

সেই বিতর্কের অবসান করতেই রূপকল্প-২০৩০- এ মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নের অঙ্গীকার করলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বুধবার (১০ মে) বিকেল পাঁচটার দিকে রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনের বলরুমে ‘ভিশন টুয়েন্টি থারটি বা রূপকল্প-২০৩০’ তুলে ধরতে গিয়ে এ অঙ্গীকার করেন। একই সঙ্গে সব ধরনের সরকারি বেসরকারি যানবাহনে মুক্তিযোদ্ধাদের অর্ধেক ভাড়া কার্যকর করারও অঙ্গীকার করেন।

প্রসঙ্গত, যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর বিভিন্ন লেখায় মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার আগে প্রশ্ন তুলেছিলেন বাংলাদেশে অবস্থানরত ব্রিটিশ নাগরিক ডেভিড বার্গম্যান। তিনি ব্লগ লিখে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অবমাননার দায়ে শাস্তিও পেয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশে ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ নারী ধর্ষিত হওয়ার তথ্যের ‘কোনো ভিত্তি নেই’ বলেও বার্গম্যান তার লেখায় দাবি করেছিলেন।

২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ওই সভায় খালেদা জিয়া দাবি করেছিলেন, ‘যারা যুদ্ধ করেনি, যারা নানাভাবে অপরাধের সঙ্গে সাহায্য করছে, তারা এখন আওয়ামী লীগের প্রিয় ও কাছের লোক। এরকম বহু আছে। আওয়ামী লীগের নিজের ঘরে মুক্তিযোদ্ধা নাম দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের পালছে, মন্ত্রী বানায়, ওমুক বানায়। অনেক রাজাকার আছে তাদের দলে। তাদের কিন্তু তারা চোখে দেখছে না। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেই।’

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট করে সমালোচিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আরো দাবি করেছিলেন তাদের দলে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারা আছেন।

রূপকল্প-২০৩০ উপস্থাপনাকালে মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রকাশের অঙ্গীকারের মাধ্যমে বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির ব্যর্থতাকে সামনে আনবে বলে মনে করছেন অনেকেই। 

সোনালীনিউজ/এন