আ.লীগের নতুন নেতৃত্ব খোঁজ করুন: শেখ হাসিনা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ১৭, ২০১৮, ০৮:১২ পিএম

ঢাকা: বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ঐক্যবদ্ধ থেকে আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করতে সর্বস্তরের নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিন যুগের বেশি সময় ধরে সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, একটা দলের সভাপতি হিসাবে ৩৭ বছর হয়ে গেছে, এর বেশি থাকা বোধ হয় সমীচীন হবে না। তার অবর্তমানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব খোঁজার জন্যও দলীয় নেতাকর্মীদের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (১৭ মে) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে নিজের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৩৭তম দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শুভেচ্ছা জানাতে গেলে শেখ হাসিনা তাদের এ কথা জানান।

সংগঠনকে শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখতে হবে, সংগঠন যদি শক্তিশালী হয়, সংগঠনে যদি ঐক্য থাকে, আর এই সংগঠন যদি জনগণের পাশে থেকে জনমত সৃষ্টি করতে পারে, তখনই যেকোনো কিছু অর্জন করা সম্ভব হয়; যা আমরা বারবার প্রমাণ করেছি।’

১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, একাশি সালে আওয়ামী লীগের কনফারেন্সে আমার অজান্তেই আমাকে দলের সভানেত্রী করা হয়।

নিজের ছাত্র রাজনীতির অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এক কঠিন সময়ে তিনি দেশে ফেরেন। জাতির পিতার খুনিরা তখন পুরস্কৃত হয়ে বহাল তবিয়তে, ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স থাকায় বাবা হত্যার বিচার চাইতে পারছেন না, জিয়া তখন নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে প্রতি রাতে কারফিউ দিয়ে দেশ চালাচ্ছেন। আর ভাঙার চেষ্টা চলছে আওয়ামী লীগকে।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসাবে উঠে দাঁড়াবে, স্বাধীন দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে; এটা যারা চায়নি তাদেরই এই ষড়যন্ত্র ছিল। তারা এই দেশটাকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল।”

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে দেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীশ্রেণির যারা দেশের গণতন্ত্র দেখতে পান না, তাদের কঠোর সমালোচনা করে এদের সামরিক সরকারগুলোর পদলেহনকারী ও সুবিধাভোগী বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘অবৈধভাবে দল গঠনের মধ্যে তারা গণতন্ত্র পায়।’

প্রতিবন্ধকতা অতিক্রমের জন্য নেতাকর্মীদের আত্মবিশ্বাসী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “বারবার বাঁধা এসেছে, আসবে; এটাই স্বাভাবিক। হত্যার (বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা) বিচার করেছি। ষড়যন্ত্রের তদন্ত হয়নি, বিচার হয়নি।”

প্রাণনাশের জন্য হামলার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “মৃত্যুকে আমি অনেক কাছ থেকে দেখেছি। মৃত্যুকে আমি পরোয়া করি না।”

যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে যারা সাক্ষী দিয়েছিল, তারা যেন কোনোভাবেই নির্যাতনের শিকার না হন; সেজন্য নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “সবাইকে নজরে রাখতে হবে; যারা সাক্ষী দিয়েছে, তাদের ওপরও কিন্তু অত্যাচার হয়েছে। এমন বহু ঘটনা আমার কাছে এসেছে।”

তিনি আরো বলেন, “সাক্ষীদের অত্যাচারের সঙ্গে জড়িতদের ‘ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট’ হবে। তারাও সমঅপরাধী। অপরাধী হিসাবে একইভাবে বিচার হবে।”

গণভবনে বৃহস্পতিবার (১৭ মে) প্রথমে দলের সিনিয়র নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও সাহারা খাতুন, দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনিসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর একে একে প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম