‘ড. কামাল সাহেব কামাল করে দিলেন’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০১৮, ০৯:১৩ পিএম
ফাইল ফটো

ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ড. কামাল সাহেব কামাল করে দিলেন। আমরা বলেছিলাম সংলাপের প্রয়োজন নেই। কিন্তু এখন সংলাপ করছি। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন এবং প্রধানমন্ত্রীও তা গ্রহণ করেছেন। আমরা চাই এই আলোচনার মধ্য দিয়ে সুন্দর অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। তবে সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচনের বাইরে কেউ কিছু চিন্তা করবেন না।

বুধবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

‘ম্যালেরিয়া নির্মূলে বাংলাদেশ: বাস্তবতা ও প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সহায়তায় ব্র্যাক এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমরা সংসদে সংক্রামক ব্যাধি আইন পাশ করেছি। জরুরি প্রয়োজনে যেন ব্যবস্থা নিতে পারি। সেই আইনের প্রথমেই ম্যালেরিয়া রোগের কথা বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূল করতে পারব। যে দেশের মানুষ মাত্র ৯ মাসে দেশ স্বাধীন করতে পারে, সে দেশের মানুষ ম্যালেরিয়াও নির্মূল করতে পারবে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ম্যালেরিয়া নির্মূলের বিষয়টি নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গত সাত দিনে স্বাস্থ্যখাতে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার অবকাঠামো নির্মাণকাজ উদ্ধোধন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সাজারি ইন্সটিটিউট, পঙ্গু হাসপাতালের নতুন ১২তলা ভবন নির্মাণসহ আরো ৮টি হাসপাতালের ভর্টিক্যাল এক্সটেনশন। সেখানেও প্রায় হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর মহাখালীতে প্রায় ৬০০ কোটি ব্যয়ে নির্মিত ডাইজেস্টিভ ডিজিজ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল উদ্বোধন করলেন। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে গোপালগঞ্জে সরকারি ওষুধ কোম্পানি ইসেনশিয়াল ড্রাগস’র সবচেয়ে বড় ওষুধ কারখানা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। বর্তমানে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে। ফলে উন্নয়ন কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমান সরকার ইতিমধ্যে ১০ হাজার নার্স এবং ৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছে। আগামী দুদিনের মধ্যে আরও ৫ হাজার প্রশিক্ষিত নার্স নিয়োগ দেয়া হবে এবং নির্বাচনের আগেই আরও ৭ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হবে।

বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি ঠাট্টা করে বলেন, বাজারে যেসব মশার কয়েল এবং স্প্রে পাওয়া যায় সেগুলোতে কোনো কাজ হয় না। মশা তো মরেই না, আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ম্যালেরিয়ার মশা আরো ভয়াবহ, সেগুলো আওয়ামী লীগ বিএনপি চিনবে না।

বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফপ্তরের ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির ডিপিএম ডা. এম এম আক্তারুজ্জামান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা, ব্র্যাকের কমিউকেবল ডিজিজেস, ওয়াশ ও ডিএমসিসি কর্মসূচির পরিচালক ড. মো. আকরামুল ইসলাম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মেডিকেল অফিসার ডা. মিয়া সেপাল প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশে ১৭ দশমিক ৫২ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৭৫ লাখ ২০ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। ৬৪টি জেলার মধ্যে ১৩ জেলায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ রয়েছে। প্রতিবছর ম্যালেরিয়া রোগে অসুস্থতা এবং মৃত্যুর প্রায় ৯৮ শতাংশ সংগঠিত হয় ১৩টি জেলায়।

জেলাগুলো হলো-রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, শেরপুর এবং কুড়িগ্রাম। তবে সবচেয়ে বেশি ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকা হলো পার্বত্য বান্দরবান, রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ি।

ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির প্রসঙ্গে বক্তারা বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ১৩টি ম্যালেরিয়া প্রবণ জেলায় প্রতি হাজার জনসংখ্যায় বার্ষিক সংক্রমণের হার ১ দশমিক ৫৮ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৪৬ এর নিচে নামিয়ে আনা। একই সময়ে ১৩টি ম্যালেরিয়াপ্রবণ জেলার মধ্যে ৮টি জেলায় সংক্রমণ রোধ করা এবং ৫১টি জেলাকে ম্যালেরিয়া মুক্ত নিশ্চিত করা।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম