অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি কামালের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৯, ০৮:৩৬ পিএম

ঢাকা: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি।

শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে সু্প্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের বিষয়ে গণশুনানির সমাপনি বক্তব্যে এ দাবি জানান তিনি।

সকাল ১০টার দিকে শুরু হয়ে বিকেল প্রায় সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলে এই গণশুনানি। এ সময় সারা দেশ থেকে আসা ৪৩ জন প্রার্থী নির্বাচনের আগে ও পরের অবস্থা তুলে ধরেন।

শুনানির বিচারক হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, ড. নুরুল আমিন বেপারী, অ্যাড. ড. মহসিন রশীদ, সাবেক বিচারপতি আ ক ম আনিসুর রহমান খান, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী।

ড. কামাল বলেন, যে কথা প্রায় সবাই আন্তরিকভাবে বলেছেন, যে আমাদের খালেদা জিয়ার মুক্তি। তার মুক্তি অত্যন্ত যুক্তি সঙ্গত দাবি। অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি হওয়া উচিত। এই অনুষ্ঠান থেকে দাবিটা যাওয়া দরকার। এটা দুঃখজনক যে স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর এই ধরনের দাবি আমাদের করতে হচ্ছে। গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য যারা ভূমিকা রেখেছেন।

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটাকে নির্বাচন বলা যায় না, নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। আমরা বুঝতে পেরেছি এটা কোনো নির্বাচন হয়নি।

এ সময় প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ এই নেতা বলেন, আপনারা মারা গেলে উত্তরসূরিরা আপনাদের নিয়ে লজ্জা পাবে। আপনারা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখুন কী করেছেন? আপনারা সংবিধান অমান্য করেছেন।

ড. কামাল বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে আনতে হবে। যেন স্বৈরাচারকে সরাতে পারি এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

গণশুনানির শুরুতে চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও আহতদের স্মরণে শোক প্রস্তাব উপস্থাপন ও এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। শুনানিতে আরো উপস্থিত ছিলেন, কৃষক-শ্রমিক লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির সিনিয়র নেতা, সারা দেশ থেকে আসা জোটটির প্রার্থীরা।

গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি, সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমার কেন্দ্রে ইভিএম ছিল। যা প্রিজাইডিং অফিসারের আঙ্গুলের চাপে কাজ করা যায়। সকাল থেকে বলা হয়েছে ইভিএম নষ্ট, কাজ করে না, ভোট বন্ধ। এ সময় তার নির্বাচনী আসনে আহত মহিলা এজেন্ট সোনিয়া নির্বাচন চলাকালীন সময়ে  ঘটে যাওয়া ঘটনা তুলে ধরেন।

সোনিয়া বলেন, আমি ভোট কেন্দ্রে গেলে আমাকে ভিতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। আমি যখন বলি ঐক্যফ্রন্টের এজেন্ট তখন আমাকে মহিলালীগ, যুবলীগের ছেলেরা শূন্যে উঠিয়ে ফেলে দেয়। এতে আমার গর্ভে থাকা সন্তান মারা যায়।

মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, এই নির্বাচনে যে পরিমাণ সমর্থক আমাদের ছিল, তা কখনও ছিল না।যেখানে মেয়ে প্রস্তুত, মায়েরা প্রস্তুত, দেশের জনগণ প্রস্তুত, আমরা কেন্দ্রীয় নেতারা সেখানে কিছু কিরতে পারলাম না। এজন্য একটা সমাবেশ দেন। আমরা প্রার্থীরা কেন একত্র হতে পারলাম না? সে জন্য ৩০০ আসনের প্রার্থীদের ডেকে জবাবদিহিতা করেন। আজকে অডিওতে দেখেন আর ভিডিওতে দেখেন সারা দেশে একই নাটক। কারণ পরিচালক একজন।

তিনি বলেন, আজ আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য কর্মসূচি দেন। আমি বলবো ১৫ দিনের মধ্যে একটা রায় দেন। দরকার হলে পুলিশের কথা নেন, সরকারের কথা নেন। তবুও একটা রায় দেন।

শামা ওবায়েদ বলেন, আমার আসন ফরিদপুর -২। আমাদের একটা ধারণা আছে ফরিদপুর আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত। কিন্তু এবার টুঙ্গিপাড়াতেও শেখ হাসিনাকে ভোট কাটতে হয়েছে। নির্বাচনকালীন সময়ে দুই মাস ফরিদপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে দেখেনি জনগণ। কিন্তু প্রার্থীর ছেলে সামনে ও পেছনে পুলিশ-র‌্যাব নিয়ে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছে। শালতা উপজেলায় পুলিশের এসআইসহ আহত হয়েছি। কিন্তু আমার মামলা কেউ নেয়নি। নির্বাচনের আগের দিন আমার এলাকায় সন্ধ্যা ৭টায় ভোট কাটা হয়েছে।

ড. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমিতো কারাগারে ছিলাম, কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে জানতে চাই ইভিএমের যে ৬ আসন ছিল সেখানে আপনারা উপস্থিত ছিলেন কিনা?

তিনি বলেন, আমি যেখানে ভোট দেই সেখানে প্রতিটা ভোটারকে চিনি। অথচ সেখানে ধানের শীর্ষে ভোট পরেছে ৮টি। জেল থেকে বের হয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেছিলাম আমাকে ৮টি ভোট দিয়েছে যারা তাদের নাম ঠিকানাটা দেন। তিন দিন পর আমাকে বলা হলো রেকর্ড নাই। তাহলে ইভিএমের নির্বাচন কেমন ছিল?

সোনালীনিউজ/এমএইচএম