শোভনকে ডেকে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০১৯, ০৬:৩৭ পিএম

ঢাকা: ছাত্রলীগের সভাপতি রেজোয়ানুল হক শোভনসহ চারজন ছাত্রনেতা মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী এ সময় শোভনকে কাছে ডেকে নেন। তিনি শোভনকে বলেন, রাজনীতি করতে হলে মানুষের গালি শুনতে হবে, মানুষের কটুকথা শুনতে হবে, সমালোচনা সহ্য করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শোভনকে বলেন, মনে রাখবা, আজ তোমাকে যে হাত দিয়ে ফুলের মালা পরাবে, সেই হাত দিয়ে তোমাকে জুতার মালাও পরাতে পারে। যে মুখ দিয়ে তোমার প্রশংসা করবে, সেই মুখ দিয়ে তোমাকে গালি দেবে। এসব সহ্য করেই তোমাদের রাজনীতি করতে হবে।

এর আগে ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে শোভন লিখেন, আপা আমি ব্যর্থ,আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) নুরুল হক নুরকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ঢাবি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা নির্বাচনের ফল মেনে নিন। আমরা ক্যাম্পাসে সৌহার্দ বজায় রেখে একসঙ্গে ভাই ভাই হয়ে পথ চলব। সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেকোনো বিষয় মিলেমিশে সমাধান করব।

ভিপি নুর বলেন, শোভন আমার বড় ভাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যিলয়ের সব ছাত্র সংগঠন কাধে কাধ মিলিয়ে একসাথে কাজ করব। পরীক্ষা ও ক্লাশ বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হলো।

তিনি আরো বলেন, আমরা চেয়েছিলাম একটি দৃষ্টান্তমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। পুন:নির্বাচনের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিবেচনা করবে।

এ সময় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে নবনির্বাচিত ভিপি বলেন, আমি দুপুরে নির্বাচিত ভিপি হিসেবে ক্যাম্পাসে আসলে আমার ওপর হামলা হয়। ছাত্রলীগ হামলা করে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টর এবং ছাত্রলীগ সভাপতি বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন, আমি হামলার ঘটনায় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহার করলাম।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভরত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, মানুষকে দূরে ঠেলে দিয়ে লাভ নাই। কারণ, আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে চলতে হবে। সবাই তো আমাদের। কে আপন, কে পর? সবাই তো আপন। তুমি যদি মানুষকে পর করে দাও তাহলে তো হবে না। তোমাকে মনে রাখতে হবে তুমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী। ছাত্রলীগ কর্মীদের মন ছোট হতে পারে না। ছাত্রলীগ কর্মীদের মন অনেক বড় হতে হয়।

ভিসির বাসভবন অবরোধ তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে শোভন বলেন, এই অবরোধ বা এই ভিসির বাড়ির সামনে দাঁড়ানো আল্লাহর ওয়াস্তে আমি তোমাদের বলতেসি, তোমরা ভিসির বাসার সামনে থেকে সরে যাও। তোমরা কার জন্য করতেসো, ছাত্রলীগের জন্যই তো করতোসো, আমাদের জন্যই তো, আমার জন্যই তো করতেসো, আমি এইখানে বলতেসি। তোমরা আমার কথা মানবা না? আমি তো ব্যক্তি না, আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, আমার একটা জায়গা আছে, আমার জায়গাটা তোমরা নষ্ট করো না।’

তোমাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের শুধু না, সারা দেশের ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করি। আমরা সেই সব ছাত্রদের দেখে রাখবো, এটা আমাদের দায়িত্ব। দায়বোধের জায়গা থেকে আমরা এটা করবো’ বলেও যোগ করেন তিনি।

শোভন বলেন, আমি তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছি তোমরা পাঁচ মিনিটের মধ্যে এই জায়গা ছেড়ে দিবা। যদি না যাও, তাহলে আমি বুঝবো তোমরা আমাকে মানো না।

সবার সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, অনেক সময় অনেক কিছুর কারণে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার জন্য দেশের ভালোর জন্য নিজেকে বলি দিতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার জন্য আমরা সবাইকে একসাথে নিয়ে কাজ করতে চাই। নূরও আমাদের সঙ্গে কাজ করবে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম