প্রথমবারেই লটারি কিনে 

৬০ কোটি টাকা জিতলেন বাংলাদেশি সবুজ মিয়া

  • প্রবাস ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২৫, ১২:১১ পিএম

দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে দুবাইয়ে দর্জির কাজ করছেন বাংলাদেশি প্রবাসী সবুজ মিয়া। এতদিনে বহুবার লটারি কেনার প্রস্তাব পেলেও কখনো আগ্রহ দেখাননি। কিন্তু ২৯ জুলাই ছিল এক ব্যতিক্রমী দিন। সেদিন হঠাৎ মন যেন জেদ করেই বলল—এবার একটা টিকিট কিনেই দেখা যাক। আর সেই প্রথম টিকিটেই কপাল খুলে গেল সবুজের; তিনি জিতে নিলেন ‘বিগ টিকিট’ লটারির ২০ মিলিয়ন দিরহাম—বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬০ কোটি!

এই ঘটনাটি শুধুমাত্র ভাগ্যের নয়, বরং এক গভীর আত্মবিশ্বাসেরও জয় বলে মনে করেন সবুজ। খালিজ টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “অনেকেই আমাকে বলত লটারি কিনতে, কিন্তু কখনো আগ্রহ হয়নি। সেদিন কেন জানি মনটা বলল—একটা কিনে দেখি।”

আবু ধাবিতে এক গ্রাহকের কাজ শেষ করে ফেরার পথে তিনি এক ট্যাক্সি ড্রাইভারের কাছ থেকে বিগ টিকিট স্টোরের ঠিকানা নেন। গিয়ে দেখেন টিকিটের দাম ৫০০ দিরহাম। একটু দ্বিধায় পড়ে যান—এই অর্থ দিয়ে অনেক কিছু করা যেত। কিন্তু মন যেন জেদ ধরে বসে, ‘এবার কিনতেই হবে।’

সবুজ বলেন, “টিকিট কেনার পর থেকেই এক অদ্ভুত আত্মবিশ্বাস কাজ করছিল। সারাদিন কাজ করতাম, হঠাৎ টিকিটের কথা মনে পড়ে যেত। মন বলত, আমি জিতব। আবার নিজেকেই বলতাম—প্রথমবার কিনেই জেতা সম্ভব? কিন্তু মনটা ছিল ভীষণ দৃঢ়।”

পাঁচ দিন পর সেই আত্মবিশ্বাসই সত্যি হলো। মাসিক ড্রতে তার নাম ঘোষিত হয় বিজয়ী হিসেবে। এর আগেও জুলাই মাসে এক বাংলাদেশি মোহাম্মদ নাসের বেলাল ২৫ মিলিয়ন দিরহাম জিতেছিলেন। মজার বিষয় হলো, সবুজের কেনা টিকিটটিও তিনিই বেছে দিয়েছিলেন।

জয়ের খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম থেকে একের পর এক ফোন আসতে থাকে সবুজের কাছে। তবে এখনো তিনি পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারছেন না।

“যতক্ষণ না টাকা হাতে পাচ্ছি, ততক্ষণ বিশ্বাস হচ্ছে না। অনেক মিডিয়া থেকে ফোন আসছে, আমি কথা বলিনি। কোথাও যেন ভয় পাচ্ছি—যদি এটা মিথ্যে হয়!”—বলছিলেন সবুজ।

প্রথম কাজ হিসেবে তিনি মক্কায় পবিত্র ওমরাহ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। “জানুয়ারিতেই ওমরাহ করার পরিকল্পনা ছিল। টিকিট কেনার সময়ও ভাবছিলাম, যদি জিতি, তাহলে আগে ওমরাহ করব। তারপর ভাবব বাকি টাকা কীভাবে ব্যবহার করব।”

সবুজের পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী, দুই সন্তান (১০ বছর ও ৩ বছর বয়সী), মা ও এক বোন। তার জয়ের খবর পেয়ে পরিবার থেকেও অনেকেই জানতে চান বিষয়টি সত্য কি না।

সবুজ বলেন, “আমি তাদের বলেছি, টিকিট কিনেছিলাম ঠিকই, কিন্তু এখনো নিশ্চিত নই। আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহ আমাকে এই অর্থ সঠিকভাবে খরচ করার পথ দেখাবেন। সবকিছুই আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি।”

সূত্র: খালিজ টাইমস

ওএফ