বাংলাদেশি শ্রমিক নির্যাতন

আইনি ব্যবস্থা নেবে মালয়েশিয়া

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৯, ০১:৪৯ পিএম

ঢাকা : এবার চিকিৎসা সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ডব্লিউআরপির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে যাচ্ছে মালয়েশিয়ান সরকার। বিদেশি শ্রমিকদের সঙ্গে বাজে আচরণ, বেতন না দেওয়াসহ সরকারি তদন্তে ৪২টি অভিযোগের আলামত পাওয়ায় এ মামলা দায়ের করবে দেশটির সরকার। খবর মালয় মেইল। ডব্লিউআরপি হলো একটি রাবার গ্লাভস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। কুয়ালালামপুরের কাছেই মালয়েশিয়াভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটির সদর দফতর অবস্থিত।

গত ডিসেম্বরে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, ডব্লিউআরপি নামক প্রতিষ্ঠানের কারখানায় কাজ করা বাংলাদেশি শ্রমিকদের বাধ্যতামূলক ওভারটাইম করানোর পাশাপাশি জোরপূর্বক শ্রমদানে বাধ্য করা হচ্ছে। গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, বেতন বকেয়া রাখা, ঋণের জালে আটকানো ও পাসপোর্ট জব্দ করে রাখার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। গার্ডিয়ান আন্তর্জাতিক শ্রম সংঘের নীতিকে বিবেচনায় নিয়ে একে ‘আধুনিক শ্রমদাসত্ব’র পরিস্থিতি আখ্যা দেয়। তবে সেসময় ডব্লিউআরপি কর্তৃপক্ষ সে অভিযোগ নাকচ করে দেয়। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদবিষয়ক মন্ত্রী এম কুলাসেগারান গত বৃহস্পতিবার কামপুং তাই লী গ্রামের বাসিন্দাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণকালে সাংবাদিকদের জানান, ডব্লিউআরপির বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

তিনি জানান, অভিযোগগুলোর মধ্যে একটি হলো বাংলাদেশি ও নেপালি শ্রমিকদের জন্য যথাযথ জীবনমান নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়া। এ অভিযোগ তুলে কয়েকদিন আগেও ধর্মঘট পালন করেছেন দুই হাজার কর্মী।

সরকারি তদন্ত বিষয়ে তিনি জানান, তাদের বিরুদ্ধে ৪২টি অভিযোগের আলামত পাওয়া গেছে। নিশ্চিত হওয়া গেছে যে কোম্পানিটি শ্রম আইন লঙ্ঘন করেছে। তবে শ্রম আইনের কোন ধারার আওতায় মালয়েশীয় সরকার মামলাটি দায়ের করবে সে ব্যাপারে কিছু জানাননি কুলাসেগারান।

তিনি আরো জানান, শ্রমিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণকারী কোম্পানির তালিকায় এ রকম আরো দশটি কোম্পানি আছে। তবে তদন্ত শেষ না হওয়ায় এসব কোম্পানির নাম প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।

দ্য গার্ডিয়ানের কাছে প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিকরা অভিযোগ জানায়, তাদের কারখানার ভেতরে আটকে রাখা হয়। কেবল রোববার তারা বাইরে যাওয়ার সুযোগ পায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেপালি শ্রমিক বলেছিলেন, ‘তিন মাস হয়ে গেছে আমাদের বেতন দেওয়া হয়নি; পরিস্থিতিটা খুব ভয়াবহ। আমার পরিবারের অর্থের প্রয়োজন কিন্তু আমি তাদের কাছে অর্থ পাঠাতে পারছি না। আমার কারখানা কোথায় তারা জানতে চাইছে।’

মালয়েশিয়ার শ্রমিকদের মতো করেই বিদেশি শ্রমিকদের সঙ্গে আচরণ করার জন্য প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষকে আহ্বান জানিয়ে কুলাসেগারান বলেন, ‘স্থানীয় শ্রমিকরা তো কোনো অভিযোগ করেন না। কারণ কোম্পানিগুলো জানে যে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে তারা শ্রম দফতরে চলে যাবে। বিদেশি শ্রমিকদের সঙ্গে এটা কেন? এটা ঠিক নয়।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই