অলৌকিককন্যা রেশমার ঘরজুড়ে আলো...

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০১৭, ০৯:০৬ পিএম

ঢাকা: সাভারের রানা প্লাজার কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। সেই ঘটনায় কেঁপে উঠেছিলো বাংলাদেশ। জেনেছিলো পুরো বিশ্ব। লাখ মানুষ কেঁদেছিলো। সেই ঘটনায় হঠাৎ করেই একটি মেয়ে চলে আসে মিডিয়ার সামনে। পাল্টে যায় পুরো চিত্রই। সেই মেয়েটিই রেশমা। ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৭ দিন পর জীবিত উদ্ধার হন রেশমা। যা বিশ্বের বিস্ময় হয়ে আছে।

সেই বিস্ময়ের ঘোর কেটে গেলে রেশমাকে একটি বেসরকারি পাঁচতারা হোটেলে চাকরির ব্যবস্থা করে দেয় সরকার। সেই ঘটনার পর কেটে গেছে চার চারটি বছর। আজ ভয়াবহতার আজ চার বছর পূর্তিতে মনে পড়ছে সেই রেশমাকে। কী খবর তার এখন?

সেই দুর্যোগের কথা কিছুই ভোলেননি রেশমা। গেল বছর ২০১৬ সালের ১৪ জানুয়ারি আতাউর রহমান রাব্বি নামে এক যুবককে বিয়ে করেছেন। এরই মধ্যে কোলজুড়ে এসেছে এক ফুটফুটে কন্যাসন্তান। নাম রেখেছেন রেদওয়ানা। রেশমার এখন স্বামী সন্তান নিয়ে সুখের সংসার। রাজধানীর গুলশানের কালাচাঁদপুর পাকা মসজিদের পাশে সাত তলা ভবনের চতুর্থ তলায় দুই রুমের একটি ছিমছাম বাসায় স্বামী-সন্তানসহ বসবাস করছেন।

স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে রেশমা

ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়ার পর ২০১৩ সালের ৬ জুন হোটেল ওয়েস্টিনের হাউসকিপিং বিভাগে পাবলিক অ্যাম্বাসেডর পদে চাকরি পান রেশমা। এখনো ওই পদেই চাকরি করছেন। সার্ভিস চার্জ ৩০ হাজার টাকাসহ বেতন পান ৩৫ হাজার টাকা। বছরে আড়াই হাজার টাকা করে দুই ঈদে বোনাসও পান। গেল ১২ জানুয়ারি থেকে চার মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন রেশমা।

রেশমার স্বামী রাব্বি জানান, একমাত্র কন্যাসন্তানের জন্য একটি ডিপিএস করবেন। মেয়ে রেদওয়ানাকে ভালো জায়গায় পড়ালেখা করিয়ে মানুষের মতো মানুষ করতে চান তারা। রেশমা ও রাব্বি পরস্পরকে ভালোবেসেই বিয়ে করেন, সংসার গড়ে তোলেন। রাব্বি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করছেন। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ।

১৯৯৪ সালের ৩ আগস্ট রেশমার জন্ম হয় দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট থানার কুশিগাড়ি গ্রামে। তার বাবার নাম আনসার আলী আর মা জোবেদা বেগম। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট রেশমা। বাবা মারা যাওয়ার পর মা দ্বিতীয় বিয়ে করেন বাবুল মিয়াকে।

ইতোমধ্যে পাল্টে গেছে রেশমাদের বাড়ির চিত্র। তিনটি পাকা ঘর তুলেছেন। আরো দুটি পাকা ঘর তৈরির প্রস্তুতি চলছে। প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে মায়ের কাছে পাঠান রেশমা।

সরকারিভাবে ৫০ হাজার, রানা প্লাজার ৫০ হাজার এবং বাড়ির জমি সংক্রান্ত বিরোধের সমঝোতায় এক ব্যক্তির কাছ থেকে পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। মোট মিলে দেড় লাখ টাকায় তিনটি পাকা ঘর তুলেছেন রেশমার মা। আরো দুটি ঘর তোলার কাজ করছেন।

সোনালীনিউজ ডটকম/ঢাকা/এআই