মা-বাবা চলে গেছেন আগেই, ভাইও কি চলে যাবে?

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০১৮, ১০:৫৯ এএম

ঢাকা: তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময় মাকে হারান। বাবাও চলে যান না ফেরার দেশে। কিন্তু চলার পথ থেমে নেই। স্বপ্ন দেখেন বিসিএস দিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দেবেন। ভালো একজন শিক্ষক হবেন। ছোট দুই ভাইকে পড়াশোনা করিয়ে বড় করবেন। এক সঙ্গে থাকবেন তিন ভাই। সুখে-দুঃখে পাশে থাকবেন। কিন্তু আজ সেই স্বপ্ন নিভে যাওয়ার পথে।

হতভাগা ছেলেটির নাম রাজীব হোসেন (২১)। রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আজ এই ছেলেটি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। হাসপাতালের বেডে শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। বড় ভাইয়ের এই অবস্থা দেখে ছোট দুই ভাইয়ের চোখে অশ্রু ছাড়া আর কিছুই নেই।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন রাজীব হোসেন।আইসিইউর সামনে রাজীবের দুই ভাই হাফেজ মেহেদি হাসান (১২) ও আবদুল্লাহ (১১)  কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ভাই ভালো হবে তো? ভাইয়ের কিছু হলে আমরা বাঁচব না। মা-বাবা চলে গেছেন অনেক আগেই, এখন একমাত্র ভরসা আমাদের এই ভাইটা। সেও কি চলে যাবে?

রাজীবের খালা জাহানারা বেগম জানান, সে  মতিঝিলে খালার বাসায় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে তিতুমীর কলেজে ভর্তি হয়। টিউশনি করে নিজের খরচ এবং একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করে ছোট ভাইদের খরচ জোগাত রাজীব। স্বপ্ন ছিল বিসিএস ক্যাডার হয়ে নামকরা শিক্ষক হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন কেড়ে নিল দুটি বাস।

রাজীবের চিকিৎসাক ও ঢামেক হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শামসুজ্জামান শাহীন বলেন, রাজীবের অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন। তার মাথায় আঘাত রয়েছে। খুলিতে ফাটল রয়েছে।

রাজীবের মামা জাহিদুল ইসলাম বলেন, টাকার অভাবে এখন আমাদের দুঃসময় যাচ্ছে। বাস দুটির কেউই আসেনি।

উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল রাজধানীতে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের দুই বাসের প্রতিযোগিতায় হাত হারান রাজীব। তার ডান কনুইয়ের উপর থেকে হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

এরপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম রাজীবকে হাসপাতালে দেখে এসে চাকরির ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন