ইমামতকে মূল্যায়ন করা হলে মুসলমানদের মধ্যে দ্বন্দ্ব

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০১৬, ০৩:৪০ পিএম

ধর্মচিন্তা রিপোর্টার
প্রতি বছরের ১৮ জিলহজ ইরানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঈদে গাদির পালিত হয়। দশম হিজরির এই দিনে বিদায় হজ থেকে ফেরার পথে ‘গাদির’ নামক স্থানে সুরা মায়েদার ৬৭ নম্বর আয়াত নাজিল হওয়ার পর বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর চাচাতো ভাই ও জামাতা আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী (আ.)-কে নিজের উত্তরসূরি বা স্থলাভিষিক্ত বলে ঘোষণা করেন। এ দিনটির ইতিহাস, গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন সাইয়্যেদ ইব্রাহিম খলিল রাজাভি, বলেন প্রতিবছর পবিত্র ঈদুল আজহার কয়েকদিন পর ঈদে গাদির পালন করে বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান। এখন প্রশ্ন হচ্ছে,বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ জানেন না এই ঈদ কি এবং কবে থেকে এ ঈদ চালু হয়?
জিলহাজ মাসের ১৮ তারিখে গাদীরের ঈদ পালন করা হয়। এ সম্পর্কে বিভিন্ন মোফাসসিরগন বিশেষ করে তাফসিরে কাবিরের মোফাসসির আল্লামা ফাখরুর রাজি সুরা মায়েদার ৬৭ নং আয়াতের তাফসিরে বলেন: হে রসূল, পৌঁছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে। আর যদি আপনি এরূপ না করেন, তবে আপনি তাঁর পয়গাম কিছুই পৌছালেন না। আল্লাহ আপনাকে মানুষের কাছ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফেরদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তিনি গাদিরের ঈদ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দেন। গাদীরের ঈদ সম্পর্কে রাসূল (স.) বলেন: মুসলমানদের জন্য গাদীরের ঈদ সর্বোত্তম ও গুরুত্বপূর্ণ ঈদ।
কিন্তু অতি দু:খের বিষয় এ ঈদকে যেভাবে মূল্যায়ন করার প্রয়োজন ছিল সেভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। সেজন্য বাংলাদেশে এ ঈদ নিয়ে বেশি আলোচনা করতে দেখা যায় না। তারপরও যাঁরা সুফি সাধক রয়েছেন তারা গাদীরের এ ঈদকে গুরুত্ব দিয়ে পালন করে থাকেন। আর যাঁরা আহলে বাইতের অনুসারী রয়েছেন তারাতো এ ঈদকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে পালন করেই। এ ঈদের দিনকে হজরত আলী (আ.)এর ইমামত প্রাপ্তির দিনও বলা হয়। এ দিন রাসূল (স.) এক লক্ষ বিশ হাজারের ও অধিক হাজিদের সামনে হজরত আলী (আ.)এর হাত উপরে তুলে বললেন: ‘মান কুনতু মাওলাহু ফাহাজা আলীয়ুন মাওলাহু” আমি যার যার মাওলা আলীও তার তার মাওলা। অর্থাৎ রাসূল (স.) এর রেসালতের সমাপ্তির পর হজরত আলী (আ.)এর ইমামতকে সেদিন রাসূল (স.) ঘোষণা করেন। যদি মুসলমানরা রাসূল (স.) এর রেসালতের পর হজরত আলী (আ.)এর ইমামতকে মূল্যায়ন করত তা হলে আজ মুসলমানদের মধ্যে কোন প্রকার দ্বন্দ্ব থাকত না।
মুসলমানদের কাছে এই ঈদের গুরুত্ব এসর্ম্পকে ইব্রাহিম খলিল রাজাভি বলেন, এ দিনটা ইসলামের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট। এ দিন রাসূল (স.) এর রেসালতের সমাপ্তির পর হজরত আলী(আ.)এর ইমামতের সূচনা হয়। এ দিনের পর থেকে দ্বীন রক্ষার জন্য হজরত আলী (আ.)কে পরিপূর্ণ দায়িত্ব দান করলেন। তারপর থেকে তিনি বিশ্ব জাহানের মাওলা হলেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, যখন রাসূল (স.) এ ঘোষণা দিলেন, তখন রাসূল (স.)এর সাহাবিরা বিশেষ করে হজরত ওমর (রা.) হজরত আলীর হাত ধরে বললেন: “বাখখিন বাখখিন লাকা ইয়া আলী ইবনে আবু তালিব আসবাহতা মাওলায়ি ওয়া মাওলায়ে কুল্লে মুমিন ওয়া মুমিনাত” হে আলী ইবনে আবু তালিব তুমি সকল মুমিন ও মুমিনাদের মাওলা হয়েছ, এজন্য তোমাকে মোবারকবাদ জানাই। লেখক : ইসলামি গবেষক
সোনালীনিউজ/ঢাকা