রমজানে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে রসুল (সা.) যা করতেন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ৩১, ২০১৮, ০৪:২২ পিএম

ঢাকা : রমজান মাসে অসহনীয় তাপমাত্রা দেখা দিলে রসুল (সা.) মাথায় পানি ঢালতেন। হজরত আবু বকর বিন আবদুর রহমান থেকে বর্ণিত, রসুলের (সা.) কয়েকজন সাহাবির উদ্ধৃতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, অত্যধিক পিপাসা বা তাপমাত্রার ফলে রসুলকে (সা.) তিনি মাথায় পানি ঢালতে দেখেছেন (আবু দাউদ : ২৩৬৫)।

দৈহিক প্রশান্তি ও স্বস্তি লাভের জন্য এমন করা দোষণীয় নয়। এর ফলে রোজাদারের ইবাদতের স্পৃহা বাড়বে। পূর্ণ গোসল, কাপড় ভেজানো, পানিতে ডুব দেওয়া- সবই মাথায় পানি ঢালার হুকুমভুক্ত। হজরত ইবনে উমর (রা.) একটি কাপড় পানিতে ভিজিয়ে শরীরে জড়িয়ে নিলেন। তিনি ছিলেন রোজাদার। শাবি রোজা রেখেই গোসলের জন্য হাম্মামে প্রবেশ করলেন।

হাসান বলেন, কুলকুচা কিংবা শীতলতা গ্রহণ রোজাদারের জন্য দোষণীয় নয়। আনাস বলেন, আমার একটি টব রয়েছে, রোজা রেখেই আমি তাতে প্রবেশ করি (বোখারি)। এগুলোর ওপর ভিত্তি করে রমজানে তাপমাত্রা বাড়লে বর্তমানে এসি রুমে সময় কাটানো একই হুকুমভুক্ত ধরা হবে। এক্ষেত্রে মৌলিক ও সাধারণ নীতিমালা হলো, ব্যক্তির জন্য ইবাদত পালন যা সহজ করে দেয়, তা করা রোজাদারের জন্য বৈধ। যে পরিশ্রম ও কষ্টভোগের ফলে ইবাদত থেকে বিচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাকে ত্যাগ করা বা এড়িয়ে যাওয়াই কাম্য। তবে যে কষ্টভোগের ফলে ইবাদত থেকে বিচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তাকে মেনে নেওয়া উত্তম। কারণ তা ইবাদতের বিনিময় বৃদ্ধি করে।

এ প্রসঙ্গে ইবনে তাইমিয়া বলেন, অযৌক্তিকভাবে আত্মাকে কষ্টদান কিংবা কঠোরতা আরোপ আল­াহর সন্তুষ্টি ও ভালোবাসা লাভের উপায় হতে পারে না। বান্দা যতটা আল­াহ ও তাঁর রসুল (সা.)-এর আনুগত্যে নিজেকে লীন করবে, তার আমল সে অনুসারে গ্রহণযোগ্য হবে (মাজমুউল ফাতাওয়া : খণ্ড ২৫, পৃষ্ঠা ২৮১-২৮২)।

শরিয়তের পরিধি খুবই বিস্তৃত ও সমৃদ্ধ। তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- সার্বিক বিবেচনায় তা খুবই সহজ ও সরল এবং অনায়াসসাধ্য। নবী (সা.) আমাদের জন্য হেদায়েতের যে আলোকবর্তিকা স্থাপন করেছেন তা আত্মাকে কষ্টদান ও এ জাতীয় বিষয়ের স্পষ্ট বিরোধী।

এ ছাড়া তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে রোজা রাখা অবস্থাতেই রসুল (সা.) কুলকুচা করতেন এবং নাকে পানি দিতেন। তবে নাকে পানি দেওয়ার ব্যাপারে খুবই সাবধানতা অবলম্বন করতেন। লাকিত বিন সাবরা (রা.) বলেন, আমি বললাম, হে আল­াহর রসুল (সা.) আমাকে অজু বিষয়ে শিক্ষা দিন।

তিনি বললেন, তুমি অজু করবে পূর্ণাঙ্গরূপে, খিলাল করবে আঙুলগুলো। যদি রোজাদার না হও, তবে নাকে পানি দেওয়ার ক্ষেত্রে গভীরে পৌঁছে দেবে (আবু দাউদ)। মধ্যপন্থা অবলম্বনের এ এক অনুপম দৃষ্টান্ত।

সোনালীনিউজ/এমটিআই