বিদ্যুৎ তৈরি হবে সাগরের ঢেউয়ে

  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০১৬, ০৪:০৩ পিএম

বাংলাদেশের কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ প্রকল্পের কথা তো সবারই জানা থাকার কথা। সেখানে নদীর স্রোতের গতিশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হচ্ছে। এখন যদি সমুদ্রের স্রোত কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার কথা বলা হয়, তখন কী হবে? সিএনএন-এর সূত্রমতে, এর মাধ্যমে সারা পৃথিবীর ৭১ শতাংশ বিদ্যুতের চাহিদা পুরণ করা সম্ভব।

সমুদ্রের স্রোত থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ধারণাটা নতুন নয়। সর্বশেষ এরকম পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে কলম্বিয়া পাওয়ার নামের একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান। তারা স্টিংরে নামের সমুদ্রে ভাসমান একটি তরঙ্গ জেনারেটর বানাচ্ছে, যা প্রত্যেকটি প্রবাহিত ঢেউ থেকে শক্তি উৎপন্ন করতে সক্ষম। সামুদ্রিক শক্তিকে কাজে লাগানোর চিন্তা আগে থেকেই চলে এলেও, এক্ষেত্রে সাশ্রয়ী পন্থা বের করাই ছিল মূল 'চ্যালেঞ্জ'। সেই সঙ্গে জাহাজ চলাচলের পথ এবং সামুদ্রিক প্রাণীর কথা চিন্তা করে যন্ত্রটি সমুদ্রের স্থাপন করার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হচ্ছে।

জোয়ারের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে পানির নিচে ঘূর্ণনযন্ত্র বসানোর পরিকল্পনাটি আরও বেশি প্রতিষ্ঠিত, কিন্তু মূলধারা থেকে অনেক দূরে। তরঙ্গ শক্তিও অনেকটা এর অনুরূপ কিন্তু ক্ষুদ্র এই প্রযুক্তিটির নিজস্ব চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

কলম্বিয়া পাওয়ার বায়ু ঘূর্ণন যন্ত্রের মতো ঢেউয়ের গতিকেও একইভাবে কাজে লাগাবে। যন্ত্রটি সমুদ্রের উপরে ভাসমান থাকবে, প্রতিটি প্রবাহিত ঢেউ একটি কেন্দ্রীয় কুঠুরিতে চুম্বকীয় জেনারেটরকে সক্রিয় করবে। একটি বড় আকারের ডুবন্ত তার পাওয়ার গ্রিডের সঙ্গে টারবাইনকে সংযুক্ত করবে।

স্টিংরে-এর সর্বশেষ সংস্করণটির ওজন ৭০০ টন এবং এর উচ্চতা ২০ মিটার। এর অধিকাংশ অংশই পানির নিচে থাকবে, পানির উপর ২.৫ মিটারের উজ্জ্বল হলুদ একটি যন্ত্র দেখা যাবে। রাতের বেলা নৌযানকে সতর্ক করার জন্য এর গায়ে নির্দেশনা দানকারী আলো জ্বলবে।

সমুদ্রের পরিবেশ সবসময় একরকম থাকে না। স্রোত এবং লবণের জন্য যেকোনো সময়ই যন্ত্রটি মেরামত করার প্রয়োজন হতে পারে। কলম্বিয়া পাওয়ার সিস্টেম এর নকশা সেভাবেই করেছে যাতে সমুদ্রের মাঝেই বন্ধ না করে এর মেরামত করা যায়।
 
স্থলে স্থাপন করার চেয়ে সমুদ্রে স্থাপনের কিছু সুবিধা রয়েছে। স্টিংরে-এর নকশা করা হয়েছে যাতে এটি পানির ৭০ মিটার গভীরে কাজ করতে পারে। এই প্রযুক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমে উপকূল থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে স্থাপন করা হবে।

প্রতিষ্ঠানটি ১১টি বিশেষ ট্যাংকে এর পরীক্ষা চালিয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি হাওয়াইতে বড় পরিসরে এর পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কলম্বিয়া পাওয়ারের প্রধান নির্বাহী রেনস্ট লেসেম্যান জানান, এই প্রযুক্তিটি মূল বাজারে আসতে সময় লাগবে কিন্তু ছোট পরিসরে এটা ব্যবহার করা যেতে পারে। ঢেউ সবসময়ই থাকবে, তাই সুর্যের আলো রয়েছে বা বাতাস বহমান থাকা এখানে প্রয়োজনীয় নয়।

কলম্বিয়া পাওয়ার সৌরশক্তি এবং বাতাসের শক্তিকে এর বিকল্প শক্তির উৎস হিসেবে কাজে লাগানোর ব্যাপারে আশাবাদী।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন