কম্পিউটার ভাইরাসের মতোই দূর হবে মরণব্যাধি ক্যানসার!

  • বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৬, ০৫:২৩ পিএম

কম্পিউটার ভাইরাসের মতোই শরীর থেকে ক্যানসার কোষ ঝেটিয়ে বিদায় করার প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফট। প্রতিষ্ঠানটির গবেষকদের আশা, আগামী দশ বছরের মধ্যেই ক্যানসার আক্রান্ত কোষের গতিপ্রকৃতি বুঝে সারিয়ে তোলার কৌশল তারা উদ্ভাবন করে ফেলবেন।

এই কাজটি করতে মাইক্রোসফট ‌‘বায়োলজিক্যাল কম্পিউটিং’- এর উপর জোর দিচ্ছে। অর্থাৎ এই সজীব কম্পিউটারের মধ্যেই নতুন কোষ তৈরি করা হবে। যাতে ক্যানসার আক্রান্ত কোষগুলোকে এই সুস্থ কোষ দিয়ে প্রতিস্থাপন করা যায়।

গবেষকরা স্বল্পমেয়াদে যা ভাবছেন তা হলো- মানুষের মতো এমন এক কম্পিউটিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা যা পড়তে ও চিন্তা করতে পারবে। এটি ক্যানসারের প্রকার বুঝে ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিতে পারবে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে।

গত কয়েক বছরে ক্যানসার নিয়ে প্রচুর গবেষণা হয়েছে এবং সেগুলো বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। একজন চিকিৎসকের পক্ষে এতোগুলো প্রতিবেদন পড়ে ওঠা সম্ভব নয়। ফলে সহজে ক্যানসার শনাক্ত করা তার জন্য কঠিন হয়ে যায়। ঠিক এই কাজটাই করে দেবে কম্পিউটার। কম্পিউটার হাজার হাজার প্রতিবেদন নিমেষের মধ্যে পড়ে ফেলবে এবং সব ধরনের ক্যানসার বিষয়ে বিপুল তথ্য সংগ্রহ করবে।

শুধু তা-ই নয়, ক্যানসার আক্রান্তকে বিভিন্ন পরামর্শসহ ব্যবস্থাপত্রও দিতে পারবে। আর দীর্ঘমেয়াদে যে চিন্তাভাবনা গবেষকরা করছেন তা হলো: বায়োলজিক্যাল কম্পিউটার ক্যানসার শনাক্ত করা থেকে শুরু করে সেই আক্রান্ত কোষকে প্রতিস্থাপন করার ব্যবস্থাও করে দেবে।

অর্থাৎ অ্যান্টি ভাইরাস যেমন আক্রান্ত কম্পিউটারের ভাইরাসগুলো বেছে আলাদা করে এবং ধ্বংস করে দেয় তেমনটিই করবে বায়োলজিক্যাল কম্পিউটার।

এছাড়া একটি স্বাভাবিক কোষ কেন এমন আচরণ করে, কখন তারা ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে পড়ে বা ক্যানসারের মতো আচরণ করে এটিও বুঝতে পারবে কম্পিউটার। এই কম্পিউটার একটি নির্দিষ্ট কোষের আচরণের ব্যাপারে সাড়া দিতে, করণীয় ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে এবং একে রিপ্রোগ্রামিং করে সুস্থ করে তুলতে পারবে।

মাইক্রোসফট বলছে, আগামী পাঁচ থেকে ১০ বছরের মধ্যে তারা এমন একটি সমাধানে পৌঁছাতে পারবে।

গবেষকরা বলছেন, এই জটিল কাজটি করা হবে মূলত জীববিজ্ঞান, গণিত এবং গণনা (কম্পিউটিং) এই তিনটি জিনিসকে এক জায়গায় এনে। আগে ভাবা হতো এই তিনটি বিভাগ আলাদা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এগুলো একদম কাছাকাছি চলে এসেছে। মাইক্রোসফট এগুলোর একীভূতকরণে অনেকখানি এগিয়ে গেছে। মাইক্রোসফটের বায়োলজিক্যাল কম্পিউটেশন গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অ্যান্ড্রু ফিলিপ।

প্রসঙ্গত, কম্পিউটার ভাইরাস মূলত একটি প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার। এটি যখন কোনো কম্পিউটারকে আক্রমণ করে তখন দ্রুত রেপ্লিকা তৈরি করতে পারে। ফলে এরা নিমেষের মধ্যে কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে এবং সব ফাইল ফোল্ডার আক্রান্ত হয়।

ক্যানসারও ঠিক একইভাবে ছড়িয়ে পড়ে। শরীরের একটি কোষ ক্যানসার আক্রান্ত হলে সেটি এতো দ্রুত বিভাজিত হয়ে নতুন নতুন কোষ তৈরি করে যে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কোষের এই অস্বাভাবিক বিভাজনকেই বলে ক্যানসার। সূত্র: গার্ডিয়ান, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি