উন্নত বিশ্বের আদলে ‘স্মার্টবাসের’ যাত্রা শুরু

  • বিশেষ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০১৬, ০৬:১০ পিএম

উন্নত বিশ্বের আদলে দেশে প্রথমবারের মতো যাত্রা শুরু করল ‌‘স্মার্টবাস’। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে দেশকে চরম সীমায় নিয়ে যাবে বিশেষ এই বাস। ‘টেকসই নারী উন্নয়নে আইসিটি’ স্লোগান নিয়ে এই বাস পৌঁছে যাবে দেশের তরুণী ও মেধাবী নারীদের তথ্যপ্রযুক্তির মৌলিক প্রশিক্ষণ দিতে।

ল্যাপটপ, বড় এলইডি স্ক্রিনের টিভি, সাউন্ড সিস্টেম, ওয়াইফাই ইন্টারনেটসহ তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণের সব আয়োজন নিয়ে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল চারটি স্মার্টবাস।

চাকা ঘুরাতে অপেক্ষা ছিল শুধু আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের। বুধবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনের ফিতাও কেটে দিয়েছেন।

এখন রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) দক্ষিণ এশিয়ার বড় প্রযুক্তি উৎসব ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে দর্শনার্থীদের প্রদর্শনী শেষে ‘টেকসই নারী উন্নয়নে আইসিটি’ স্লোগান নিয়ে পৌঁছে যাবে দেশের তরুণী ও মেধাবী নারীদের তথ্যপ্রযুক্তির মৌলিক প্রশিক্ষণ দিতে।

সাউন্ড প্রুফ ও এয়ারকন্ডিশন ব্যবস্থা সম্বলিত বিশেষ এই বাসগুলোতে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীর জন্য রয়েছে একটি করে ল্যাপটপ। এছাড়া রয়েছে নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ সামগ্রী, প্রশিক্ষণ সফটওয়্যার ও সার্বক্ষণিক জেনারেটরের ব্যবস্থাও।

সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ, মোবাইল ফোন অপারেটর রবি ও বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা কোম্পানি হুয়াওয়ে টেকনোলজিস বাংলাদেশ লিমিটেড যৌথভাবে এই স্মার্ট বাস চালু করেছে।

এই প্রকল্পের আওতায় ৬টি বাসের মাধ্যমে দেশের ৬৪টি জেলার ২ লাখ ৪০ হাজার তরুণী ও মেধাবী নারীদের তথ্যপ্রযুক্তির মৌলিক প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

প্রতিটি বাসে একসাথে ২৫ জনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে বাসগুলো নির্দিষ্ট রুটে চলাচল করবে এবং বছরে ৪০ সপ্তাহ কার্যক্রম চালাবে।

স্থানীয় প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা ও চাহিদার ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি স্থানে এক বা দুই দিনের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রশিক্ষণ শেষে ওই এলাকার তরুণ শিক্ষার্থীদের মাঝে তথ্যপ্রযুক্তি সচেতনতা বৃদ্ধিতে বাসগুলো নিয়ে রোড শো হবে।

৬টি বাসের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ, রবি ও হুয়াওয়ে প্রত্যেকের দুটি করে বাস থাকছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের তত্ত্বাবধানে বাসগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে থাকবে রবি ও হুয়াওয়ে।

২০১৬ সালের মধ্যে কাজ শুরু করতে শুরুতে চারটি বাস প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটির মেয়াদ তিন বছর।

প্রকল্পের কার্যক্রম শুরুতে ২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর এক সমঝোতা চুক্তি অনুষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছিলেন, ভিশন-২০২১ সামনে রেখে নেয়া এই পদক্ষেপ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথযাত্রায় প্রান্তিক তরুণীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। 

এ প্রকল্পের মাধ্যমে মেধাবী নারীদের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে উঠবে যারা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে এগিয়ে যাবেন এবং এই নারীরা তাদের সমাজে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।

দেশে এমন স্মার্টবাস চালুর প্রথম চিন্তা করেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। স্পেনে ‘ স্মার্ট বাস : অন-বোর্ড উইথ দ্যা ফিউচার জেনারেশন’ নামে হুয়াওয়ের শিক্ষামূলক প্রকল্প দেখে বাংলাদেশেও এটি চালুর চিন্তা করেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী। 

স্পেন সফর থেকে ফিরে তিনি হুয়াওয়ের বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে এটি চালুর বিষয়ে তাগাদা দেন। যা বাস্তবেও রূপ পেল। এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আরও একধাপ এগিয়ে গেল লাল সবুজের এই দেশ।

এরপর হুয়াওয়ে এবং রবি পৃথকভাবে তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ ও সচেতনতায় এমন বাস নামানোর সাথে যুক্ত হয়। সবশেষে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ হুয়াওয়ে ও রবিকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাপক পরিসরে দেশে এই স্মার্টবাস প্রকল্পের উদ্যোগ নেয়।

 সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি