ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৬

তথ্যপ্রযুক্তিতে তরুণদের আগ্রহ বেশি

  • জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিশেষ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০১৬, ১২:১৬ পিএম

ঢাকা : সকাল থেকেই প্রযুক্তিপ্রেমীদের ভিড় জমতে থাকে। বিকেল পেরোতেই লোকজনের হিড়িক পড়ে যায়, যেন পা ফেলারও ফুরসত নেই। ভিড় তো হবেই, কারণ এটা যে দেশের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল মেলা ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৬’।

এবারের আয়োজনের স্লোগানেই বলা হয়েছে ‘নন স্টপ বাংলাদেশ’। অবিরত বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশ থেমে যাওয়ার নয়। তথ্যপ্রযুক্তির হাত ধরে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ায় এই প্রদর্শনী দেখতে প্রযুক্তিপ্রেমীরা দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন।

রাজধানীতে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) বুধবার (১৯ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়েছে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের এই চতুর্থ আসর। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) প্রদর্শনীর দ্বিতীয় দিন চলছে। শেষ হবে শুক্রবার (২১ অক্টোবর)।

দ্বিতীয় দিনের সকালে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত পুরো আইসিসিবি’র প্রাঙ্গণ। দর্শনার্থীরা খুব আগ্রহ সহকারেই সরকারি-বেসরকারি খাতের ডিজিটাইজেশন দেখছেন। আইসিসিবি’র চারটি হলে একযোগে চলছে ডিজিটাল এই প্রদর্শনী।

শিক্ষার্থীদের অনেকেই অভিভাবক নিয়ে এসেছে, আবার কেউ কেউ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রত্যক্ষ করতে এসেছে শিক্ষকদের সঙ্গে। প্রদর্শনী দেখতে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ প্রযুক্তির ছোঁয়ায় মুগ্ধ হচ্ছে, কেউ কেউ সেলফি তুলেই আনন্দ পেতে চাইছে।

বেলা ১১টায় মেলায় এসেছে ধানমণ্ডির একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিয়ন জামিল। তিনি সোনালীনিউজকে বলেন, ‘মেলায় এসে বুঝতে পারলাম বাংলাদেশ সত্যি এগিয়ে যাচ্ছে। অনেকে তাদের বানানো প্রযুক্তিপণ্য প্রদর্শন করছে। এটা আমাদের জন্য গর্বের।’

ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের মাহফুজ বাবু বলেন, ‘মেলায় এসে নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে পারছি। এরকম আয়োজন নিয়মিত হওয়া উচিত।’

মেলার চারটি হলের মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাইজেশন প্রদর্শন হচ্ছে ‘পুষ্পগুচ্ছ’ হলে। এ হলের প্রতিই দর্শনার্থীর আগ্রহ বেশি। তার কারণ অবশ্য খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তবে খোলা চোখে দেখলে মনে হয়, মেলার গেট দিয়ে ঢুকেই এ হলটি। অন্যটি হতে পারে, সরকারি বেশিরভাগ সেবার দেখা মিলবে এক ছাদের নিচে।

মেলার শুরুতেই রয়েছে গুগল ডেভেলপার গ্রুপ (জিডিজি) বাংলার ব্যবস্থাপনায় ‘ইনোভেশন জোন’। এখানে তরুণদের উদ্ভাবনী প্রকল্প দেখানো হচ্ছে। ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি পেশা-বিষয়ক সম্মেলনের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো উন্নয়ন-সহযোগীদের নিয়ে থাকছে ডেভেলপার সম্মেলন। এ ছাড়া আছে সফটওয়্যার শোকেসিং জোন, ই-গভর্ন্যান্স এক্সপোজিশন জোন, মোবাইল ইনোভেশন জোন, ই-কমার্স এক্সপো জোন, স্টার্টআপ জোন ও গেমিং জোন।

তিন দিনের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে মাইক্রোসফট, ফেসবুক, একসেন্সার, বিশ্বব্যাংক, জেডটিই, হুয়াওয়েসহ তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ৪৩ জন প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। বিদেশিসহ দুই শতাধিক বক্তা ১৮টি অধিবেশনে অংশ নিচ্ছেন। এই মেলা চলবে শুক্রবার পর্যন্ত।

ডিজিটাল বিষয়ক নতুনত্ব ও অভিনত্ব বিষয়ে ধারণা ও জ্ঞান বিনিময়ের জন্য ৩ দিনের এই মেলার আয়োজন করা হয়। আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এবং এটুআই কর্মসূচি যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করেছে।

মেলায় সরকারি আইসিটি সেক্টরের নীতিনির্ধারকরাসহ সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেছেন। এতে আইসিটি-সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সম্মেলনে যোগ দিয়েছে ৭টি দেশের ৭ জন মন্ত্রী। ৪৩টি বিশ্ব বিখ্যাত আইসিটি কোম্পানি, ২০০ আইটি বিষয়ক বক্তা অংশগ্রহণ করছেন।

বিশ্বের নামকরা আইসিটি কোম্পানির মধ্যে মাইক্রোসফট, ফেসবুক, বিশ্বব্যাংক, জেডটিই, হুয়াই কোম্পানি মেলায় অংশগ্রহণ করেছে।

ভিশন-২০২১ কে সামনে রখে মেলায় ১২ সেমিনার, আলোচনা সভা ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আইটি ক্যারিয়ার মেলা, সফটএক্সপো, মোবাইল এক্সপো, ই-কমার্স ও বিজনেস প্রসেস আউটসোসিং কর্মসূচিও চলছে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/আকন