গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনি এখন প্রায় সব গুগল অ্যাপে সংযুক্ত। ব্যবহারকারীরা আশা করছেন এটি ইমেইল সাজেস্ট করা, লম্বা থ্রেড সংক্ষেপ করা বা ডেলিভারি তথ্য দেখানোর মতো সুবিধা দেবে। কিন্তু ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা বলছে, জেমিনির কার্যক্রম অনেক গভীর-এমনকি অস্বস্তিকর ও ভীতিকর।
একজন ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, জেমিনিকে জিমেইল অ্যাক্সেস দিলে এটি গত ১৬ বছরের ব্যক্তিগত ইমেইল ইতিহাস খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ করেছে। তিনি বলেন, “এটা শুধু অস্বস্তিকর নয়, বরং ভয় ধরিয়ে দেওয়া অভিজ্ঞতা।”
জেমিনি কীভাবে এত কিছু জানল? জিমেইলে জেমিনি আইকনে ক্লিক করলে চ্যাটবক্স খুলে ব্যবহারকারী তার ইমেইল সংক্রান্ত তথ্য জানতে পারেন—যেমন পরবর্তী পণ্য ডেলিভারির তারিখ বা উত্তর দেওয়া দরকার এমন ইমেইল। কিন্তু এর বাইরে জেমিনি এমন তথ্যও জানিয়েছে যা ব্যবহারকারী নিজেও ভুলে গিয়েছিলেন। যেমন-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম প্রেমের নাম ও সময়, ২০০৯ সালের শীর্ষ ফেসবুক বন্ধুদের তালিকা, এমনকি ব্যক্তিগত চরিত্র বিশ্লেষণ করে ব্যবহারকারীর আচরণ “ড্রেইক” চরিত্রের মতো উল্লেখ করা।
কিছু ক্ষেত্রে জেমিনি বার্তার শেষে ‘চিয়ার্স, রুবেন’ লিখে শেষ করেছে, যেন এটি ব্যবহারকারী নিজেই। এটি স্মার্ট রিপ্লাই ফিচারের অংশ, যা ব্যবহারকারীর লেখার ধরন নকল করে ইমেইল লিখতে পারে। তবে এতে ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
গুগল দাবি করছে, জেমিনির মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য শুধুমাত্র পণ্য উন্নয়নে ব্যবহার হয়। তবে অতীতের অভিজ্ঞতা যেমন ২০২৫ সালে ১.৩৭৫ বিলিয়ন ডলার জরিমানা, ২০২৪ সালে ‘ভুল পথে পরিচালিত ও আক্রমণাত্মক’ ডেটা ব্যবহার এবং ২০১৪-১৮ সালে গুগল+ লিক ও জিমেইল পাসওয়ার্ড ফাঁস, ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিশ্বাস নষ্ট করেছে।
অর্থাৎ, জেমিনি ব্যবহার না করলেও ব্যবহারকারীর তথ্য গুগলের সার্ভারে থাকে, যা হ্যাক বা লিকের ঝুঁকিতে। তবে জিমেইল অ্যাক্সেস দিলে হ্যাকাররা কেবল অ্যাকাউন্ট নয়, ব্যবহারকারীর গুরুত্বপূর্ণ জীবনের তথ্যও বিশ্লেষণ করতে পারবে।
জেমিনিকে জিমেইল থেকে সরানো যায়। জিমেইল সেটিংসে গিয়ে ‘ম্যানেজ ওয়ার্কপ্লেস স্মার্ট ফিচার সেটিংস’ অপশন থেকে স্মার্ট ফিচার বন্ধ করলে জেমিনি কার্যক্রমও বন্ধ হয়।
এসএইচ