যেভাবে বিমান দুর্ঘটনার কারণ জানাবে ব্ল্যাক বক্স

  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০১৮, ১২:৩৭ পিএম

ঢাকা: কাঠমান্ডুতে ইউএস বাংলার বিমান দুর্ঘটনার পরপরই বিমানটির ব্ল্যাক বক্স খুঁজে পেলেও এর তথ্য উপাত্ত যাচাই বাছাই এর আগেই নেপাল কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বিভিন্ন মতামত দিচ্ছে।

তাদের এ ধরনের মন্তব্য তদন্তে বাধা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করেন দেশের এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ব্ল্যাক বক্সে সংরক্ষিত সব ধরনের তথ্য পরীক্ষা নিরীক্ষার পরেই জানা যাবে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ। কি থাকে ব্ল্যাক বক্সে।

নেপালের কাঠমান্ডুতে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান দুর্ঘটনার পরপরই আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে ব্ল্যাক বক্স। এই ব্ল্যাক বক্সই বিমান দুর্ঘটনার সঠিক কারণ অনুসন্ধানের মূল উপাত্ত। এতে বিমানের ককপিটের যাবতীয় কথাবার্তার পাশাপাশি বিমানের কারিগরি সব তথ্য রেকর্ড হয়। ব্ল্যাক বক্স নামে বহুল পরিচিত হলেও এর আসল নাম ফ্লাইট রেকর্ডার।

১৯৬২ সালে অস্ট্রেলিয়ার একটি বিমানে প্রথম ব্ল্যাক বক্স পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হয়। মূলত এটি দুটি অংশের সমন্বয়ে একটি রেকর্ডার। এর মধ্যে দুই ধরনের তথ্য সংরক্ষিত থাকে। একটি হলো ডাটা রেকর্ডার বা এফডিআর যেটি বিমানের ওড়া, ওঠানামা বিমানের মধ্যে তাপমাত্রা, পরিবেশ, চাপ বা তাপের পরিবর্তন, সময়, শব্দ, ইত্যাদি নানা বিষয় নিজের সিস্টেমের মধ্যে সংরক্ষিত রাখে।

ককপিট ভয়েস রেকর্ডার সিভিআর নামের আর একটি অংশে ককপিটের ভেতরে পাইলটদের নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা, পাইলটদের সাথে বিমানের অন্য ক্রুদের কথা, ককপিটের সাথে এয়ার কন্ট্রোল ট্রাফিক বা বিভিন্ন বিমান বন্দরের সঙ্গে রেডিও যোগাযোগের কথাবার্তা রেকর্ড থাকে। বাক্সটি উজ্জ্বল কমলা রঙের হওয়ায় এটি সহজেই খুঁজে পাওয়া সহজ হয়। মূলত দুর্ঘটনার পরপরই তদন্তকারী দল, বিমান সংস্থা, এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তিবিদরের সমন্বয়ে তারা ব্ল্যাক বক্স থেকে তথ্য উদ্ধারের কাজটি শুরু করেন।

বিমান বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন মোজাম্মেল হক বলেন, আগে যেহেতু টেপে রেকর্ড হতো, শেষ ৩০ মিনিট থাকতো। এখন তার থেকে আরও বেশি সময় পাওয়া যায়। এটাকে ডিকোড করতে গেলে প্রপার ইকুম্পমেন্ট ও ল্যাব প্রয়োজন।

আধুনিক ব্ল্যাক বক্সগুলো ২৫ ঘণ্টা পর্যন্ত বিমানের ফ্লাইট ডাটা ধারণ করে রাখতে পারে। এর ভেতরে অনেকগুলো মেমরি চিপ পাশাপাশি সাজানো থাকে। যেখানে বিমান দুর্ঘটনার আগ মুহূর্তের সব তথ্য রেকর্ড থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন নেপালে ইউএস বাংলার বিমান দুর্ঘটনারও প্রকৃত কারণ জানতে অপেক্ষা করতে হবে ব্ল্যাক বক্সের সংরক্ষিত তথ্য হাতে পাওয়া পর্যন্ত।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ (অবসরপ্রাপ্ত) উইং কমান্ড মো. হাসান মাসুদ বলেন, পাইলটদের কথাবার্তা। তারা নিজেরা কি কথা বলেছে, দুর্ঘটনার আগের কি কথা বলেছে। এছাড়াও আরেকটা হলো ইন্টারকমে কি বলেছে।

অত্যন্ত শক্ত ধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরি ব্ল্যাক বক্স পানি, আগুন চাপ বা যেকোন তাপমাত্রায় টিকে থাকে সক্ষম। সমুদ্রের তলদেশেও এটি ৩০ দিন পর্যন্ত অক্ষত থাকতে পারে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন