থমকে আছে যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন

  • বিশেষ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২০, ০৫:০৩ পিএম

ঢাকা : করোনায় থমকে গেছে আওয়ামী যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন। সম্মেলনের প্রায় সাত মাস পরও এ কমিটি গঠন সম্ভব হয়নি। আর কবে নাগাদ কমিটি পূর্ণাঙ্গ হবে সেটিও এখনো স্পষ্ট নয়। এদিকে কমিটি গঠনের সময় চূড়ান্ত না হলেও লবিং তদবিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্ভাব্য পদপ্রত্যাশীরা। করোনার মধ্যেও যে যার মতো করে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।

পাশাপাশি কাদা ছোঁড়াছুড়িতে ব্যস্ত রয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে নিয়ে। কখনো সরাসরি, কখনো গোপনে আবার কখনো ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুৎসা রটনা করছেন একে অপররের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে মামলা করার হুমকিও দিচ্ছেন কেউ কেউ। বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে সংগঠনের অভ্যন্তরে।

ক্যাসিনোকান্ডে যুবলীগ নেতাদের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠার পর গত বছর ২৩ নভেম্বর যুবলীগের ৭ম জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই কংগ্রেস এর উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ওই দিনই যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির বড় ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশকে চেয়ারম্যান এবং মাইনুল হোসেন খান নিখিলকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর পর প্রায় সাত মাস পার হলেও এখনো পর্যন্ত সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। কমিটি বিলম্বের জন্য বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীকে দায়ি করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা করা হবে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। সেই লক্ষে সম্ভাব্য নেতাদের বায়োডাটা যাচাই বাছাই চলছে। এদিকে সংগঠনের ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কাঙ্খিত পদ পেতে মরিয়া হয়ে পড়েছেন নেতারা।

সেই লক্ষ্যে জোর লবিং তদবির চালাচ্ছেন যে যার মতো করে। করোনার মধ্যেও ধর্ণা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও যুবলীগের বড় ভাইদের দ্বারে। করোনায় পদপ্রত্যাশীদের বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তুলে ধরছেন নিজে অথবা সমর্থকদের দিয়ে। পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী পদপ্রত্যাশীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ ও কুৎসা রটানো হচ্ছে কখনো সরাসরি আবার কখনো ফেসবুকে।

সর্বশেষ গত শনিবার রাতে বর্তমানে দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মনিরুল ইসলাম হাওলাদার মনির এর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে ফেসবুকে পোস্ট করেন একইপদে প্রত্যাশী আরেক নেতা। পোস্টে তিনি মনিরের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার বিভিন্ন অভিযোগ আনেন। এতে লাইক ও কমেন্টস করেন পোস্টদাতার অনুসারীরা। আবার মনিরের সমর্থকরাও পাল্টা কমেন্টস করেন ওই পোস্টে।

পরে মনির এসব অভিযোগকে বানোয়াট উল্লেখ করে আইসিটি আইনে মামলার হুমকি দিলে মুহুর্তেই সেই পোস্ট ডিলিট করে দেয়া হয়। মনিরের বিরুদ্ধে অভিযোগের পোস্টটির স্ক্রিন শর্ট নিয়ে পোস্টদাতার সমর্থকরা বিভিন্ন নেতাদের কাছেও পাঠান। আবার মনিরের সমর্থকরাও পোস্টের নিচে তীর্যক মন্তব্যের স্ক্রীন শর্ট নিজেদের পক্ষে তুলে ধরেন। এভাবে কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে পদপ্রত্যাশী একে অপরের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম হাওলাদার মনির বলেন, সামনে যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ আনা হয়েছে। যারা এসব অভিযোগ আনেন তারা আমাকে কাঙ্খিত পদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মনে করছে। আমি দীর্ঘদিন যাবত যুবলীগের সাথে জড়িত। দপ্তরের দায়িত্বে থেকে সততা ও নিষ্ঠার সাথে আমার দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। সংগঠনের হাইকমান্ড আমাকে ভাল করে জানেন।

এ ছাড়া দপ্তরে কাজ করার সুবাদে আমি সব সময় সাংবাদিক ভাই বোনদের সাহায্য সহযোগিতা পেয়েছি। তারাও আমার সম্পর্কে ভাল করে জানেন। কেউ কোনোদিন আমার বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ দিতে পারেননি। তবে আমি এবং আমার পরিবারের প্রত্যক সদস্যের ব্যাংক একাউন্ট  এবং সম্পদের তথ্য যে কেউ চাইলে যাচাই করতে পারে। আমি সাধুবাদ জানাবো।

যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, যুবলীগের পূণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তবে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর কারনে কমিটি গঠন খানিকটা বিলম্ব হচ্ছে। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই নেত্রীর অনুমোদন নিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই