ঢাকা-৫ আসনে উপনির্বাচন

আ.লীগের নতুন নেতৃত্বের লড়াই

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২০, ১১:৫৬ এএম

ঢাকা : ঢাকা-৫ (ডেমরা, যাত্রাবাড়ী ও আংশিক কদমতলী) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুতে আসনটি শুন্য ঘোষণা করেছেন সংসদ সচিবালয়। ফলে এই আসনটিতে উপনির্বাচনকে সামনে রেখে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা।

মহামারি করোনার কারণে প্রার্থীর প্রকাশ্যে মাঠে না থাকলেও প্রার্থীদের নিয়ে তাদের সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জোরে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনার প্রাদুর্ভাব কমলেই মাঠ সরগরম হতে দেখা যাবে প্রার্থীদের পদচারণায় এমনটাই গুঞ্জন চলছে নির্বাচনী এলাকাজুড়ে। প্রয়াত সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার পর এবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কে আসছেন এটাই দেখার বিষয়।

আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, (এশিয়ান গ্রুপ) এশিয়ান টেলিভিশনের চেয়ারম্যান ও বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক হারুন অর রশিদ (সিআইপি), আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও শহীদ শেখ কামালের স্ত্রী শহীদ সুলতানা কামালের ভাতিজি মেহরীন মোস্তফা দিশি, যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুর ইসলাম মনু আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ মুন্না, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর আতিকুর রহমান আতিক, সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার বড় ছেলে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা স্বজল, ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খাঁন মাসুদ, ও মহাজোট সরকারের শরীক দল জাতীয় পাটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা সবাই মনোনয়ন পেতে যে যার মতো করোনায় বেকার হয়ে যাওয়া মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ ফেসবুকে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। নেতা-কর্মীরাও তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন রকম স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। এর দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবেন তার পক্ষেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তারা।

এশিয়ান গ্রুপ ও এশিয়ান টেলিভিশনের চেয়ারম্যান ও বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক হারুন অর রশিদ (সিআইপি) গত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।

এলাকার অসহায় গরিব সম্বলহীন মানুষের সেবায় নিয়োজিত করে নিজেকে তাদের কাছে অত্যন্ত আপনজন হিসেবে পরিচিতি লাভ করে তাদের মন জয় করে নিয়েছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুথান সত্তরের নির্বাচন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। হারুন অর রশীদ জানান, সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই। আশা করি প্রধানমন্ত্রী আমাকে মূল্যায়ন করে অবশ্যই মনোনয়ন দেবেন।

মহাজোট থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জাতীয় পাটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় যুব সংহতির সাবেক সভাপতি আব্দুস সবুর আসুদ। তিনি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে জড়িত। রাজনীতি করতে গিয়ে হামলা মামলার স্বীকার হয়েছেন অসংখ্য বার। তিনি ডেমরা মাতুয়াইল ঐতিহ্যবাহী মীর পরিবারের প্রকৌশলী মীর আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার কনিষ্ঠ ছেলে।এলাকার সামাজিক, ধর্মীয় শিক্ষা খাতে রয়েছে তার ব্যাপক উন্নয়ন।

এছাড়া সৎ শিক্ষিত ক্লিনম্যান হিসেবে রয়েছে তার ব্যাপক সুনাম। তিনি ২০০৮ ও ২০১৪ সালে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এবার উপ-নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাবেন বলে প্রত্যাশা করেন।

ঢাকা-৫ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ : ভোটের দিন ঠিক হয়নি, অথচ করোনার মধ্যেই ঢাকা-৫ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। এরই মধ্যে ব্যানার, পোস্টার ও বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে এলাকা। মাঠে তৎপর আওয়ামী লীগের অন্তত ১০ প্রার্থী। তবে বিএনপিতে সক্রিয় রয়েছেন একজনই।

৬ মে মারা যান আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লা। এতে শূন্য হয় তার নির্বাচনি আসন ঢাকা-৫। তার মৃত্যুর পরই উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে দৌড়াতে শুরু করেছেন প্রত্যাশীরা। তাদের মধ্যে ৭০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আতিকুর রহমান একজন।

বিভিন্ন কর্মসূচির আড়ালে নির্বাচনি প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। কর্মীদের সংগঠিত করতে করছেন উঠান বৈঠক।

সম্ভাব্য প্রার্থীরা নানা কৌশলে পোস্টার সাঁটিয়েছেন নির্বাচনি এলাকায়। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাচ্ছেন অন্তত ১০ জন। প্রচার চালাচ্ছেন জাতীয় পার্টি ও জাসদের দু’জন।

বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি নবী উল্লাহ নবী। তবে করোনার মধ্যে নির্বাচনের বিপক্ষে তিনি।

যাত্রাবাড়ী, ডেমরা ও কদমতলী থানার আংশিক নিয়ে গঠিত ঢাকা-৫ আসনে ভোটার প্রায় ৫ লাখ। শূন্য আসনে নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার নিয়ম অনুযায়ী জুলাই কিংবা আগস্টে নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে মহামারীর জন্য নির্বাচন কমিশন সময় পাবে বাড়তি তিন মাস।

সোনালীনিউজ/এমটিআই