বাড়ছে আ. লীগ নেতাদের উৎকণ্ঠা

  • বিশেষ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২১, ২০১৬, ০২:৫৭ পিএম

একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটি সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নতুন এ কেন্দ্রীয় কমিটিতে বড় পরিবর্তন আসছে। সম্মেলনের তারিখ যত ঘনিয়ে আসছে, কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে ততই বাড়ছে উৎকণ্ঠা। নতুন কমিটিতে কারা আসছেন, কারা বাদ পড়ছেন, তা নিয়ে দল ও দলের বাইরে চলছে আলোচনা, হিসেব-নিকেশ।

আগামী ১০ ও ১১ জুলাই অনুষ্ঠেয় দলের ২০তম জাতীয় সম্মেলন। এবারের সম্মেলন যে নিয়ম রক্ষার জন্য হবে না, তা বুঝে গেছে দলের সবাই। একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন। 

এদিকে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতার বাইরে বিএনপি-জামায়াত জোট। আগামী নির্বাচনে তাদের জন্য অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্ন সামনে আসবে। জাতীয় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসবে, তারা রাজপথে মরণকামড় দিতে মরিয়া হয়ে উঠবে। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে তারা সেই রকম পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে বলে সরকারের কাছে তথ্য আছে।

দলীয় সূত্র জানান, জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটিতে অভিজ্ঞ নেতাদের সঙ্গে এক ঝাঁক তরুণ ও রাজপথ কাঁপানো নেতাকে আনা হবে। সব দিক বিবেচনায় নিয়ে সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আসন্ন কাউন্সিলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে। কেন্দ্রীয় কমিটির কলেবর বাড়বে। ৭৩ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি হতে পারে ৮১ সদস্যবিশিষ্ট। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের সংখ্যা বেড়ে তিনটি থেকে পাঁচটি, সাংগঠনিক সম্পাদকের সংখ্যা সাতের স্থলে ১০টি হতে পারে। এবার দুই দিনব্যাপী কাউন্সিল হবে। একদিন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শুধু তৃণমূল নেতাদের কথা শুনবেন। এ নিয়ে শঙ্কায় আছেন কেন্দ্রীয় অনেক নেতা। তৃণমূল নেতারা ওপেন ফ্লোরে সভানেত্রীর সামনে বক্তব্য রাখবেন। তখন তৃণমূল নেতারা কার ‍বিরুদ্ধে কী অভিযোগ করে বসেন, এ নিয়ে শঙ্কা।

কয়েক মাসের মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে। তখন জামায়াত-বিএনপিসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বিদেশি শক্তির যোগসাজশে মরণকামড় দিতে মরিয়া হয়ে উঠবে।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার- ‘রূপকল্প ২০২১’ বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় অবস্থানে রয়েছেন। পদ্মা সেতুসহ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এগুলো বাস্তবায়নে শেখ হাসিনা কোনো অপশক্তির ষড়যন্ত্রের কাছে মাথা নত করছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা বলেন, নেত্রী বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত সোনার বাংলাদেশ গড়তে কোনো পরাশক্তির কাছে মাথা নত করবেন না। কারণ তিনি সবই জানেন- কারা মুখে মুখে বন্ধু, তলে তলে শত্রু। উনি শুধু উনার নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে সততা, নিষ্টা ও সৎ সাহস দিয়ে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। যে কারণে উনি দলের নেতাদেরও ছাড় দেন না।

তিনি বলেন, যে কারণে আগামী সম্মেলনে সভাপতিমণ্ডলী, সম্পাদকমণ্ডলী, কার্যনির্বাহী সদস্য থেকে ২৫ হতে ৩০ জন নেতা ছিটকে পড়ছেন এটা নিশ্চিত। আর বর্তমান কমিটির ১০-১২ জনের পদোন্নতি হচ্ছে, এটাও প্রায় নিশ্চিত। কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে ছিটকে পড়া ২-৩ জনকে মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়ে পুরস্কৃত করতে পারেন দলীয় সভানেত্রী।

তিনি জানান, দলীয় কর্মকাণ্ডে নিস্ক্রীয়, গ্রুপিংয়ে জড়ানো, দুর্নীতি ও তদবির বাজিতে ব্যস্ত আছেন, তাদের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে ওয়াকিবহাল রয়েছেন শেখ হাসিনা। গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা নেতাদের আমলনামাও তিনি সংগ্রহে রেখেছেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ