বিডিকার্ড, অনলাইনে প্রতারণার ডিজিটাল ফাঁদ। অনলাইনে আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপনেই বাজিমাত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ফেসবুকে মাসের পর মাস বুস্টপোস্ট করে বিজ্ঞাপন চালিয়ে যাচ্ছে বিডি ভার্চুয়াল ক্রেডিট কার্ড।
লোভনীয় সেই বিজ্ঞাপনে বলা হচ্ছে, এটি ইন্টারন্যাশনাল ভার্চুয়াল ক্রেডিট কার্ড। যা দিয়ে আপনি অনলাইনে যে কোনো পণ্য বা সেবা কেনাকাটা, ফী ও বিল পরিশোধ করতে পারবেন খুব সহজেই। এই কার্ডের গ্রাহক হতে আগে ৯০০ টাকা দিতে হত, এখন কোনো টাকা লাগে না। সর্বনিম্ন ২০ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় ১৬৪০ টাকা) খরচ করে আপনি এই কার্ডটি চালু করতে পারবেন।
অনলাইন ব্যাংকিং বা বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে এই টাকা পরিশোধ করতে পারবেন। সেখানে একটি রবির বিকাশ নম্বর ও তাদের ব্র্যাক ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বর দেয়া হয়েছে। সেই অ্যাকাউন্টে টাকা পরিশোধ করতে বলা হচ্ছে। বিকাশ নম্বরটি হচ্ছে 01847154673 আর ব্র্যাক ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বরটি হচ্ছে Bank Name: BRAC BANK LTD. Account Name: BDCard International Account Number: 1524203251998001
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটের ঠিকানা www.bdcard.co.uk । সাইটের নিচে তাদের ঢাকার অফিসের ঠিকানা লেখা হয়েছে, বিডিকার্ড অনলাইন পেমেন্ট সার্ভিস লিমিটেড, রাহাত টাওয়ার (৮ম তলা), ইস্কাটন, ঢাকা-১০০০। সেই ঠিকানায় গিয়ে জানা যায়, ৬ মাস আগেই তারা অফিস ছেড়ে চলে যায়।
রাহাত টাওয়ারের নিরাপত্তাকর্মী ইউনুস আলী সোনালীনিউজকে জানায়, বিডি কার্ড নামে কোনো প্রতিষ্ঠান ৮ তলায় নেই। তবে ৬ মাস আগে র্যাবের একটি দল এসে ওই অফিস থেকে অনেককেই আটক করে নিয়ে যায়। সেদিন থেকে অফিসটি বন্ধ।
বিডিকার্ড বন্ধ থাকলেও তাদের প্রতারণা এখনও থামেনি। তাদের ওয়েবসাইট গেঁটে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি তাদের ওয়েবসাইটে বিকাশ নম্বরে ফোন না দিতেও গ্রাহকদের অনুরোধ জানিয়েছে। আর সাইটের নিচে কাস্টমারদের একটি কলব্যাক রিকোয়েস্ট পাঠানোর অপশন চালু আছে। কিন্তু এ প্রতিবেদক ৪/৫ বার রিকোয়েস্ট পাঠানোর পরও কোনো ফোন আসেনি বিডিকার্ড থেকে। তবে ৭/৮ ঘণ্টা পর ফিরতি মেসেজে জানানো হয়, ‘অনেক চেষ্টা করেও আপনাকে মোবাইলে পাওয়া যায়নি। আপনি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অথবা বিকাশের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করে আমাদের ভার্চুয়াল ক্রেডিট কার্ডটি বুঝে নিন।’
আহাদ হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী সোনালীনিউজকে বলেন, গত ১৯ এপ্রিল বিডিকার্ডে ১৬৪০ টাকা পেমেন্ট করি তাদের ভার্চুয়াল কার্ডের জন্য। কিন্তু টাকা দেয়ার পর তাদের কাছ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। রাহাত টাওয়ারের সেই অফিসও নেই। এর পর কলব্যাক রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়। তাতেও সাড়া মেলেনি। পরে বুঝে গেছি, আমি ডিজিটাল প্রতারণার শিকার।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/ আমা