বিনিয়োগ বোর্ড থেকে বিডায়

অনিশ্চয়তায় আদালতের দারস্থ হচ্ছেন ৭৩ সরকারি চাকরিজীবী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০, ০১:০৩ পিএম

ঢাকা : বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা, বেসরকারি খাত এবং বিদেশি বেসরকারি পুঁজির অংশগ্রহণ বাড়ানো, নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনার কাজ ত্বরান্বিত করতে ১৯৮৯ সালে বিনিয়োগ বোর্ড গঠিত হয়। এর পর থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এর কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজস্ব খাত থেকেই বেতন-ভাতা পেতেন। এ ছাড়া আবাসন, কল্যাণ তহবিল, গৃহ নির্মাণ সুবিধা, অফিশিয়াল পাসপোর্ট, প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন ও আনুতোষিক/গ্রাচ্যুইটি সুবিধা ছিল। 

এরপর বেসরকারীকরণ কমিশন ও বিনিয়োগ বোর্ডকে বিলুপ্ত করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) গঠন করা হয় ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর। দুটি প্রতিষ্ঠান একীভূত করে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বিডা গঠন থেকেই জটিলতা শুরু। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, বিডা যেহেতু স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, তাই এর বেতন-ভাতাও দেওয়া হবে নিয়ম অনুযায়ী থোক বরাদ্দ থেকে, মহা-হিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয় থেকে নয়। ফলে অনিশ্চিতায় পড়েন বিনিয়োগ বোর্ড বিলুপ্ত হওয়ার পর বিডায় যাওয়া ৭৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাঁদের মধ্যে নবম গ্রেডের ১৪ জন সহকারী পরিচালক, ১০ জন বিনিয়োগ কর্মকর্তাসহ অফিস সহায়ক, গাড়িচালক ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটর রয়েছেন।

ইতোমধ্যে তারা প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান, জনপ্রশাসন সচিব, অর্থ সচিব, বিডা সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রধান হিসাব কর্মকর্তা বরাবর উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে। প্রতিকার না পেলে শীঘ্রই আদালতের দারস্ত হবেন হতাশাগ্রস্ত চাকরিজীবীরা।

ভুক্তভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন, গত বছর জুনে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, জুলাই থেকে রাজস্ব খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মহা-হিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয় থেকে বেতন-ভাতা পাবেন না। বেতন-ভাতা নিতে হবে বিডার থোক বরাদ্দ থেকে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন-ভাতা নিলে সরকারের নানা সুযোগ-সুবিধা থাকবে না এমন আশঙ্কা থেকে শুরুতে অনেকেই বেতন-ভাতা গ্রহণ করেননি, বাড়ি থেকে টাকা এনে বা ধারদেনা করে সংসার চালিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডার একাধিক কর্মকর্তা বলেন, রাজস্ব খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখন থোক থেকে বেতন তুলছেন। অথচ তাঁদের বেতন-ভাতা হওয়ার কথা মহা-হিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয় থেকে। এটা তাঁদের যৌক্তিক অধিকার। আমরা বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে জানিয়েছি। তারা সমস্যা নিরসনে কালক্ষেপন করছেন। এজন্য আমরা আদালতের দারস্থ হতে বাধ্য হচ্ছি। আবাসন, কল্যাণ তহবিল, গৃহ নির্মাণ ঋণ, পাসপোর্ট, প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন ও আনুতোষিক/গ্রাচ্যুইটি সুবিধা সব তাঁরা ফেরত চান তারা।

অবলুপ্ত বিনিয়োগ বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভেতর এরই মধ্যে যাঁরা পিআরএলে গেছেন তাঁরা পেনশনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁরা পাসপোর্ট করতে গিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। 

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে সংস্থাটির আরেকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, রাজস্ব খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জটিলতার বিষয়টি আমরা অবহিত। সুযোগ-সুবিধা পাওয়া তাঁদের অধিকার। তাদের একটি ডিমান্ড ফর জাস্টিস আমরা পেয়েছি। সেটা নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি শিগগিরই বিষয়টি সমাধান হবে।

সোনালীনিউজ/এএস