শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশ

অস্বস্তির রাজধানীতে স্বস্তির উৎসব

  • এম. সোলায়মান | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২, ০৮:১৯ পিএম

ঢাকা: শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে এশিয়া কাপ আয়োজন করতে হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতে। তবে ভাগ্য হতাশ করেনি শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদের। ফাইনালে গত ১১ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় দলটি। যে রাজপথ ছিল বিক্ষোভে উত্তাল, সেই রাজপথে হয়েছিল এশিয়া কাপ জয়ের ছাদখোলা উল্লাস। আর সেই উল্লাসে মেতে উঠেছিল শ্রীলঙ্কার হাজারো ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ। তেমনি বাংলাদেশে যখন রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ে অস্বস্তিতে মানুষ। ঠিক তখনই বাংলার বাঘিনীদের শিরোপা অর্জনে এক ধরণের স্বস্তি ফিরেছে মানুষের মাঝে। দীর্ঘ ১৯ বছর পর সাফের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। এ আনন্দ কম কিসে? 

এর আগে ২০০৩ সালে আলফাজ আহমেদদের হাত ধরে লাল-সবুজের দেশ দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তারপর আর শিরোপার দেখা পায় নি বাংলাদেশ। অবশেষে নেপালের কাঠমুন্ডুতে সেই আক্ষেপ ঘুঁচিয়েছে বাংলার বাঘিনী সাবিনার দল। 

দেশকে গর্বিত করা যোদ্ধাদের সাদরে বরণ করে নিতে সকাল থেকেই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছিল উপচে পড়া ভিড়। রূপনা চাকমা, মারিয়া মান্ডা, সিরাত জাহান স্বপ্নাদের এক নজর দেখতে সকাল থেকেই অপেক্ষা করেন সব বয়সের অসংখ্য মানুষ।

এরপর শিরোপা নিয়ে রাজকন্যারা বুধবার দুপুর ১ টা ৪০ মিনিটে অবতরণ করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। কেক কেটে, মিষ্টিমুখ করিয়ে তাদের বরণ করেছে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির একটি অংশ। 

এরপর ছাদখোলা বাসে করে বিমানবন্দর থেকে বাফুফে ভবনের উদ্দেশে যাত্রা করে সাফজয়ী কৃতিসন্তানরা। পথে পথে হাজারো মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হন বাঘীনিরা। সময় যত গড়ায় রাজধানীর রাস্তায় ভক্ত-সমর্থকদের ভিড় ততই বেড়ে যায়। কেউ কেউ হাতে প্লাকার্ড কিংবা জাতীয় পতাকা নিয়ে সাবিনাদের সমর্থন জানান। 

চ্যাম্পিয়নদের বাসটি বিমানবন্দর থেকে কাকলী-বনানী পার হয়ে জাহাঙ্গীর গেট দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে যায়। তারপর বিজয় সরণি, তেজগাঁও হয়ে পুনরায় ফ্লাইওভার দিয়ে মৌচাক হয়ে কাকরাইলে আসে। কাকরাইল থেকে ফকিরাপুল-আরামবাগ। তারপর মতিঝিল শাপলা চত্বর ঘুরে পৌঁছায় বাফুফে ভবনে। সেখানে বাফুফে সভাপতি ও সাফ সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন তাদের সংবর্ধনা দেন।

এদিকে সাবিনাদের শিরোপা জয়ে পুরো দলকে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এছাড়াও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহসভাপতি ও গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আতাউর রহমানও ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন। তিনি তার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান তমা গ্রুপের পক্ষ থেকে এই পুরস্কার দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দশরথের রঙ্গশালায় ফাইনালে কৃষ্ণা রানী সরকারের দুই ও শামসুন্নাহার জুনিয়রের এক গোলে স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা জেতে বাংলাদেশ। পুরো টুর্নামেন্টে ৩ গোল করেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। বীরের বেশে লড়াই করে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলকে প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।

সোনালীনিউজ/এম/আইএ