যানবাহনে মামলা দিয়েই ৩২ লাখ আদায়!

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০১৬, ১০:৩১ এএম

‘যানবাহনে মামলা দিয়ে গাজীপুর থেকে মাসে ৩২ লাখ টাকা আদায় করতেই হবে। আর এ টাকা আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহনে মামলা দিয়ে থাকে।’

কেন অহেতুক হাইওয়ের ওপর যানবাহন থামিয়ে মামলা দেয়া হয় জানতে চাইলে সাংবাদিকদের কাছে এভাবে জবাব দেন গাজীপুর-সালনা হাইওয়ে পুলিশের ওসি মোহাম্মদ দাউদ।

শুধু টার্গেটকৃত টাকা আদায়ের জন্য মামলা দেয়া কতটা যুক্তিযুক্ত- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মামলা দিয়ে রাজস্ব আদায় না হলে সরকার কিভাবে পদ্মা সেতু বানাবে? কিভাবে আমাদের বেতন-ভাতা দেবে?’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মামলা করতে মহাসড়কে ট্রাক থামাতেই হবে।’

প্রসঙ্গত, গাজীপুর হাইওয়েতে প্রায় সারাক্ষণ যানজট লেগে থাকে। বেশির ভাগ সময় মাইলের পর মাইল দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়ে গাড়িচালক থেকে শুরু করে যাত্রীসাধারণের নাভিশ্বাস অবস্থা দেখা দেয়। মানুষের মূল্যবান কর্মঘণ্টা রাস্তায় শেষ হয়ে যায়। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও অসন্তোষের শেষ নেই। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, তারা শত চেষ্টা করেও যানজট সামাল দিতে পারে না। হাইওয়ে পুলিশের মামলা অভিযানের কারণে যেখানে সেখানে গাড়ি আটকে দেয়া হয়। এ কারণে যানজট নিরসনে জেলা পুলিশের কোনো উদ্যোগ হাইওয়েতে তেমন কাজে আসছে না।

সূত্র বলছে, গাজীপুর সড়ক অঞ্চলে হাইওয়ে পুলিশের ৩০টি থানা ফাঁড়ি রয়েছে। এসব ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে প্রতি মাসে টার্গেটকৃত ৩২ লাখ টাকা আদায় করা হয়। তবে এই টাকা আদায় করতে গিয়ে কর্তাব্যক্তিসহ হাইওয়ে পুলিশের বেশির ভাগ সদস্য নিজেদের পকেট ভারি করে থাকেন। প্রতিদিন গড়ে যদি খাতা-কলমে ১শ’মামলা করা হয়, সেখানে বাস্তবে গাড়ি থামানো হয় এর দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ। অবশিষ্ট গাড়ি থেকে মামলার ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা তোলা হয়। যাকে গাড়িচালকরা সহজ ভাষায় বলে থাকেন হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি। আর অভিযোগের তীর সবচেয়ে বেশি সালনা হাইওয়ে পুলিশের ওসি মোহাম্মদ দাউদের দিকে। বাড়ি ফরিদপুর হলেও তিনি সব সময় নিজেকে গোপালগঞ্জের বাসিন্দা বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন।

ভুক্তভোগীদের অনেকে জানিয়েছেন, গাজীপুরে সালনা হাইওয়ে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে যানবাহন থেকে টাকা আদায়, যানবাহনের কাগজপত্র দেখার নামে চালক ও যাত্রীদের হয়রানি করাসহ বহুবিধ অভিযোগ রয়েছে। তবে অনেকে প্রতিবাদ করার সাহস পান না বলে এদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলেছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ