‘নির্বাচনে জাতিসংঘ বা যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই’

  • বিশেষ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৮, ০৮:০৫ পিএম

ঢাকা : জাতিসংঘের সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা হাসান ফেরদৌস জানিয়েছেন, কোনো দেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য জাতিসংঘের মধ্যস্থতা করার সুযোগ নেই। নির্বাচন তদারকির জন্য বিশ্ব সংস্থাটির কোনো মনিটরিং সেলও নেই। তার মতে, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কাজ করতে হলে সরকারের অনুমতি প্রয়োজন।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, নির্বাচন তদারকি ও মধ্যস্থতাকারী পাঠানোর জন্য জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

একটি দেশের নির্বাচনে জাতিসংঘ কি ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে- এ বিষয়ে কথা বলেন, সংস্থাটির সাবেক কর্মকর্তা হাসান ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষণ ও কাঠামোগত সহায়তা করা ছাড়া নির্বাচনে জাতিসংঘের আর কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ নেই।’

হাসান ফেরদৌস বলেন, ‘জাতিসংঘ কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কারোরই বাংলাদেশে নির্বাচন স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ হওয়ার গ্যারান্টি দেয়ার উপায় নাই। তারা দূর থেকে দেখে বলতে পারে, ভালো হয়েছে কিনা। যখন আমরা কোনো বিধি রাষ্ট্রের কাছে আসি দেনদরবার করতে তখন আমরা আসলে আমাদের সার্বভৌমত্বটাকে দুর্বল করে ফেলি।’

জাতিসংঘের সাবেক এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার জাতিসংঘ মহাসচিবের দপ্তরের নেই। এজন্য সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। আর সরকার সহযোগিতা চাইলেই কেবল নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে পারে জাতিসংঘ।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণ ছাড়া কারো সাধ্য নেই বাংলাদেশে প্রবেশ করবার। ভিসা লাগবে তো। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যে, জাতিসংঘ খুব বড় সংস্থা বটে, খুব ক্ষমতাবান সংস্থা নয়। আমি একটা উদাহরণ দেই- রোহিঙ্গা। পাশে বার্মা একটা দেশ, এথনিক ক্লিনজিং হয়ে গেছে। একটা জেনোসাইড হয়ে গেল। এখানে বসে কথা বলা ছাড়া কি করতে পেরেছে তারা। একটা লোককে দেশে ফেরত পাঠানো গেছে?

যদি এটা সাধারণ পরিষদ বলতো, নিরাপত্তা পরিষদ বলতো দ্যাটস অ্যা ডিফারেন্ট স্টোরি। জাতিসংঘ সেক্রেটারিয়েটের কোনো ক্ষমতা নেই বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তের বাইরে, সরকারের সম্মতির বাইরে কোনোভাবে নাক গলানো।

ফলে যারা স্বপ্ন দেখছে অপজিশনের আমন্ত্রণে একটি মিডিয়া টিম যাবে, একটি মিডিয়াটর (মধ্যস্থতাকারী) যাবে। তারা স্বপ্ন দেখছে। হতে পারে অনলি ইফ, আমাদের সরকার এটাকে এগ্রি করে, আমন্ত্রণ পাঠায় এবং সম্মতি জানায়, কে আসবে, কখন আসবে কিভাবে আসবে। যেহেতু প্রটোকল ইনভলব এখানে। এর বাইরে নয়।’

গত বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করেছেন বিএনপি মহাসচিব। হাসান ফেরদৌস মনে করেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের মতো ক্ষমতা এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের নেই।

তার কথায়, ‘আমেরিকার এ মুহূর্তে বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব করার মতো কোনো তেমন ক্ষমতা নেই। আমাদের বার্ষিক ফরেন এইড ২২০ মিলিয়ন ডলারের মতো। যা আজকের বাংলাদেশের জন্য কিছুই না। কোনো রিয়েল ওয়েট তারা কেরি করে না।’

জাতিসংঘের মুখপাত্র জানান, অ্যান্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে নয়, বিএনপির অনুরোধেই দলটির মহাসচিবের সঙ্গে এ রুটিন বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে জাতিসংঘের পক্ষে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মিরোস্লাভ জেনকা উপস্থিত ছিলেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই