বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যে

কামাল হোসেনের নেতৃত্বে রাজি বিএনপি, এ মাসেই ঘোষণা

  • বিশেষ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮, ০৬:২৯ পিএম

ঢাকা : চলতি মাসেই সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার সভাপতি ডা: এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের ঘোষণা আসছে। এ বিষয়ে নিজেদের মধ্যে মতবিনিময় করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। একই সাথে এই ঐক্যের প্রধান কে হবেন, তা নিয়েও আলোচনা করেছে দলটি। গত রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে থাকা দলটির এক নেতা জানান, বিএনপি অনেক দিন থেকেই বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য নিয়ে কাজ করছে। এটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। চলতি মাসে যেকোনো দিন এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে। এ জন্য যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তা-ও লিখিত আকারে তৈরি করা হয়েছে। এটি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

দলের ওই নেতা আরো বলেন, বৃহত্তর এই ঐক্যের প্রধান কে হবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তবে যুক্তফ্রন্টে থাকা তিনটি দল, গণফোরামসহ অন্য দলগুলো সিদ্ধান্ত নিয়ে গ্রহণযোগ্য কাউকে মনোনীত করলে বিএনপির তাতে আপত্তি থাকবে না বলেও মনে করে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এক্ষেত্রে বিকল্পধারার সভাপতি ডা: এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বা গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের মধ্যে কেউ হলে তা নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হতে পারে।

বৈঠক সূত্রগুলো আরো বলছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফেরার পর ড. কামাল হোসেনের সাথে একান্তে বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে বিএনপি সরকারের কাছে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে প্রস্তাবগুলো তুলে ধরবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ড. কামাল ওই প্রস্তাবগুলো ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন।

গত রাত পৌনে ৮টা থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এসব বিষয় ছাড়াও দলের চেয়ারপার্সনের মামলা, তার সুচিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে কী ধরনের নতুন কর্মসূচি দেয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে বৈঠকে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, বিএনপি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পূর্ব শর্ত হিসেবে সাত দফা চূড়ান্ত করেছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-

০১. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই জাতীয় সংসদ বাতিল;

০২. দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তার বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার;

০৩. দেশের সব বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তি, সাজা বাতিল ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও নতুন কোনো মামলা না দেয়ার নিশ্চয়তা, পুরনো মামলায় কাউকে গ্রেফতার না করা;

০৪. কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মতপ্রকাশের অভিযোগে ছাত্রছাত্রী, সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির নিশ্চয়তা;

০৫.  সরকারের পদত্যাগ ও সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনাসাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা;

০৬. সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনাক্রমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা। নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে তাদের ওপর কোনো ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ না করা; এবং

০৭. সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগ নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার বিধান নিশ্চিত করা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই