বাফার গুদামের অভাবে নষ্ট হচ্ছে সার

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০১৬, ০১:২১ পিএম

সোনালীনিউজ রিপোর্ট

বাফার গুদাম না থাকায় খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে লাখ লাখ বস্তা সার। বর্তমানে পাবনার নগরবাড়ি ঘাটে প্রায় দু’লক্ষাধিক বস্তা সার খোলা আকাশের নিচে পড়ে রয়েছে। রোদ-বৃষ্টি-কুয়াশায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওই সার। যদিও দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে বাফার গুদাম নির্মাণের দামি জানিয়ে আসছেন ব্যবসায়ী ও পরিবহন ঠিকাদাররা। কিন্তু অদৃশ্য কারণে তা না হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে প্রতি বছরই বিপুল পরিমাণ সার রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের উত্তরাঞ্চলে বাংলাদেশ ক্যামিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) ১৪টি বাফার গুদাম রয়েছে। নগরবাড়ি ঘাট ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের মাধ্যমে ওসব গুদামে সার সরবরাহ করা হয়। বিসিআইসি অনুমোদিত পরিবহন ঠিকাদাররা চট্টগ্রাম থেকে জাহাজে করে সার এনে ওই দুটি নৌবন্দরে নামান। তারপর সেখান থেকে ওই সার ট্রাকে করে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরেই বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের চেয়ে নগরবাড়ি ঘাটের মাধ্যমেই উত্তরাঞ্চলে সার সরবরাহকে সুবিধাজনক বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। ফলে ঘাটে জাহাজ থেকে সার নামানোর পরিমাণ আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। ফলে বাধ্য হয়েই সেখানে খোলা আকাশের নিচে সারের স্তূপ বেড়ে চলেছে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে নগরবাড়ি ঘাটের নদীর তীর থেকে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে খোলা জায়গায় সারের স্তূপ জমেছে। তারপরও নৌঘাটে বিক্ষিপ্তভাবে সারভর্তি ৮/১০টি জাহাজ ভিড়ে রয়েছে। ওসব জাহাজের কয়েকটি থেকে সার নামিয়ে পুরানো স্তূপের ওপর এবং পাশে কোনো রকমে ঠেসেঠুসে রাখা হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত ওসব সার সরানো না হলে বৃষ্টির পানিতে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার তীব্র আশঙ্কা রয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, কয়েক বছর আগেই সরকারের নৌপরিবহনমন্ত্রী ও পরিকল্পনা মন্ত্রী নগরবাড়ি ঘাট পরিদর্শন করে বাফার গুদাম স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তাছাড়া সরকারি একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও সেখানে গিয়ে গুদাম স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। সেজন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু পরে অদৃশ্য কারণে তা থেমে যায়। অথচ নগরবাড়ি ঘাটটি হচ্ছে দেশের অন্যতম সার সরবরাহ কেন্দ্র। সেখানে বর্তমানে দেড় শতাধিক বেসরকারি গুদাম থাকলেও সেগুলোতে ইউরিয়া সার রাখা হয় না। ফলে গোটা উত্তরাঞ্চল ও টাঙ্গাইল জেলার জন্য এখানে জাহাজ থেকে ইউরিয়া সার যা নামানো হয় তার পুরোটাই নদীতীরে খোলা জায়গায় নামিয়ে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়। অনেক সময় দুই-তিন মাস বা তারও বেশি সময় ধরে সারের বস্তা এভাবেই ফেলে রাখা হয়। অথচ গুদাম থাকলে খোলা আকাশের নিচে এভাবে সার ফেলে রাখতে হতো না।

এ প্রসঙ্গে কৃষি বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, নগরবাড়ি ঘাটে বাফার গুদাম প্রয়োজন। সেখানে গুদাম নির্মাণের জন্য অর্থও বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেখানে বাফার গুদাম নির্মাণ না হওয়াটা দুঃখজনক।

সোনালীনিউজ/আমা