চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে ১৫০ রানে অলআউট বাংলাদেশ

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০১৯, ০৩:৩৪ পিএম

ঢাকা: ভারতের মাটিতে তাদের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক টেস্টে ব্যাটিং বিপর্যয় শুরু হয়েছিল প্রথম থেকেই। এরপর মাঝে ছোট ছোট দুটি জুটি বিপর্যয় কিছুটা কাটানোর ইঙ্গিত দিয়েছিল। কিন্তু আখেরে লাভ কিছুই হয়নি। একের পর এক উইকেট যাচ্ছেই। ৪ উইকেটে ১০০ পার করার পর দ্রুত ফিরে গেলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৯৯ রানে মুমিনুল আউট হওয়ার পর মুশফিকের সঙ্গে জুটি বাধেন তার ভায়রা ভাই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। 

কিন্তু ১৬ রানের জুটি গড়ার পর বিচ্ছিন্ন হতে বাধ্য হন তারা দু’জন। মূলতঃ রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মিডল স্ট্যাম্পের ওপর থাকা বলতে সুইপ করতে যান মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু বল ব্যাটে লাগেনি। সরাসরি বোল্ড হয়ে যান তিনি। অশ্বিনের বলে কয়েকটি ক্যাচ মিস হওয়ার পর তিনি সরাসরি বোল্ড করে যেন সতীর্থ ফিল্ডারদের বলে দিলেন, তোমরা ক্যাচ ধরতে পারো না, তাতে কি আমি এবার বোল্ডই করে দিলাম।

এরপর মুশফিকের সঙ্গে মিলে লিটন দাস গড়ে তোলেন ২৫ রানের জুটি। কিন্তু ভারতীয়দের সাঁড়াসি বোলিংয়ের সামনে সংগ্রামী ইনিংস খেলেও টিকতে পারলেন না মুশফিক। ১০৫ বল খেলে ৪৩ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। ১৪০ রানের মাথায় মোহাম্মদ শামির বলে বোল্ড আউট হন তিনি। ৫ উইকেটে ১৪০ থেকে মুহূর্তের মধ্যেই ৭ উইকেটে ১৪০ হয়ে যায় বাংলাদেশের। মুশফিকের পরের বলেই মোহাম্মদ শামির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান মেহেদী হাসান মিরাজ।

চা বিরতিতে শেষে খেলতে নেমে ৫৪.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান করে বাংলাদেশ। এর আগে ৩১ রানে তিন উইকেট হারিয়ে যখন কঠিন বিপর্যয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং, তখনই হাল ধরার চেষ্টা করেন মুমিনুল হক আর মুশফিকুর রহীম। দু’জনের ব্যাটে ৬৮ রানের জুটি গড়ে ওঠে। তাতে প্রাথমিক বিপর্যয় কাটাতে পারলেও শঙ্কা শেষ হয়ে যায়নি। 

কারণ, দলীয় ৯৯ রানের মাথায় ৪র্থ উইকেট হিসেবে সাজঘরে ফিরলেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ৮০ বল মোকাবেলায় ৩৭ রান করে মাঠ ছাড়েন মুমিনুল। ৬টি বাউন্ডারির মার ছিল তার ব্যাটে। ৯৯ রানের মাথায় অধিনায়ককে হারানোর পর মাঠে নামেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর শুরুতেই ভারতীয় পেসারদের ইনসুইং আর আউটসুইংয়ে দিশেহারা বাংলাদেশের দুই ওপেনার। যে কারণে স্কোরবোর্ডে প্রথম রান যোগ করতেই তিন ওভার লেগে গিয়েছিল ইমরুল কায়েস আর সাদমান ইসলামের। 

তবে ভারতীয় পেসারদের বিষমাখানো বোলিংয়ের সামনে টিকতে পারেননি এই দুই ওপেনার। ১২ রানে বসিয়েই ইমরুল এবং সাদমানকে তুলে নেন দুই পেসার ইশান্ত শর্মা এবং উমেষ যাদব। দ্রুত দুই ওপেনারকে হারিয়ে যখন ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ, তখন দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন অধিনায়ক মুমিনুল হক এবং ব্যাটমসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন। 

কিন্তু এ দু’জন ১৯ রানের জুটি গড়ার পরই বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে বাধ্য হন। ৩৬ বল খেলে ১২ রান করে মোহাম্মদ শামির বলে ফিরে যান মোহাম্মদ মিঠুন। এলবিডব্লিউর শিকার হন তিনি। টস জিতে ব্যাট করতে নামার পরই হয়তো বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানরা বুঝতে পেরেছেন, তারা কি ভুলটাই না করে ফেলেছেন। এই উইকেটে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠানোর দারুণ একটা সুযোগ ছিল। 

কারণ, প্রথম ওভার থেকেই ইন্দোরের উইকেটে বলকে লাটিমের মত ঘোরাতে শুরু করেছে ভারতীয় পেসাররা। এমনিতেই ভারতের তিন পেসার ইশান্ত শর্মা, উমেষ যাদব এবং মোহাম্মদ শামি রয়েছেন দুর্দান্ত ফর্মে। বলা হচ্ছে, টেস্টে সম্ভবত এই মুহূর্তে সেরা পেস অ্যাটাক রয়েছে বিরাট কোহলির হাতে। সেই পেসারদের বিপক্ষে ইন্দোরের হলকার স্টেডিয়ামে হালকা ঘাসযুক্ত উইকেটে প্রথমে ব্যাট করতে নামার সিদ্ধান্তকে খুবই ‘সাহসী’ বলে মন্তব্য করেছেন সুনিল গাভাস্কার।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ