মধুর প্রতিশোধে ৮ বছর পর শিরোপা ম্যানইউয়ের

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৪, ০৯:৫৫ এএম

ঢাকা : ডিফেন্ডার ইয়োশকো ভার্দিওলের হাস্যকর ভুলের সুযোগ দারুণভাবে কাজে লাগালেন আলেহান্দ্রো গারনাচো। পরের কয়েক মিনিটের আত্মবিশ্বাসী ফুটবলে দ্বিতীয় গোলও আদায় করে নিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। শুরুর বিবর্ণতা কাটিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে প্রবল চাপ বাড়ায় ম্যানচেস্টার সিটি। শেষ দিকে ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষও পায় দলটি। কিন্তু এরপর তারা আর কিছু করতে পারেনি। অসাধারণ এক জয়ে এফএ কাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরল এরিক টেন হাগের দল।

লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে শনিবার ফাইনালে ২-১ গোলে জিতে ব্যর্থতায় ভরা মৌসুমের শেষটা রাঙিয়েছে ইউনাইটেড। গারনাচোর গোলের পর ব্যবধান বাড়ান কবিমেইনু। সিটির একমাত্র গোলটি করেন জেরেমি দোকু।

গত সপ্তাহে টানা চতুর্থবারের মতো প্রিমিয়ার লিগ জয়ের ইতিহাস গড়া সিটির হাতে এই শিরোপারও সম্ভাব্য ছবি এঁকেছিল অনেকে। আর কেনইবা নয়! প্রিমিয়ার লিগে সিটির চেয়ে ৩১ পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে অষ্টম হয়েছে ইউনাইটেড।

ফেভারিট তত্ত্বে তাই পেপ গুয়ার্দিওলার দল পরিষ্কারভাবেই এগিয়ে ছিল। তবে লড়াইটা যখন ম্যানচেস্টার ডার্বি তখন ম্যাচের আগে উত্তাপ ছিল যথেষ্ট। দেরিতে হলেও, মাঠেও উত্তেজনা ছড়াল ঢের।

বল দখলের হিসাবে একাধিপত্য করে সিটি; ৭০ শতাংশের বেশি সময় পজেশন ছিল তাদের। পুরো ম্যাচের হিসাব করলে আক্রমণেও তারা এগিয়ে, যদিও প্রথমার্ধে দলটির আক্রমণে কোনো ধার ছিল না। সব মিলিয়ে গোলের জন্য ১৯ শট নিয়ে চারটি লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা; বিপরীতে ইউনাইটেড ১১ শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখে পাঁচটি।

দুই নগরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ের প্রথম ১৫ মিনিটে যদিও উল্লেখযোগ্য কিছুই হয়নি। পরের ১৪ মিনিটে কিছুটা আশাব্যঞ্জক ফুটবল খেলে ইউনাইটেড, তবে পরিষ্কার সুযোগের দেখা তখন পর্যন্তও মেলেনি।

[224174]

এরপরই ভার্দিওলের ওই অবিশ্বাস্য কাণ্ড এবং ইউনাইটেড শিবিরে উল্লাস। মাঝমাঠে সিটি পজেশন হারালে সতীর্ধের পা ঘুরে বল পেয়ে আলেহান্দ্রো গারনাচোর উদ্দেশ্যে উঁচু করে বল বাড়ান দিয়োগো দালোত। বলে দৃষ্টি রেখে এগিয়ে যান আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড, বিপদ বুঝে বাইরে বেরিয়ে আসেন স্টেফান ওর্টেগা, ঠিক তখনই কী বুঝে ডিফেন্ডার ভার্দিওল হেডে বল গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে সামনে বাড়ালেন। বক্সে প্রতিপক্ষের এমন উপহার পেয়ে অনায়াসে ফাঁকা জালে বল পাঠান গারনাচো।

সাত মিনিট পর আবার সিটির জালে বল জড়ায়, তবে এবার অফসাইডের বাঁশি বাজলে বেঁচে যায় তারা। খানিক বাদেই অবশ্য দ্বিতীয় গোল হজম করে দলটি।

প্রথমার্ধে মাত্র এক-চতুর্থাংশ সময় বল দখলে রাখা ইউনাইটেড ৩৯তম মিনিটে দারুণ এক পাল্টা আক্রমণে ব্যবধান দ্বিগুণ করে। সতীর্থের লম্বা ক্রস ধরে ডান দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে গারনাচো বক্সের মুখে খুঁজে নেন ব্রুনো ফের্নান্দেসকে। এরপর অধিনায়কের দারুণ পাস বক্সে পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় প্লেসিং শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ১৯ বছর বয়সী ইংলিশ ফরোয়ার্ড মেইনু।

বিরতির পর সিটির আক্রমণে জোর বাড়ে। পরপর দুই মিনিটে দুটি সুবর্ণ সুযোগও পায় তারা; কিন্তু সাফল্য মেলেনি। ৫৪তম মিনিটে সতীর্থের পাস ছয় গজ বক্সের বাইরে পেয়ে শট নিতেই পারেননি ফিল ফোডেন, আর পরের মিনিটে আর্লিং হলান্ডের জোরাল শট বাধা পায় পোস্টে।

প্রতিপক্ষের আক্রমণের ঢেউ সামলাতে নিজেদের সীমানা থেকেই বের হতে পারছিল না ইউনাইটেড। ৫৯তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে কাইল ওয়াকারের জোরাল শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা। পাঁচ মিনিট পর হুলিয়ান আলভারেসের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে হতাশা বাড়ে সিটির।

দারুণ কয়েকটি সেভ করা ওনানা ৮৭তম মিনিটে আর পারেননি জাল অক্ষত রাখতে। বক্সের বাইরে থেকে দোকুর জোরাল নিচু শট ঠেকাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন ক্যামেরুনের গোলরক্ষক, বলে হাতও লাগান তিনি; তারপরও বল চলে যায় জালে।

নির্ধারিত সময় শেষে সাত মিনিট যোগ করা হয়। আরেকটি গোলের জন্য যথেষ্ট সময়; কিন্তু সিটি পারেনি কাজে লাগাতে।

বাকিটা সময় ঘর আগলে রেখে আরও একবার এফএ কাপের ট্রফিতে চুমু আঁকল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রেকর্ড ত্রয়োদশবারের মতো।

শিরোপার পাশাপাশি আরও এক প্রাপ্তি যোগ হলো ইউনাইটেড শিবিরে; আগামী মৌসুমের ইউরোপা লিগে খেলা নিশ্চিত করল তারা।

এমটিআই