ঘুম কেড়ে নেয়া ‘নাইনটি নাইন’

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০১৬, ০১:২৯ পিএম

টেস্টে সেঞ্চুরি করা অনেক বড় অর্জন। প্রথম টেস্টে সুযোগ পাওয়া, দ্বিতীয়ত সেঞ্চুরির স্বপ্ন প্রতিটি ক্রিকেটারই দেখে থাকেন। আর সেটি যদি হয় অভিষেক টেস্টে তাহলে তো কথাই নেই। ৯৯ রান করে দিন শেষ করার রাতে ঘুম না আসাই স্বাভাবিক।

এমনি ভাবে দুবার ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যান গ্লেন টার্নার। ঢাকার মাঠে তিনি অভিষেকেই বিদায় নিয়েছিলেন এমনি একটি সংখ্যায়। ১৯৬৯ সালে ঢাকায় পাকিস্তানের বিপক্ষে টার্নারের ৯৯ রানে অপরাজিত থাকার যন্ত্রণাটা ছিল অনেক কঠিন। কারণ, ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিই সেদিন হাতছানি দিয়ে ডাকছিল এই কিউই ব্যাটসম্যানকে। একই ঘটনায় ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান মইন আলীতেও ছিলো যন্ত্রনা। 

সে রাতে ঘুম আসতে একটু সমস্যা হওয়ারই কথা। ভারতের বিপক্ষে রাজকোট টেস্টে মইন প্রথম দিন শেষ করেছিলো ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে। ওই রাতে তার ঘুম হয়েছি কিনা সেটা কেবল তিনি নিজেই বলতে পারেন। তবে সাদা চোখে তা নির্ঘুম রাতের পক্ষেই থাকছে। ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করার ঘটনাও খুব বেশি ঘটেনি টেস্টে। মঈনের আগে টেস্ট ইতিহাসে মাত্র ১২ জন ব্যাটসম্যানকে এমন ‘ঘুমহীন’ রাত কাটাতে হয়েছে। দুজনের আবার এই অভিজ্ঞতা আছেন দুবার। মঈন আলী ছাড়া আরও চারজন ইংলিশ ক্রিকেটার মুখোমুখি হয়েছিলেন এমন অভিজ্ঞতার জ্যাক হবস, ওয়ালি হ্যামন্ড, অ্যালান ল্যাম্ব ও গ্রায়েম হিক। নিউজিল্যান্ডের গ্লেন টার্নার ও পাকিস্তানের মুদাস্সর নজর দুবার ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছিলেন। 

টার্নারের মতো এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে ইংল্যান্ডের গ্রায়েম হিক ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের গ্যারি গোমেজের। হিক ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে বোম্বেতে (এখন মুম্বাই) ভারতের বিপক্ষে তাঁর প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করার আগের সন্ধ্যায় অপরাজিত ছিলেন ৯৯ রানে। গোমেজের এই অবস্থা হয়েছিল ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে, দিল্লিতে ভারতের বিপক্ষেই। 

টার্নার আবারও ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে ক্রাইস্টচার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছিলেন। মুদাস্সরের এই অভিজ্ঞতা দুবার হয়েছিল। দুবারই প্রতিপক্ষ আবার ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। ১৯৭৯-৮০ মৌসুমে ব্যাঙ্গালোরে (এখন বেঙ্গালুরু), ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে লাহোরে।

বাকিদের মধ্যে ৯৯ রানে দিন শেষ করে ঘুমহীন রাত কাটিয়েছেন গ্রেগ চ্যাপেল (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, মেলবোর্নে, ১৯৭৯-৮০ মৌসুমে), জাভেদ মিয়াঁদাদ (ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ১৯৯২ সালে বার্মিংহামে), মারভান আতাপাত্তু (কলম্বোতে, ২০০২ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে) ও হাশিম আমলা (২০১২-১৩ সালে পার্থে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে)।

মঈনের আগে সর্বশেষ এ অভিজ্ঞতা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার ফাফ ডু প্লেসির। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পোর্ট এলিজাবেথে ২০১৪ সালে। এরপর আর কেউ যদি টেস্টে ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে রাতে বিছানায় যান, তাঁর নির্ভার থাকাই উচিত। কারণ, ওপরে যে ১৩ জন ক্রিকেটারের ১৫টি এমন ঘটনার কথা বলা হলো, এর কোনোবারই কিন্তু কেউ সেঞ্চুরি-বঞ্চিত হয়নি। ফলে টেনশনের কিছু নয়। পরের দিন সকালে দ্রুতই সবাই সেঞ্চুরি স্বাদ পেয়ে গিয়েছিলেন। শুধু কি তা-ই? আতাপাত্তু তো বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরিটাকে টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন ২০১ রানে!

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই