বিশ্ব রেকর্ড করতে হবে তামিম-সৌম্যদের

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০১৭, ০৬:০৮ পিএম

ঢাকা: গল টেস্ট জিততে হলে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে হবে বাংলাদেশকে। শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেয়া ৪৫৭ রানের জবাবে চতুর্থ দিন শেষে বিনা উইকেটে ৬৭ রান সংগ্রহ করেছে টাইগাররা। ফলে ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনে ১০ উইকেটে আরও ৩৯০ রান করতে হবে সফরকারিরা। আর তা করতে পারলেই চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ের নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ।

চতুর্থ ইনিংসে ৪১৮ রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২০০৩ সালে সেন্ট জোন্স-এ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টার্গেট ৪১৮ রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়ে ক্যারিবীয়রা। ২০০৮ সালে ঢাকায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫২১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৪১৩ রান করে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবার শ্রীলঙ্কার ঘরের মাঠে জিততে ৪৫৭ রান করতে হবে।

দ্বিতীয় ইনিংসে দুর্দান্ত শুরু করেছে বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। তামিম একটু ধীর স্থীর হলে লঙ্কান বোলারদের উপর রীতিমত ঝড় বইয়ে দিয়েছেন সৌম্য। মাত্র ৪৪ বলে চারটি চার আর এক ছক্কায় তুলে নিয়েছেন টানা দ্বিতীয় টেস্ট হাফ সেঞ্চুরি। চতুর্থ দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে ৫৩ রানে অপরাজিত আছেন তিনি। অপর প্রান্তে ১৩ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন তামিম। আর বাংলাদেশের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৬৭ রান। শনিবার শেষ দিনে ৩৯০ রান করতে হবে টাইগারদের। হাতে রয়েছে ১০ উইকেট।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) বৃষ্টির কারণে শেষ সেশনের খেলা পরিত্যক্ত করা হয়েছিল। তাই আজ (১০ মার্চ) চতুর্থ দিনে নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট আগেই শুরু হয় খেলা। এদিন বাড়তি খেলা হবে ৮ ওভার। ফলে শেষ সেশনেও বাড়ানো হয়েছে সময়। এদিন নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে দারুন শুরু করেছিল স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৯ রান করে ফেলে দলটি। এরপরই বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন বাংলাদেশের তরুণ পেসার তাসকিন আহমেদ। তিনি ফিরিয়ে দেন স্বাগতিক ওপেনার করুণারত্নেকে। ডিপ স্কয়ার লেগে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্যাচ বানিয়ে করুণারত্নেকে সাজঘরে ফেরত পাঠান তাসকিন। ৩২ রান করেন করুনারত্নে।

এরপর কুশল মেন্ডিসকে নিয়ে আরও ৫৬ রান যোগ করেন থারাঙ্গা। সাকিবের বলে তাসকিনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মেন্ডিস। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান এই ইনিংসে ১৯ রান করেন। এরপর দীনেশ চান্দিমাল ও থারাঙ্গা লঙ্কার লিডটাকে বাড়াতে থাকেন। এই দুজন যোগ করেন ৬৪ রান। এই জুটিতেই টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক পূর্ণ করেন থারাঙ্গা। ১৬৪ বলে সেঞ্চুরি করেন লঙ্কান এই ওপেনার।

সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি থারাঙ্গা। মিরাজের বলে বোল্ড হবার আগে ১১৫ রান করেন তিনি। এরপর গুনারত্নেকে বোল্ড করেন সাকিব। ক্রিজে এসেই বাংলাদেশের বোলারদের উপর আক্রমণ চালান নিরোশান ডিকভেলা। মাত্র ১৫ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের তালুবন্দি হয়ে সাঝঘরে ফেরেন তিনি।

ডিকভেলার বিদায়ের পর টেস্ট ক্যারিয়ারের ১১তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিতে ভুল করেননি দিনেশ চন্দিমাল। অবশ্য এরপরই মোস্তাফিজুর রহমানের কার্টারে কাটা পড়েন দিলরুয়ান পেরেরা। সাথে সাথে ৬ উইকেটে ২৭৪ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক রঙ্গনা হেরাথ। ফলে প্রথম ইনিংসের ১৮২ রানের সাথে যোগ হয় ২৭৪। তাতে বাংলাদেশের চূড়ান্ত লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৫৭ রান।

দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের পক্ষে দুইটি করে উইকেটন নেন সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। একটি করে উইকেট পেয়েছেন তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান।

প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ১৮২ রানে পিছিয়ে থেকে বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) তৃতীয় দিনে প্রথম ইনিংসে ৩১২ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম সর্বোচ্চ ৮৫ রান করেন। এ ছাড়া সৌম্য সরকার ৭১, তামিম ইকবাল ৫৭ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ৪১ রান করেছেন।  

মঙ্গলবার গল স্টেডিয়ামে (৭ মার্চ) টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪৯৪ রানে অল আউট হয় শ্রীলঙ্কা। লঙ্কানদের পক্ষে কুশল মেন্ডিস সর্বোচ্চ ১৯৪ রান করেন। এছাড়া এসেলা গুরুরত্নে ৮৫, নিরসেন ডিকভেল ৭৫ ও দিলুয়ান পেরেরা করেন ৫১ রান। বাংলাদেশের পক্ষে মেহেদি হাসান মিরাজ নেন ৪টি উইকেট। মোস্তাফিজুর রহমান ২টি এবং সাকিব, তাসকিন ও শুভাশীষ নেন একটি করে উইকেট।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই