২৫টি ব্যথানাশক ট্যাবলেট খেয়ে খেলা মুশফিককে ভোলা যায়?

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮, ০৪:২১ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়টিকে খুব সহজে আড়াল করা যাচ্ছে না। এই জয়ে যার সবচেয়ে বেশি অবদান সেই মুশফিকুর রহীম ২৫টি ব্যথানাশক ট্যাবলেট খেয়েছেন গত কয়েকদিনে। মুশফিকের বাঁ পাঁজরের ৯ নম্বর হাড়টা ভেঙে গেছে।  এটা এমন জায়গা যেখানে ইনজেকশনও দেওয়া যায় না। টেপ লাগিয়ে, ট্যাবলেট খেয়ে খেলতে হয়। দিনে ৬টির বেশি ব্যথানাশক ট্যাবলেট খেয়েছেন মুশফিক। তারওপর দুবাইয়ের তীব্র গরম তো ছিলই। কোনওকিছুই মুশফিকের সামনে বাঁধা হতে পারেনি।

উইকেটকিপিং করতে গিয়ে ১২ সেপ্টেম্বর চোট পেয়েছিলেন মুশফিক। কিন্তু চোট এমন জায়গায় যেখানে ইনজেকশন দেওয়া যায় না। আবার ব্যান্ডেজ করাও যায় না। মুশফিক নিজেকে খেলার মতো ফিট রেখেছেন ব্যথানাশক ট্যাবলেট খেয়ে। তিনি বলছেন ‘গত চার দিনে ২৫টির মতো ব্যথানাশক ট্যাবলেট খেয়েছি। এভাবেই খেলছি।’

অনেক সাধনার পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরি পান মুশফিক। সেটাকে নিয়ে গেছেন ১৪৪ অবধি। এটাই মুশফিকের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। তামিম যদি সাহসী হন তাহলে অবশ্যই মুশফিক যোদ্ধা। চোট নিয়েই তিনি দেশের জন্য লড়েছেন। মুশফিক বলছিলেন, ‘বাঁ পাঁজরের ৯ নম্বর হাড়টা ভেঙে গেছে। এখনো ওটা ভাঙাই আছে। এটা এমন একটা জায়গা যেখানে ইনজেকশনও দেওয়া যায় না। টেপ লাগিয়ে, ট্যাবলেট খেয়ে যতটুকু খেলা যায়। কাল (পরশু) তো পুরো ইনিংসেই সমস্যা হয়েছে। শট খেলতে গেলেই ওখানে লেগেছে।’

তামিমকে ভাঙা হাত নিয়ে ব্যাট হাতে নামতে দেখে সব ব্যথা ভুলে গিয়েছিলেন মুশফিক। তামিমের মাঠে নামার সেই সময়কার মুহূর্তের কথা মনে করিয়ে তিনি বলেন,‘ ওর কিন্তু এক জায়গায় ভাঙেনি। দুই-তিন জায়গায় ভেঙেছে। ওই অবস্থায় খেলতে নামাটা অনেক সাহসী সিদ্ধান্ত এবং তামিম নিজেই সিদ্ধান্তটা নিয়েছে। দেশের প্রতি, খেলার প্রতি তার যে প্রতিজ্ঞা আর নিবেদন, এটা তা-ই প্রমাণ করে। ওকে দেখে সে জন্যই অন্য রকম একটা তাড়না কাজ করেছে আমার মধ্যে। আর কিছু না হোক, তামিমের জন্য হলেও আমাকে ২৫-২৬টা রান করতে হবে যাতে আমরা লড়াই করতে পারি।’

দলের প্রতি সবার আত্মনিবেদন অনেক। কিন্তু একটু ক্ষোভ নিয়ে মুশফিক বলেন,‘তামিমের সিদ্ধান্ত সারা বিশ্বেই অনেক সম্মান পাবে। দলের প্রতি বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের যে নিবেদন, সেটা আসলে খুব কম মানুষই জানে। গ্রায়েম স্মিথ সিডনিতে ভাঙা হাত নিয়ে খেলতে নামলে বিরাট ব্যাপার হয়ে যায়, কিন্তু আমাদের তামিম নামলে কিছু হয় না। আফসোসটা এ জায়গাতেই। হয়তো আমরা বাংলাদেশ দলে খেলি বলেই আমাদের নিয়ে ওই রকম আলোচনা হয় না। তবে আমরা নিজেরা অন্তত জানি কে কী রকম। দলের মধ্যে আমরা সবাই সবাইকে সম্মান করি। এটাই আমাদের আনন্দ।’

সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই