নারীর সতীত্ব প্রমাণে আজও দিতে হয় ভয়ানক যে ‘বিশা’ পরীক্ষা!

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০১৯, ১২:৫২ পিএম

ঢাকা: রামায়ণে সতীত্ব প্রমাণ করার জন্য অগ্নিপরীক্ষা দিয়েছিলেন সীতা। সেই ত্রেতা যুগের অগ্নিপরীক্ষার ধারা বজায় রয়েছে এই বিশ্বায়নের যুগেও। তবে বর্তমানে অগ্নিপরীক্ষা হয় ইসলাম ধর্মের অনুশাসন অনুসারে। শরিয়া আইন মেনে। সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে পদ্ধতি। অসামাজিক কাজের বিচারের জন্য অভিযুক্তের এ পরীক্ষা নেয়া হয়।

খুব কঠিন এবং মারাত্মক এ পরীক্ষা। লোহার তৈরি হাতা, চামচ বা সমতুল কোনো পাত্র আগুনে গরম করা হয়। টকটকে লাল করে করা হয় গরম ওই ধাতব পাত্র। তারপর সেই গরম পাত্র তিন বার ছোঁয়ানো হয় অভিযুক্তের জিহবায়। যদি জিভ পুড়ে যায় তাহলে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। অর্থাৎ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য বলে ধরা হয়। আর না জিহবা না পুড়লে তাকে নির্দোষ ভাবা হয়।

একবিংশ শতকেও এই নিয়ম চালু রয়েছে মিসর এবং সংলগ্ন বেশ কিছু দেশে। এই বিচার প্রক্রিয়া ‘বিশা’ নামে পরিচিত। সাধারণত আরব বেদুইনদের মধ্যে এ বিচার প্রক্রিয়া বিশেষ জনপ্রিয়।

যেসব দেশে এই প্রক্রিয়ায় বিচার হয় সকল দেশে সংবিধান রয়েছে। সেই সংবিধানে সকল অভিযোগের বিচারের ব্যবস্থাও আছে। তবুও প্রাচীন বিশা পদ্ধতির উপরেই ভরসা রাখে অনেকে। কারণ পুলিশে অভিযোগ জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে সমস্যার নিষ্পত্তি হতে অনেক সময় লাগে। সেই কারণে চটজলদি সুরাহা পেতে বেদুইনদের ভরসা এ বিশা পদ্ধতি।

ইজিপ্টের এক বিশা বিচারক ওয়ামের আমের আয়েদ দীর্ঘদিন ধরে এই উপায়ে বিচার করে আসছেন। গত ১৪ পুরুষ ধরে এটাই তাদের পেশা। অনেকটা ভারতের ফাঁসুড়ে নাটা মল্লিকদের মতো। বর্তমান সমাজেও এই বিচার ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলছেন, ভুল কিছু নেই। শরিয়তে এটা বৈধ। বিচার পর্ব শুরু করার সময় কোরান পাঠ করা হয়। একই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সৎ একটি পরিষেবা। আমাদের দেশে ২৫০ থেকে ৩০০ বছর ধরে চলে আসছে।

সতীত্ব প্রমাণে দিতে হয় অগ্নিপরীক্ষাপ্রকৃত সত্যি জানার জন্য বিশা উপযুক্ত পদ্ধতি বলে দাবি করেছেন বিচারক ওয়ামের আমের আয়েদ-র সহকারী হামিদ আমের আয়েদ। তার কথায়, ইজিপ্টের মানুষ সত্যি জানার জন্য একটা উপযুক্ত এবং সঠিক উপায় অবলম্বন করেছে। সহজ উপায়ে প্রকৃত সত্য জানা যায় বলেই মানুষ পুলিশের কাছে না গিয়ে আমাদের কাছে আসেন।

একসময় বাঙালি হয়ে হতাশ হয়েছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। চরণতলে বিশাল মরু নিয়ে আরব বেদুইন হওয়ার দুরন্ত আশা করেছিলেন কবিগুরু। এই বিশা প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি হয়তো অবগত ছিলেন না। থাকলে হয়তো সেই আশা থেকে দূরে সরে আসতেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এসএস