ঘুরে দাঁড়িয়েছেন আলফা বেগম  

  • ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২১, ০৮:৫৯ পিএম

টাঙ্গাইল : তিন সন্তানের জননী আলফা বেগম স্বামী সন্তান নিয়ে এখন বেশ সুখেই আছেন। কিন্তু এই সুখের নাগাল পেতে অনেক কাঠ খড় পোড়াতে হয়েছে। দারিদ্রের শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে আসতে করতে হয়েছে অনেক সংগ্রাম।  কায়িক পরিশ্রম করতে মোটেও ভয় পান না আলফা বেগম। প্রতিদিন সূর্য ওঠার আগেই কোদাল হাতে নেমে পড়েন মাঠে। তাই সাফল্য যেন তার হাতের মুঠোয়। 

লেখাপড়া না জানলেও স্ব-শিক্ষায় শিক্ষিত এই নারী, কৃষিতেই যেন তার ধ্যান-জ্ঞান। ‘বারো মাসে তের খন্দ’ এ প্রবাদে বিশ্বাসী হয়ে গড়ে তুলেছেন কৃষি খামার। বছরের প্রতিটি কৃষি মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষে ব্যস্ত থাকেন এই নারী উদ্যোক্তা। চলতি বছরে এ মৌসুমে তিনি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের নিজ গ্রাম জিগাতলায় চার বিঘা জমি বর্গা নিয়ে ভুট্টা চাষ করেছিলেন। ফলনও হয়েছে বাম্পার। একশ মন ভুট্টা বিক্রি করে তিনি ৮৫ হাজার টাকা আয় করেছেন। এছাড়া এ বছরে তিনি অন্যান্য ফসলের মধ্যে তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন, দুই বিঘা জমিতে তিল ও এক বিঘা জমিতে ধৈঞ্চা চাষ করেছেন। 

আশা করছেন, ফলনও হবে ভালো। বাড়ির আঙিনায় দশ শতক জমিতে বিভিন্ন রকমের শাক সবজির আবাদ করেছেন। বাড়িতে পালন করছেন গবাদি পশুও। রয়েছে তিনটি গরু ও চারটি ছাগল। একটি গাভী থেকে দৈনিক পাঁচ কেজি দুধ আহরন করছেন। এতে করে পরিবারের যেমন পুষ্টি চাহিদা পূরণ হচ্ছে তেমনি বাড়তি  আয়ও হচ্ছে। চলতি বছরে তিনি আট বিঘা জমিতে তামাক চাষ করে পেয়েছেন সাফল্য। খরচ শেষে আয় করেছেন প্রায় এক লক্ষ টাকা। আয়ের টাকা দিয়ে প্রতি বছর ক্রয় করছেন জমি। এতে বাড়ছে খামারের পরিধি। এভাবেই তার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে আেফা বেগম।

সামাজিক সকল কর্মকাণ্ডেও  রয়েছে তার সমান পদচারনা। কেউ বিপদে পড়লে তার পাশে দাঁড়ান বীর দর্পে। এক সময় খুব কষ্ট করে সংসার চালাতে হতো। এখন আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় না।  কৃষি নিয়েই তার যতো ভাবনা।

প্রতিবেশি আবুল কালাম আজাদ জানান, আলফা খুব পরিশ্রমী একজন নারী। পরিশ্রম করে সে অনেক দূর এগিয়েছে। এলাকায় যথেষ্ট সুনাম রয়েছে তার।

আলফা বেগম বলেন, অনেক পরিশ্রম করে এ পর্যন্ত এসেছি। বর্তমানে স্বামী সন্তান নিয়ে বেশ ভালই আছি। বড় মেয়ে বিয়ে দিয়েছি, আরেক মেয়ে নবম শ্রেণিতে ও ছেলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে। পরিশ্রম করতে আমি মোটেও ভয় পাইনা । কৃষিই আমার সাফল্যে চাবিকাঠি। মাঠে ফসল দেখলে আমার  মন জুড়িয়ে যায়। ভবিষৎ কৃষিতে আরো সাফল্য পেতে চাই। তিনি আরো জানান, কৃষি অফিস থেকে এ পর্যন্ত কোন সহযোগিতা পাইনি। পাইনি কোন কৃষি কার্ডও। ফসলে কোন সমস্যা দেখা দিলে তিনি নিজেই সমাধান করার চেষ্টা করেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা  আল মামুন রাসেল  বলেন, কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য আমাদের অফিস থেকে সকল সময় কৃষি সেবা দিয়ে থাকি। আলফা বেগম যদি কোন সহযোগিতা না পেয়ে থাকে তাহলে আমরা যোগাযোগ করে তার জন্য সরকারি সুযোগ সুবিধার  ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই