আন্তর্জাতিক নারী দিবস

সমতা-সমঅধিকারের নিরন্তন লড়াইয়ে নারী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ৮, ২০১৭, ০১:২৪ এএম

ঢাকা: সামাজিক সমতা আর সমঅধিকারের নিরন্তন সংগ্রামে আজও হেঁটে চলেছে নারী। দু’হাতে অন্ধকার সরিয়ে আলোকের সন্ধানে ছুটে চলেছে তারা। রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় নিজেদের সম্পৃক্ত করে ক্ষমতায়নের সিঁড়ি বেয়ে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে নারী।

রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে শুরু করে ছোট্ট শান্তির নীড় তৈরিতে অবদান রেখে যাচ্ছে তারা। ঘর থেকে ঘরের বাইরের পৃথিবীতে তাদের অবাধ বিচরণ। এরপরে আজও নারীর সংগ্রাম চলছে সামাজিক সমতা আর সমঅধিকার নিশ্চিত করতে।

নারীর নিরন্তন সংগ্রামের ইতিহাসে প্রতিবছরই পেছনে ফিরে তাকায় তারা। ফেলে আসা পথের ভুল আর ভ্রান্তিগুলো শুধরে নিয়ে আবারো সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পাওয়া যায়।

বছর ঘুরে আবারো আজ সামনে এসেছে ৮ মার্চ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এবার নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘নারী-পুরুষ সমতায় উন্নয়নের যাত্রা/ বদলে যাবে বিশ্ব, কর্মে নতুন মাত্রা’। এ স্লোগানে সারাবিশ্বে পালিত হচ্ছে এ দিবস। প্রতি বছর ৮ মার্চ বিশ্বব্যাপী নারীরা একটি প্রধান উপলক্ষ্য হিসেবে এ দিবস উদযাপন করে থাকেন। এ দিবেসের আদি নাম ছিল আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারী দিবস।

বিশ্বের একেক প্রান্তে নারীদিবস উদযাপনের প্রধান লক্ষ্য হয় একেক প্রকার। কোথাও নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা উদযাপনের মুখ্য বিষয় হয়। আবার কোথাও নারীদের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠাটি বেশি গুরুত্ব পায়। আর এই দিবসটি উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মর্মস্পর্শি ইতিহাস।

নারীর নানারূপ

ইতিহাস
মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ১৮৫৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলে সরকারি বাহিনীর দমন-পীড়ন।

এরপর ১৯০৮ সালে নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। ক্লারা ছিলেন জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন।

এরপর ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বৎসর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয় ১৯১১ সালে থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা।

১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে থাকে। বাংলাদেশেও ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার লাভের আগে থেকেই দিবসটি পালন শুরু হয়। তবে ১৯৭৫ সালে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়া হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ।

এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হচ্ছে নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার ইচ্ছা নিয়ে। বাংলাদেশেও নানা রকম আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই সংগ্রামের অধ্যায় স্মরণ করা হয়।

সোনালীনিউজডটকম