স্বামীর বাড়িতে অনশনে স্ত্রী, উধাও পরিবার!

  • রাজশাহী ব্যুরো | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৮, ১১:০০ এএম
স্বামীর বাড়িতে অনশনে সুইমাইয়া

রাজশাহী: জেলার তানোরে স্ত্রীর অধিকার পেতে স্বামীর বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার পাচন্দর ইউপির কৃষ্ণপুর স্কুল পাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। এদিকে স্ত্রীকে আসতে বলে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন বাড়িতে তালা মেরে উধাও হয়ে পড়েছেন। এতে করে ঘটনাটি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোয়াশা।

জানা গেছে, ২০১৫ সাল থেকে বন্ধুর মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নবম সেমিস্টারে পড়ুয়া ছাত্রী সুমাইয়ার সাথে রাজশাহী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্স পরীক্ষার্থী জাহাঙ্গীর আলমের। প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে গত বছরের ৭ নভেম্বর কোর্ট এভিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে হয়। 

মেয়ে সুমাইয়ার বাড়ি নাটোর জেলার বড়াই গ্রাম উপজেলার কয়েন বাজার গ্রামে। সে ফুলবর আলীর মেয়ে। ছেলে জাহাঙ্গীরের বাড়ি উপজেলার পাচন্দর ইউপির কৃষ্ণপুর স্কুল পাড়া গ্রামে। সে আজাদের পুত্র। মেয়ে সুমাইয়া জানান, বিয়ের পর রাজশাহীর কাজলা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে আমরা একসাথে থেকেছি। গত সোমবারে স্বামী জাহাঙ্গীর ফোন করে তার বাড়িতে আসতে বলে।

তার কথামত আমি আসি। আসার পর জাহাঙ্গীরের ঘরে বসে পড়ে। এমন সময় তার পিতা মাতা ও কয়েকজন নারীরা এসে আমাকে বাড়ি থেকে মারধর করে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে আমাকে নিয়ে অন্যপাড়ায় রাখেন এবং বলে সকালে সব ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু বাড়িতে রেখে তারা অন্য জায়গায় চলে যায়। সকালে লোকজন কে জিজ্ঞেস করে পুনরায় স্বামী জাহাঙ্গীরের বাড়িতে আসি। এসে দেখি বাড়ির বাহিরের দরজায় তালামারা। তা দেখে স্বামী জাহাঙ্গীর কে মোবাইল করা হলে তিনি মোবাইল ধরছে না। যতক্ষণ না আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিবে ততক্ষণ এখান থেকে যাব না। কারণ বিয়ে একবার হয়।

আমরা পরিবারের সম্মতিতে ৪ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে কোর্ট এভিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে করি। সরেজমিনে দেখা যায়, ছেলে জাহাঙ্গীরের বাড়ির দরজার সামনে নিরবে বসে আছেন মেয়ে সুমাইয়া। প্রতিবেশিরা জানান, ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে থাকলে সমাধান হবে না। সমস্যা হয়েছে সমাধান করতে হবে। 

সুমাইয়া আরো জানান, মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টার দিকে মুণ্ডুমালা তদন্ত কেন্দ্রের নুরুল নামের এক পুলিশ এসে ধমক দিয়ে বলছে তোমাকে বাসে তুলে দিচ্ছি বাড়িতে চলে যাও।

আর তা নাহলে ১ লাখ টাকা দেন বেঁধে পুনরায় জাহাঙ্গীরকে বিয়ে করার জন্য হুমকি মুলক কথাবার্তা বলছেন। এদিকে, জাহাঙ্গীরের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলে ব্যস্ত পাওয়া যায়। তবে জাহাঙ্গীরের মামা আফজাল জানান, মেয়ের চরিত্র ভালো না। আমার ভাগ্নের চেহারা নায়কের মত এজন্য মেয়ে পাগল হয়ে পড়েছে। আমরা এমেয়েকে কখনো ভাগ্নের বউ হিসেবে গ্রহণ করব না। 

তার খালাতো ভাই আক্তার জানান, খবর এমন ভাবে প্রকাশ করবেন যাতে ছেলের পক্ষে আসে। মেয়ের বাড়ি নাটোরে সে যেন চলে যেতে বাধ্য হয় এবং আপনাদের সাথে সাক্ষাতে কথা বলছি। 

মুণ্ডুমালা তদন্ত কেন্দ্রের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ এএসআই কাউসারের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে রিসিভ করেননি তিনি। ওসি রেজাউল ইসলাম বলেন ঘটনা অজানা। খোঁজ নিয়ে দেখা যাক কি করা যায় বলে জানান তিনি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই