• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ২০, ২০২২, ১০:১৯ এএম
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

সংগৃহীত ছবি

সিলেট: ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেট জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রতিটি পয়েন্টই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।উজানের পানি নামতে থাকায় নতুন করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।বন্যা কবলিত ইউনিয়নের সংখ্যা বেড়ে হলো ৮৬টি।

জানা গেছে, জেলার পাঁচ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। আরও ২০০ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যা দুর্গতদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ কারণে জেলার অন্তত সাত শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। 

তবে জেলার অভ্যন্তর দিয়ে প্রবাহিত সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বৃহস্পতিবার (১৯ মে) কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। খানিকটা হ্রাস পেয়েছে সারি, লোভা ও ধলাই নদীর পানিও।

সিলেট মহানগরের বিভিন্ন এলাকার সড়ক এবং বসতবাড়ি আগের মত বন্যার পানিতে প্লাবিত রয়েছে।মহানগর এলাকার ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে অর্ধেকের বেশি এলাকা বন্যা কবলিত হয়েছে।

সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার আহসানুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, সিলেট জেলায় ১ হাজার ৪২১ হেক্টর আউশ ধানের বীজতলা এবং বোরো ফসলের ১৭০৪ হেক্টর এবং গ্রীষ্মকালীন সবজির ১ হাজার ৩৩৪ হেক্টর জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার পুকুর ও জলাশয় প্লাবিত হয়ে প্রচুর পরিমাণ মাছ ভেসে গেছে।

পানিবন্দি লোকজনের আশ্রয়ের জন্য সিলেট জেলায় ৩২৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বর্তমানে ৯৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৭ হাজার ৩৪৯ জন আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। ২৩৮টি গবাদিপশু আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন জানায়, আশ্রিতদের শুকনো খাবার সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য বন্যা উপদ্রুপ সিলেট মহানগর ও উপজেলাগুলোতে ১৩ লাখ টাকা, ২৩৪ মেট্টিকটন চাল, ৩ হাজার ৯৯ প্যাকেট শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়েছে।

বন্যা কবলিত এলাকা ও আশ্রয় কেন্দ্রে স্বাস্থ্য সেবা এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ওষুধ, খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা হচ্ছে।

বন্যায় সিলেট সদর ও জৈন্তাপুর উপজেলায় নৌকাডুবেতে ৩ জন এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলায় পাহাড় ধসে ১ জন মারা গেছেন। মৃতের পরিবারদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতাও করা হয়েছে।

বন্য পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ত্রাণ সামগ্রীর প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সচিবের সঙ্গে আলাপেরে পরিপ্রেক্ষিতে ২দিনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর হতে ত্রাণকার্য নগদ অর্থ ২৫ লাখ টাকা, ত্রাণকার্য চাল ২০০ মেট্রিক টন এবং ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানানো হয়। বরাদ্দকৃত ত্রাণ সামগ্রী বন্যা কবলিত উপজেলাগুলোতে উপ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার নগরের বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যায় নগর ভবনে কাউন্সিলরদের নিয়ে জরুরী সভায় বসেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বৈঠকে পানিবন্দি মানুষের তালিকা প্রণয়ন, খাদ্য ও শিশু খাদ্য সরবরাহ, স্বাস্থ্য সেবায় ৩টি মেডিক্যাল টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে এবং আশ্রয় কেন্দ্র প্রয়োজনে বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হয়।

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!