• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

টাকার অভাবে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না মেধাবী শুভ


তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি এপ্রিল ২৫, ২০২৩, ০৬:০৫ পিএম
টাকার অভাবে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না মেধাবী শুভ

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ): সিরাজগঞ্জের তাড়াশের মেধাবী শিক্ষার্থী শুভ সুত্রধর এসএসসি ও এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপি-৫ (গোন্ডেল) পান। 

আর এত ভালো ফলাফল করার পরেও শুভর জীবনে অশুভের ছায়া পড়তে শুরু করেছে এখন। কেননা বর্তমানে শুভ টাকার অভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন ও ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারচ্ছেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।  

শুভ সুত্রধর তাড়াশ উপজেলার বারুহাঁস ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া গ্রামের শংকর সুত্রধরের ছেলে।  

শুভ ২০২০ সালে তাড়াশ উপজেলার বস্তুল ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষাতে থেকে অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে থেকে জিপি-৫ (গোন্ডেল) পান তিনি। পরে ২০২২ সালে রাজশাহী শাহ্ মখদম কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষাতে বিজ্ঞান বিভাগে থেকে আবারও জিপি-৫ (গোন্ডেল) পান।

শুভর মা পার্বতী রানী জানান, তাঁদের কোন ফসলী জমি বা বাড়ির নিজস্ব জায়গা নেই। সরকারী খাস সম্পত্তি কবুলিত নিয়ে সেখানেই তাঁদের পরিবারটির পাঁচ সদস্য দুটি কুঁড়ে ঘরে কোন মতে বসবাস করেন। 

মূলতঃ  শুভর বাবা, শংকর সুত্রধর কাঠ মিস্ত্রির কাজ করে এবং তাঁর বড় ছেলে সমুন সুত্রধর সিরাজগঞ্জ ইসলামীয়া সরকারী কলেজে সম্মান শ্রেণিতে পড়ার পাশাপাশি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে খন্ডকালীন কাজ করে কিছু টাকা উপার্জন করেন। আর তা দিয়েই শুভদের পাঁচ সদস্যের সংসারটির ভরনপোষণসহ যাবতীয় খরচাদি হয়ে থাকে। 

অথচ অত্যন্ত দরিদ্র পিড়িত পরিবারটি থেকেই শুভ পড়া লেখা করে ধারাবাহিক ভাবে ভালো ফলাফল করে আসছেন। কিন্তু এত ভালো ফলাফল করার পরেও তাঁর ভবিষৎ এখন অন্ধকার। 

শুভর বাবা শংকর সুত্রধর কান্না জড়িত কণ্ঠে জানান, দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির সময়ে চাল, ডাল কিনে পরিবারের সদস্যের ভরন পোষণ করতেই সংসারে হিমশিম অবস্থা বিরাজ করছে। তাড়াছা বৃদ্ধা মাসহ আমাদের ঔষধও কিনতে হয়। অথচ যা রোজগার হয় তা দিয়ে মোটেও সংসার খরচ চলতে চায় না। কি করে শুভ কে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবো! তাই টাকার অভাবে আমার মেধাবী ছেলেটি শুভ সুত্রধর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন ও ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারচ্ছেন না। যা বাবা হিসেবে এই অক্ষমতা মেনে নেওয়াও কঠিন! তাই বাবা হয়ে আমার মেধাবী ছেলের উচ্চ শিক্ষার জন্য সমাজের বিত্তবান সহৃদয় মানুষের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি। 

অপর দিকে শুভ জানান, উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেলে আর্দশ শিক্ষক হিসেবে কর্ম জীবনে মানুষ গড়ার কাজটি নিষ্ঠার সাথে করতে চাই। 

অবশ্য, বস্তুল ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অশিনী কুমার ভৌমিক জানান, শুভদের পরিবারটি অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার। বর্তমানে তাঁকে পড়া লেখা করানোর জন্য যে খরচ তা বহন করার সক্ষমতা পরিবারটির নেই। তাই একটি মেধাবী শিক্ষার্থীর জীবন গঠনে শিক্ষক হিসেবে আমরা সমাজের বিত্তবান সহৃদয় মানুষের কাছে সেই সহযোগিতা কামনা করছি। 

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!