ঝালকাঠি: খননের ফলে নাব্য ফিরে পেয়েছে ঝালকাঠির ধানসিঁড়ি নদীটি। তবে দেবে যাচ্ছে নদীর পাশের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। যেই সড়কটি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়স ও নানা পেশার মানুষের চলাচলের অন্যতম মাধ্যম।
জানা গেছে, ঝালকাঠি শহর থেকে পিংড়ি হয়ে ধানসিঁড়ি নদীর দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। ঝালকাঠি সদর ও রাজাপুর উপজেলার সীমান্ত ধানসিঁড়ি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের মাধ্যমে দুই পাড়ের মানুষের যোগাযোগ সুগম হয়। এলাকাবাসীর সুবিধার্থে তৈরি করা হয় পাকা সড়কের। এতে করে অনেকটাই সহজ হয়ে উঠেছে রিকশা ও ভ্যানচালকদের জীবন। দুর্ভোগ কমেছে এলাকাবাসীরও।
তবে সম্প্রতি জনগুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি বিলীন হতে যাচ্ছে ধানসিঁড়ি নদীর গর্ভে। সড়কটি এখন মোটরচালিত যান চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগের উৎস হয়ে উঠেছে এ সড়ক। ভাঙন প্রতিরোধ করা না হলে রাস্তাটিও এক সময় বিলীন হয়ে যাবার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসীরা।
জাবেদ আল-হাসান নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, জেলা শহর থেকে সাচিলাপুর-কিস্তাকাঠি এলাকার সরল এ পথে ইট, বালি ও সিমেন্ট আনতে রাজি হয় না পিকআপভ্যান চালকরা। রাস্তা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভারী মালামাল নিয়ে যাতায়াতের সময় যদি দেবে গাড়ি উল্টে যায় তাহলে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। প্রতি ট্রিপে স্বাভাবিকের চেয়ে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা বাড়তি ভাড়া দিয়ে পণ্য আনতে হয়।
অটোরিকশাচালক হারেছ মিয়া বলেন, এই সড়কে গাড়ি চালানোর সময় ভয়ে থাকতে হয়। রাতে তো চালানোই যায় না। সোজা সড়কটি এমনভাবে নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে যা রাতে বুঝা দায়। দিনেও একটি গাড়ি অপর একটি গাড়িকে অতিক্রম করতে পারে না। যে কোনো সময় বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সাচিলাপুর গ্রামের বাসিন্দা রুবেল হোসেন বলেন, আমাদের এলাকায় রাস্তাটি নির্মাণ হওয়ার পর আমরা অনেক খুশি হয়েছিলাম। তবে ধানসিঁড়ি নদীটি এমনভাবে খনন করা হয়েছে যাতে এখন নতুন রাস্তাও ভেঙে যাচ্ছে। কৃষি নির্ভর এলাকায় এখন কোনো পাইকার ধান, সবজি, মাছ কিনতে আসেন না। শুধুমাত্র এই রাস্তার কারণে।
ওই এলাকার বাসিন্দা সাঈদ বলেন, ধানসিঁড়ি নদী খননের ফলে নাব্যতা ফিরে আসায় আমরা খুবই খুশি হয়েছিলাম। এখান আমাদের জমির উর্বরতা বাড়বে, ফসলের ফলন ভালো হবে। ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে ধানসিঁড়ি নদীর ঢেউ দেখতাম। নদীর ঢেউ রাস্তায় খেলে, এটা দেখার ভাগ্য সবার হয় না। সেই রাস্তা নদীর গর্ভে বিলীন হতে যাচ্ছে তা দেখে মারাত্মক আশাহত হয়েছি। রাস্তাটি রক্ষা করতে না পারলে এলাকার কয়েকশ মানুষ যাতায়াত ও কৃষি পণ্যসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় মালামাল সরবরাহে ভোগান্তিতে পড়বে।
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা বলেন, বিষয়টি আমাকে কেউ জানাননি। এখন জানতে পারলাম। দ্রুতই অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে সেখানে পাঠাবো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমএস







































