• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

ধনিয়া চাষে লাভের মুখ দেখছেন হোসেনপুরের কৃষকরা


হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪, ০৩:১০ পিএম
ধনিয়া চাষে লাভের মুখ দেখছেন হোসেনপুরের কৃষকরা

ছবি : প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জ: ধনিয়া অতিপরিচিত ও  নিত্য প্রয়োজনীয় মসলা। পুষ্টিকর মসলার মধ্যে ধনিয়া অন্যতম। ধনিয়া আমাদের তরকারী রান্নার অনুষঙ্গ। মসলা ফসল হিসেবে ধনিয়া উৎপাদন হয়। কিন্তু দিন দিন এর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় অধিক লাভজনক ফসল হিসেবে কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় ধনিয়া চাষে ঝুঁকে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে চরাঞ্চলে ধনিয়া চাষের জন্যে খুবই উপযোগী। ধনিয়ার কচিপাতা ও ফুল চরের অলংকার। এই মসলা ফুলের গন্ধ মাতোয়ারা করেছে চরের কৃষক, কৃষাণী ও ভ্রমণ পিপাসুদের। মসলা ফুল ও কচি পাতার ঘ্রাণে মুহিত করেছে প্রকৃতিকে।

ধনিয়া মূলত শীতকালীন রবি ফসল। কিন্তু রবি ফসল হলেও বর্তমানে শীতকাল ও গ্রীষ্মকালে ও আবাদ হয়ে থাকে। বারোমাসই ধনিয়া চাষ করা যায়।

হোসেনপুরে চরের কৃষকগণ ব্যাপকভাবে ধনিয়া চাষ করে থাকেন। এ বছরও বরি শস্য হিসেবে ব্যাপকভাবে এর আবাদ হয়েছে । ধনিয়া লাভজনক ফসল হওয়ায় চাষাবাদ করে থাকেন স্থানীয় চাষীরা।

সরেজমিনে উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের চরকাটি হারী গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন মুক্তার মৃধা সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, এ বছর ১৫শতক জমিতে ধনিয়া পাতা চাষ করি। ২হাজার টাকা খরচ করি। ইতোমধ্যে ধনিয়ার কচিপাতা বাজারে  ১০হাজার টাকা বিক্রি করি। আশা করছি, ধনিয়া মাড়াই করে ৩০হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো।

মুক্তা মৃধার মতো উপজেলার জগদল গ্রামের কৃষক খোকন মিয়া, আ: সাত্তার, মালেক সাহেবের চর গ্রামের কৃষক মুকুল সহ অনেকেই জানান, ধনিয়াএকটি লাভজনক ফসল। অন্যান্য ফসলের সাথে উৎপাদন করা যায়। তাই এটা উৎপাদনে তেমন খরচ হয় না।

ধনিয়ার কচিপাতার চাহিদাও প্রচুর। ধনিয়ার কচিপাতা সালাদ হিসেবে খাওয়া যায়। আবার তরকারিতে সুগন্ধি মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

ধনিয়ায় রয়েছে ব্যাপক পুষ্টিগুণ। শরীরের ত্বক সুস্থ ও সতেজ, নির্মল অবস্থায় রাখতে ধনে পাতার উপকারীতা অনেক। ধনেপাতা রক্ত প্রবাহ থেকে ক্ষতিকর উপাদান গুলো দূর করে শরীরকে সুস্থ ও সতেজ নির্মল রাখতে সাহায্য করে। ধনে পাতায় রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও উপকারী খনিজ। এতে রয়েছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, লোহা ও ম্যাগনেশিয়াম।

যুগ যুগ ধরে মানুষ ধনে পাতার সুফল ভোগ করে আসছে। বাঙালির নানা ধরনের তরকারির স্বাদ ও ঘ্রাণ বাড়াতে ধনিয়ার কচিপাতার ও গুড়ো মসলার ব্যবহার হয়ে থাকে। ধনেপাতার ভর্তা খুবই সুস্বাদু। যে কোন ভর্তায়ও এর ব্যবহার করা যায়।

চরের সৌন্দর্যকে আরো বেশি সৌন্দর্যমন্ডিত ও সুশোভিত করেছে ধনে পাতার কচি পাতাও ফুলা। চরের অলংকার ধনে ফুল। এ বছর বেশি বৃষ্টি হয়নি। পোকার আক্রমণ ও কম। তাই ধনিয়ার ভালো ফলন হবে বলে বেশ আশাবাদী চাষিরা।

কৃষি উপসহকারী মুদাসিল হায়দার আলমগীর জানান, মসলা জাতীয় ধনিয়া অত্যন্ত উপকারী একটি ফসল। বর্তমানে ধনিয়া পাতা লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা আগ্রহ বাড়াচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এস এম শাহজাহান কবির জানান, উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে মসলা জাতীয় ধনিয়া চাষ হয়েছে। ধনিয়া সাথী ফসল হিসাবে লাভজনক ফসল। ধনিয়া উৎপাদনে চাষীদের মধ্যে দিনদিন আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও জানান তিনি।

এএ/এসআই
 

Wordbridge School
Link copied!