• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

মরিচা ধরা ছুরি ও বাটাল দিয়ে লাশের ময়নাতদন্ত


বিল্লাল হোসেন, যশোর মার্চ ১০, ২০২৪, ১১:৫৪ এএম
মরিচা ধরা ছুরি ও বাটাল দিয়ে লাশের ময়নাতদন্ত

ছবি : প্রতিনিধি

যশোর: হাতুড়ি পেটানোর শব্দ কানে ভেসে আসছে। দরজার কাছে যেতে আওয়াজ আরও জোরে শোনা যায়। শব্দটা এমন যেন হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে লাশের মাথা ভাঙা হচ্ছে। খোঁজ নেওয়ার পর মিলল সত্যতা। দেশসেরা হাসপাতাল হলেও মর্গে আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই। মরিচা ধরা ছেনি দিয়ে মাথার খুলি খোলা হয়। আর লাশ কাটা হয় ছুরি ও বাটাল দিয়ে। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির জন্য বারংবার চাহিদাপত্র পাঠানো হলেও মন্ত্রনালয় থেকে বরাদ্দ মেলেনা। তাই মান্ধাতার আমলের যন্ত্রপাতি দিয়ে চালানো হচ্ছে লাশের ময়নাতদন্ত কার্যক্রম। বলছিলাম দেশসেরা যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গের কথা। আধুনিক যুগেও যেখানে লাগেনি কোন উন্নয়নের ছোঁয়া। সচেতন মহলের দাবি, ময়নাতদন্তের নামে মরদেহের ওপর চালানো হচ্ছে এক ধরনের নির্যাতন।

মর্গে দায়িত্বরতরা জানান, পত্রিকায় খবর প্রকাশ হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে প্রতি বছর দুই বার করে পাঠানো হয় চাহিদা পত্র। কিন্তু অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি বরাদ্দ দেয়া হয়না। তাই কষ্ট হলেও পুরাতন অস্ত্র দিয়ে লাশের ময়নাতদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত বছরের ১৪ জুলাই ১৪ প্রকারের ১৪৯ টি যন্ত্রপাতি চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে গ্রাউন্ডার মেশিন ৩ টি, ছেনি ৪টি, ১২ ইঞ্চি চাকু ৪টি, ৮ ইঞ্চি চাকু ৪টি, শীল ৪টি, প্লাস ৬টি, ১২ ইঞ্চি হেসকো করাত মেশিনসহ ৮টি, ১২ ইঞ্চি হেসকো করাতের ব্লেড ৬০টি, বিপি ব্লেড ঢুকানোর জন্য চাকু ১২ টি, বিপি ব্লেড ১২ টি, স্টিল গামলা ৬টি, স্টিল বালতি ৬টি, ৫শ গ্রাম ওজনের হাতুড়ি ৬টি ও ২ টনের এসি ২ টি। কিন্তু বরাদ্দে এখনো কোন সাড়া মেলেনি।

ময়নাতদন্তকারী একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, যশোর জেলার সকল উপজেলায় হত্যা বা রহস্যজনক মৃত্যুর শিকার হলেই ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পাঠানো হয় এই মর্গে। অথচ মর্গের বেহাল অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়না। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হলেই বলেন চাহিদাপত্র দেন। কিন্তু বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয়না। বর্তমানে কোন ধরণের আধুনিক সুযোগ সুবিধা এখানে নেই। অনেক পুরাতন যন্ত্রপাতি দিয়ে লাশের ময়নাতদন্তের কাজ করা হচ্ছে। পুরাতন যন্ত্রপাতি দিয়ে ময়নাতদন্তের কাজে গিয়ে চিকিৎসকরা বিব্রত হন।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, ইলেকট্রিক্যাল করাত, এক্সবালিনসহ উন্নতমানের যন্ত্রপাতি চেয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে বারংবার করে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়। তারপরেও বরাদ্দ মেলেনা। বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক।

বি/এসআই

Wordbridge School
Link copied!