• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

১৪ বছর চাকরির পর শিক্ষকের নিবন্ধন সনদ জাল প্রমাণিত!


বিল্লাল হোসেন, যশোর  মার্চ ২৯, ২০২৪, ১১:৩৩ এএম
১৪ বছর চাকরির পর শিক্ষকের নিবন্ধন সনদ জাল প্রমাণিত!

যশোর: যশোরের মণিরামপুরের বাহিরঘোরিয়া-গোপালপুর আলিম মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক হাদিউজ্জমানের চাকরির ১৪ বছর পর তার নিবন্ধন সনদটি জাল প্রমাণিত হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) সম্প্রতি ওই সনদটি যাচাই বাছাই শেষে জাল প্রমাণিত হওয়ায় প্রভাষক হাদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন। 

ফলে মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মালেক বাদি হয়ে মণিরামপুর থানায় বুধবার রাতে মামলা করেন। তবে রহস্যজনক কারণে এখনও চাকরি থেকে হাদিউজ্জামানকে বহিষ্কার করা হয়নি। বিষয়টি বৃহস্পতিবার জানাজানি হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জাল সনদধারী হাদিউজ্জামানকে চাকরি থেকে বহিষ্কারসহ গ্রেফতারের দাবি করেছেন এলাকাবাসী।

জানা যায়, উপজেলার বাহিরঘরিয়া-গোপালপুর আলিম মাদরাসায় হাদিউজ্জামানকে ২০১০ সালের ১৫ জুন ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ দেয়া হয়। এর পর পরই তিনি এমপিওভূক্ত (ইনডেক্স নম্বর-ঘ২০৯৬৫৬২ ) হন। সেই থেকে ইংরেজি প্রভাষক হিসেবে হাদিউজ্জামান চাকরি করে আসছেন। এ পর্যন্ত তিনি বেতনভাতা বাবদ সরকারের অর্ধকোটি টাকা উত্তোলন করেন। চাকরির প্রথম থেকেই অভিযোগ ওঠে হাদিউজ্জামানের নিবন্ধন সনদ নিয়ে। অভিযোগ রয়েছে হাদিউজ্জামানের দাখিলকৃত ইংরেজি বিষয়ের নিবন্ধন সনদটি জাল। কিন্তু যিনি সভাপতি হন তাকে ম্যানেজ করে হাদিউজ্জামান চাকরি করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

বর্তমান গভর্নিং বডির সভাপতি ডা. আতিউর রহমান জাল নিবন্ধন সনদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে গত বছর ৮ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেনের বরাবর লিখিত আবেদন করেন। ফলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকারকে নির্দেশনা দেয়া হয়। বিকাশ চন্দ্র সরকার ওই নিবন্ধন সনদটি যাচাই বাছাইয়ের জন্য গত বছর ১৫ নভেম্বর এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন। যাচাই বাছাই শেষে এনটিআরসিএ থেকে হাদিউজ্জামানের সনদটি ভুয়া ও জাল উল্লেখ করে সহকারী পরিচালক (পরীক্ষা মূল্যায়ন ও প্রত্যয়ন-৩) তাজুল ইসলাম গত ১৮ জানুয়ারি প্রত্যয়নপত্র দেন। 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হাদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে থানায় মামলার নির্দেশনাও দেয়া হয়। যার একটি অনুলিপি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পাঠানো হয়। ফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেনের নির্দেশনায় মাদরাসার অধ্যক্ষ আবদুল মালেক বাদী হয়ে গত বুধবার রাতে প্রভাষক হাদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। তবে হাদিউজ্জামান জানান, মামলার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেনা। এদিকে এখনও হাদিউজ্জামানকে চাকরি থেকে বহিষ্কার না করায় এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। শিক্ষক প্রতিনিধি আরবি প্রভাষক তাজাম্মুল হক জানান, মানবিক কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়নি। গভর্নিং বডির সভাপতি ডা. আতিউর রহমান জানান, হাদিউজ্জামান কমিটির অধিকাংশ সদস্যকে ম্যানেজ করে ফেলায় বহিষ্কার করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

অধ্যক্ষ আবদুল মালেক বলেন, বহিষ্কারের জন্য পর কয়েকটি সভা আহ্বান করা হলেও অধিকাংশ সদস্যরা উপস্থিত হননি। মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী মাসুদ মামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যেকোন মুহূর্তে হাদিউজ্জামানকে গ্রেফতার করা হবে।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!