• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

গাজীপুরে আঙুর চাষে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা উন্মোচন 


গাজীপুর প্রতিনিধি এপ্রিল ৩০, ২০২৪, ১১:৫২ এএম
গাজীপুরে আঙুর চাষে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা উন্মোচন 

গাজীপুর: বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জে ও শহর-নগরের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় ভিনদেশী সুস্বাদু একটি ফল আঙুর। তবে এই ভিনদেশী আঙুর চাষের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা উন্মোচন করে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনার ঝড় তুলছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর পশ্চিম পাড়া গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা মোহাম্মদ সবুজ। 

জানা গেছে, কৃষি উদ্যােক্তা সবুজ একটা সময়ে বিভিন্ন পেশায় কাজ করত। মাঝে মধ্যে তিনি ইউটিউবে বিভিন্ন কন্টেন্ট দেখতেন। হঠাৎ এক দিন দেখেন আঙুর চাষ করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অনেকেই সফলতা অর্জন করেছে। সেই থেকে তার মনে আঙুর চাষের আগ্রহের দানাবাঁধে। 

এর মধ্যে আবার একদিন দেখেন শুধু বিদেশের মাটিতেই নয়। দেশের ঝিনাইদহের মহেশপুরের জগিহুদা গ্রামের আব্দুর রশিদ আঙুর চাষাবাদে সফলতা অর্জন করেছে। এরপর থেকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন বাণিজ্যিকভাবে তিনিও আঙুর চাষ শুরু করবেন। 

পরবর্তীতে তরুণ উদীয়মান এই কৃষি উদ্যােগক্তা ঝিনাইদহের মহেশপুরের জগিহুদা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ এর কাছ থেকে প্রতি পিস ৫৫০ টাকায় ভারতীয় সুপার সনিকা জাতের ২৫টি চারা ক্রয় করে নিয়ে আসেন।

পরে বাড়ির পাশেই ২০ শতাংশ জমিতে ৮ ফুট দূরত্বে লাগান ওই ২৫টি চারা গাছ। আঙুর গাছের এ চারা গুলো লাগানোর আগে তিনি জমি প্রস্তুত করেন যেখানে জমিতে গর্ত তৈরি করা হয়। 

এসব প্রতিটি গর্তে পাঁচ কেজি বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করেন তিনি। ৩ ফুট গর্ত করে ইটের গুঁড়া, মোটা বালু ও জৈব সার মাটির সঙ্গে মিশ্রণ করে দিয়েছেন। 

এছাড়াও প্রতিটি গাছের গোড়া মাটি দিয়ে উঁচু করেছেন। যাতে পানি না জমে এবং আঙুর গাছ যাতে দ্রুত লম্বা হতে পারে তার জন্য উঁচু করে সিমেন্টের খুঁটি এবং বাঁশ দিয়ে মাচা তৈরি করেছেন। ফলে ঝড়-বৃষ্টি এলে গাছ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা কম থাকছেনা। 

সবুজের এমন সাহসী ও সময় উপযোগী এমন পরিকল্পনা দেখে এখন এলাকার তরুণদের মাঝে এক নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে এক সময়ে যারা আঙুর চাষের কথা শোনে সুবজকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কটু কথা বলতেন। আজ তারাও সবুজের প্রসংশায় পঞ্চমুখ। শ্রীপুরের মাওনা এলাকা থেকে আঙুর ফলের বাগান দেখতে এসেছেন সাজ্জাদ হোসেন। 

তিনি বলেন, গাজীপুরের মাটিতে আঙুর চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। এটা কখনো কেউ কল্পনাও করেনি। আমি সবুজ ভাইয়ের সফলতার কথা শোনে এখানে এসেছি। আমরাও পরিকল্পনা রয়েছে একটা বাগান গড়ে তোলার। 

শ্রীপুরে আঙুর চাষের প্রথম কৃষি উদ্যােগক্তা মো.সবুজ বলেন, ২০২৩ সালে প্রথমবার ঝিনাইদহের মহেশপুরের জগিহুদা গ্রামের আব্দুর রশিদ নিকট থেকে প্রতি পিস ৫৫০ টাকায় ভারতীয় সুপার সনিকা জাতের ২৫টি চারা ক্রয় করে নিয়ে এসে শুরু করেন আঙুর চাষ। 

চারা গাছ লাগানোর প্রথম দিকে তেমন কোনো সফলতার মুখ না দেখলেও তবুও হাল ছাড়েননি। পরে ১১ মাসের মাথায় গাছ গুলোয় স্বপ্নের আঙুর ধরেছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিটা গাছে যে পরিমাণ ফল হয়েছে এতে করে প্রতি গাছে ৩ থেকে ৪ শত কেজি ফল পাওয়ার আশা করছেন তিনি। শুধু তাই নয় এ ভাবে টানা ৩০ বছর একাধারে ফল পাবেন আশাবাদী তিনি। 

শ্রীপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বলেন, শ্রীপুরের যে কোনো তরুণ কৃষি উদ্যােক্তাকে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। 

তিনি আরও বলেন, সবুজ গত বছর ২৫টি চারা দিয়ে আঙুর চাষ শুরু করেন। আমাদের কৃষি অফিসের সহযোগিতায় সার ব্যবস্থাপনা, পানি ব্যবস্থাপনা এবং বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আরও বৃহদাকারে শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আমরা সব সময় কৃষি অফিস থেকে তার খোঁজ খবর নিচ্ছি। 

এআর

Wordbridge School
Link copied!