• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ভারতের পাহাড়ি ঢলে শেরপুরে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত


জেলা প্রতিনিধি অক্টোবর ৫, ২০২৪, ১১:৫১ এএম
ভারতের পাহাড়ি ঢলে শেরপুরে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

শেরপুর: ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা প্রবল পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের তিন উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ঢলের পানি ভাটির দিকে নামতে থাকায় নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার নিম্নাঞ্চলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নতুন করে ঢলের পানি ঢুকেছে নকলা উপজেলার নিম্নাঞ্চলেও। ওই চার উপজেলার ২০ ইউনিয়নের অন্তত ১২২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। 

এদিকে বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করায় নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে যাওয়ার সময় নালিতাবাড়ীতে নারীসহ তিনজনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা কালের কণ্ঠকে মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।

শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

ওই দুই উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ১৭টি ইউনিয়নের সবগুলোই পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে। ঢলের তোড়ে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে। ডুবে গেছে ধান ও সবজির আবাদ। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, গাছপালা, হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ গৃহপালিত প্রাণী।

এতে দারুণ ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। ঢলের পানিতে রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন অনেক এলাকার মানুষ। বিভিন্ন এলাকায় পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে দমকল বিভাগ ও স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে পানিবন্দিদের উদ্ধারে নেমেছে সেনাবাহিনী। বিভিন্ন এলাকা থেকে ঝুঁকিতে থাকা হাজারের বেশি পরিবারকে উঁচু ও নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছেন উদ্ধারকারীরা।

ঝিনাইগাতী উপজেলার দীঘিরপাড় গ্রামে শুক্রবার মধ্যরাতে তিন মাসের এক শিশুকে ঘরের সিলিং থেকে রেসকিউ করেছে র‌্যাপিড রেসপন্স বিডি নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধারকারীদল। ঘরের ভেতরে বুক সমান পানি ওঠায় শিশুটিকে নিরাপদে রাখার জন্য পরিবারের সদস্যরা ঘরের সিলিংয়ের ওপর রেখেছিল। সেখান থেকে ওই শিশুসহ পুরো পরিবারকে উদ্ধার করেছে ময়মনসিংহ থেকে আসা ওই উদ্ধারকারীদল।  

এদিকে ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার সব স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম এবং ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ সমন্বয়ের জন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার জন্য পৃথক টিম গঠন করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাকবলিতদের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা জানিয়েছেন, নালিতাবাড়ী পৌরসভা, কাকরকান্দি, বাঘবেড়সহ প্রায় সব ইউনিয়ন পাহাড়ি ঢলে আক্রান্ত। এসব জায়গার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য একটি স্পিডবোট, লাইফ জ্যাকেটসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদ্ধারকাজ চলমান রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাকিবুজ্জামান খান জানিয়েছেন, আজ শনিবার সকালেও নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই ও চেল্লাখালী নদী দুটি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নালিতাবাড়ীর ভোগাই, চেল্লাখালী ও ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর বেশ কয়েকটি স্থানে পাহাড়ি ঢলে দুই পাড় ও তীর রক্ষার বাঁধ ভেঙে গেছে। সেখানে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন ঠোকানোর চেষ্টা চলছে।

এম

Wordbridge School
Link copied!