সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বিএনপি’র সাবেক নেতা জাহাঙ্গীর আলম ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে জমি দখল ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় উপজেলা জাসাসের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাজান আলী মোড়লকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।
গত ১২ই এপ্রিল রাত ৯টার দিকে এশার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে বিষ্ণুপুর জামে মসজিদের কাছে শাহাজান আলী মোড়ল ও তার ভাই এন্তাজ আলী মোড়লের ওপর হামলা চালানো হয়।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে- ফিরোজ হোসেন, আশরাফুল ইসলাম, মোস্তফা, নূর ইসলাম মিলন, সফি উদ্দীনসহ আরও কয়েকজন, যারা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীরের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
আহত শাহাজান আলী বর্তমানে কালিগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। তার মাথায় দুই স্থানে গভীর জখমের কারণে সেলাই করতে হয়েছে। আহতের স্ত্রী তাসলিমা খানম এ ঘটনায় কালিগঞ্জ থানায় মো. ফিরোজ হোসেন, মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. আলতাব হোসেন, মো. ছফিরউদ্দিন, মাহমুদ মোস্তফা, নুর ইসলাম মিলনসহ ৩/৪ জনকে অজ্ঞাতনামা করে লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
অভিযোগে আরও জানা যায়, চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ও তার বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নে জমি দখল, চাঁদাবাজি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছে। জাহাঙ্গীর আলম ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে খাস জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও সরকারি গাছ বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অপরাধের অভিযোগ উঠেছে।
সন্ত্রাসী হামলায় আক্রান্ত শাহজাহান আলী মোড়ল বলেন, চাঁদাবাজি, ঘের দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় আমার ও আমার ভাইয়ের ওপর নির্মমভাবে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। যারা হামলা চালিয়েছে তারা সবাই জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যানের সঙ্গে থাকে এবং উনার পেটুয়া বাহিনী।
আমি এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঠিক বিচার চাই। অভিযুক্ত চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা, বানোয়াট। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা গ্রুপিং করে আমার জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতা ধ্বংস করার জন্য এই চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, ২ দিন আগে বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়।
অনতিবিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। ঘটনার প্রতিবাদে ১৪ই এপ্রিল সকালে বিষ্ণুপুর গ্রামের নারী সমাজ ঝাড়ু মিছিল করে। তারা অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এআর