• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

হাসপাতালগুলোতে এন্টিভেনম নেই

সাপের কামড়ে দুই সপ্তাহে ৫ জনের মৃত্যু 


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি আগস্ট ১০, ২০২৫, ০৪:২১ পিএম
সাপের কামড়ে দুই সপ্তাহে ৫ জনের মৃত্যু 

ছবি : সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁও: ছেলেকে সাপে কামড়ানোর পর দুই জেলার চার হাসপাতালে নিয়েও বাঁচাতে পারেননি এক বাবা। হাসপাতাগুলোতে এন্টিভেনম না থাকায় ছেলেকে বাচানোর চেষ্টায় ব্যর্থ বাবার যেন দু:খের শেষ নেই। 

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্ত এলাকা বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের ইসরাইল উদ্দীন। তার ছোট ছেলে ৫ম শ্রেণির ছাত্র সাকিবুল ইসলামকে শুক্রবার রাতে কামড় দেয় বিষধর সাপ। চিকিৎসার জন্য চার হাসপাতালে গিয়েও পাননি সাপেড় বিষমুক্ত করার ভ্যাকসিন। পরে দিনাজপুর মেডিকেলে নেওয়ার পথে রাস্তায় মারা যায় তার ছেলে। 

শনিবার বিকালে তার ছেলেকে জানাযা শেষে দাফন করা হয়েছে। ছেলের মুত্যুর শোকে অসুস্থ মা। দুইদিন ধরে চিকিৎসা চলছে তার। শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো গ্রামে। 

ইসরাইল উদ্দীন জানান, চারটা হাসপাতালে নিয়ে গেছি। বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতাল থেকে হরিপুর, এরপরে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল। সেখানেও ভ্যাকসিন না পেয়ে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ হাসপাতাল নিয়ে গেলাম রাত তখন ১০টা বাজে। সেখানেও ভ্যাকসিন নেই, দিনাজপুর মেডিকেলে নেওয়ার পথে আমার ছেলে কোলে মারা গেছে। বাবা হয়ে ছেলেকে বাঁচাতে পারিনি। আর যেন কোন বাবার বুক খালি না হয়, সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্কুলছাত্র সাকিবুলের মত ঠাকুরগাঁও জেলায় গত দুই সপ্তাহে পীরগঞ্জের ৭ম শ্রেণির স্কুলছাত্র তারেক, রাণীশংকৈলের কলেজছাত্র মোকসেদ আলী, হরিপুরে গৃহবধু সম্পা রানীসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বিষধর সাপের কামড়ে। 

মারা যাওয়ার মানুষদের স্বজনরা বলছেন, জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোতে সাপেড় বিষমুক্ত করার ভ্যাকসিন এন্টিভেনম না থাকায় মরতে হচ্ছে এসব রোগীদের। 

সম্পা রাণীর স্বামী জিতেন জানান, সকালে সাপে কামড়ানোর পর হরিপুর, রাণীশংকৈল এবং সবশেষ ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে নিয়ে গেছি। কিন্তু ভ্যাকসিন পায়নি। নিরুপায় হয়ে ওঝার কাছে নিয়ে গেছি। সবশেষ স্ত্রীকে বাচাতে পারিনি। দেড় বছরের একটা ছোট বাচ্চাকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। 

স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসক আজমুল হক জানান, বর্ষার সময়ে প্রতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ১০-১৫ জন সাপে কামড়ে মারা যাওয়ার হাসপাতালগুলো ভ্যাকসিনের চাহিদা পাঠায়। এরপরে যখন ভ্যাকসিন হাসপাতালে এসে পৌছায়, তখন বর্ষা শেষ। স্বাস্থ্য বিভাগের উচিত ইউনিয়ন-উপজেলা ও জেলা শহরের হাসপাতালগুলোতে বর্ষার আগেই ভ্যাকসিন মজুদ রাখার। বলাতো যায় না কখন কি হয়। 

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন  ডা: মো: আনিছুর রহমান বলেন, চাহিদা পাঠানোর পরও এন্টিভেনম দেয়নি। পরে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারেও এন্টিভেনম সংকট। আমরা চেষ্টা করছি নিয়ে আসার। 

সাপের কামড়ে মৃত্যুর এই ধারাবাহিক ঘটনায় আতঙ্কিত জেলার গ্রামাঞ্চলের মানুষ। চিকিৎসক ও সচেতন মহলের দাবি, এন্টিভেনমের সংকট নিরসনে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে একটি প্রাণও এমনভাবে ঝরে না যায়।

এসআই

Wordbridge School
Link copied!