• ঢাকা
  • শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

উপাচার্যের আশ্বাস, ৫ লাখ টাকা পেল হিমেলের পরিবার


রাবি প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ২, ২০২২, ০১:৩৭ পিএম
উপাচার্যের আশ্বাস, ৫ লাখ টাকা পেল হিমেলের পরিবার

ছবি : সংগৃহীত

রাবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহবুব হাবিব হিমেলের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। একই সঙ্গে বুধবারের মধ্যে হিমেলের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। তার এ আশ্বাসের পর ক্যাম্পাসে প্রথম জানাজার নামাজ শেষে হিমেলের মরদেহ শেরপুরের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মাঠে ওই ছাত্রের প্রথম জানাজার নামাজ সম্পন্ন হয়।

উপাচার্য জানিয়েছেন, এরইমধ্যে হিমেলের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা হস্তান্তর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভুক্তভোগী পরিবারটিকে ধাপে ধাপে আরও সহযোগিতা করা হবে। হিমেলের মায়ের আজীবন চিকিৎসা খরচ বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবে। এছাড়া আহত দুই ছাত্রের চিকিৎসার সব খরচও বিশ্ববিদ্যালয় দেবে।

এর আগে শিক্ষার্থীদের মৌখিক আশ্বাস দিয়ে উপাচার্য বলেন, বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ যে কতটা ভারি তা আমি বুঝি। আজকে আমার লাশ হিমেলের কাঁধে থাকার কথা ছিলো। সবসময় তার পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করবো। এরইমধ্যে নিহত হিমেলের মায়ের ব্যাংক হিসাবে পাঁচ লাখ টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স কমিটির সঙ্গে বসে যা যা করা দরকার করবো। ট্রাক মালিক ও ঠিকাদারের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ আদায় করবো। ট্রাকচালক ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, অধ্যাপক মো. সুলতান উল-ইসলাম ও নিহত হিমেলের মামা মো. মুন্না।

জানাজা শেষে নিহত হিমেলের মরদেহ শেরপুরে তার বাবার কবরের পাশে তাকে দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের সামনে নির্মাণাধীন বিজ্ঞান ভবনের পাশে ট্রাকচাপায় নিহত হন শিক্ষার্থী মাহবুব হাবিব হিমেল। এ ঘটনায় রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি ট্রাকে আগুন দেন হিমেলের বিক্ষুদ্ধ সহপাঠীরা। একইসঙ্গে এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি তুলে আন্দোলনে নামে তারা। রাতভর অবরোধ করে রাখে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক।

শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ কোটি টাকা দিতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে; প্রক্টর ও প্রক্টরিয়াল বডি অপসারণ; ট্রাকের চালকসহ জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করা; ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ বন্ধ করা এবং ক্যাম্পাসের রাস্তা-ঘাট মেরামত ও পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা।

রাতে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ক্যাম্পাসে হিমেলের জানাজার আগেই ক্ষতিপূরণ হিসেবে তার পরিবারকে ১০ কোটি টাকার চেক দিতে হবে। অন্যথায় ক্যাম্পাস থেকে মরদেহ নিয়ে বের হতে দেওয়া হবে না।

রাত ২টার দিকে উপাচার্য বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সামনে প্রক্টর ড. লিয়াকত আলীকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন উপাচার্য। ওইসময় সেখানে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার রাতে ক্যাম্পাসের ভেতরে একটি মোটরসাইকেলকে চাপা দেয় পাথরবাহী একটি ট্রাক। এতে ঘটনাস্থলেই চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হিমেল নিহত হন। মোটরসাইকেলে থাকা অন্য দুজন গুরুতর আহত হন।

পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলেও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে রাতেই ক্যাম্পাস থেকে পুলিশ সরিয়ে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!