• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

এবার আন্দোলনে নামছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১৬, ২০২৫, ১০:১০ পিএম
এবার আন্দোলনে নামছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা

ঢাকা: দাবি আদায়ের পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শেষ হতে না হতে এবার আন্দোলনে নামছে ঢাকার সরকারি সাত কলেজ। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের অধ্যাদেশ জারি ও অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের কার্যক্রম ঝুলে থাকার কথা জানিয়ে 
তারা ফের আন্দোলনে নামার ইঙ্গিত দিয়েছে।

তারা বলছেন, অধিভুক্তি থেকে মুক্তির পর তাদের ভর্তি কার্যক্রম থেমে গেছে। শিক্ষার্থীরা সেশনজটের মুখে পড়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরের ঘোষণার দুই মাসেও অধ্যাদেশ জারি হয়নি। গঠন করা হয়নি অন্তর্বর্তী প্রশাসনও।

এ অবস্থায় চলতি মে মাসের মধ্যেই অধ্যাদেশ জারি ও দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের দাবিতে শনিবার তারা আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার কথা বলছেন।

সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মো. নাইম হাওলাদার শুক্রবার বিকালে বলেন, শনিবার বিকাল ৪টায় ইডেন মহিলা কলেজের এক নম্বর গেইটে সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। প্রথম দিকে আমরা সফট কর্মসূচি দেব দ্রুত অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে। কাজ না হলে পরে কঠোর কর্মসূচি, এমনকি ব্লকেডের ঘোষণাও আসতে পারে।

আমাদের দাবি দ্রুত অন্তর্বর্তী প্রশাসন এবং চলতি মে মাসেই কলেজগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপান্তর করে অধ্যাদেশ জারি।

ঢাকা কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এ ছাত্র বলেন, ইউজিসি অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের একটি প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। কিন্তু সেটি ঝুলে আছে৷ এমন পরিস্থিতিতে আমরা আবারও রাজপথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

অধিভুক্তি বাতিলের পর কলেজগুলো অভিভাবকহীন, ভর্তিও বন্ধ। এ পরিস্থিতি সেশন জট সৃষ্টি করবে। অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠন হলে ভর্তি শুরু করা যাবে। তবে অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠন ও সাত কলেজকে স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দিয়ে অধ্যাদেশ জারি করতে অনেক সময় লাগছে।

সাত কলেজের জন্য অন্তর্বর্তী প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপান্তরের অধ্যাদেশের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি। অধ্যাপক ফায়েজ সাত কলেজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় রূপরেখা প্রণয়ন কমিটির প্রধান।

ঢাকার সরকারি সাতটি কলেজ হল- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এসব কলেজে শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ।

২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টের গণআন্দোলনে ক্ষমতার পালাবদলের পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে কলেজগুলোকে গত ২৭ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে মুক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর গত ১৬ মার্চ কলেজগুলোকে নিয়ে 'ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নামে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরের ঘোষণা আসে।

কলেজগুলোর অধিভুক্তি থেকে বাতিলের ঘোষণার মধ্যে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন চলছিল। কিন্তু সেই ঘোষণায় ভর্তি কার্যক্রম থেমে যায়।

সাত কলেজের জন্য 'ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি'র রূপরেখা প্রণয়ন করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি কমিটি। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গঠনের আগে কলেজগুলোর দায়িত্ব নিতে একজন অধ্যক্ষের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের প্রস্তাবও করে ইউজিসি।

বর্তমান শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক দায়িত্ব আপাতত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিলেও নতুন শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গঠনের আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী প্রশাসনের ওপর বর্তাবে। ইউজিসির প্রস্তাব গত ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে সে অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

ইউজিসির প্রস্তাব অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর, ভর্তি সংক্রান্ত দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর ও হিসাব বিভাগের প্রতিনিধি সমন্বয়ে সাময়িক একটি সমন্বিত কাঠামো থাকবে যা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে সাত কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করবে। একটি সনদপ্রাপ্ত পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় বা সমকক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতাভুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত এই সাময়িক কাঠামো সাতটি কলেজের দায়িত্ব পালন করবে।

ইউজিসি যে কাঠামোর প্রস্তাব করেছে সে অনুযায়ী, ইউজিসির একজন সদস্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি সাত কলেজের নজরদারি সংস্থা হিসাবে কাজ করবে। কাঠামোটির পরিচালক হবেন নজরদারি সংস্থা মনোনীত সাত কলেজের মধ্য থেকে একজন ‘যোগ্য ও অভিজ্ঞ’ অধ্যক্ষ।

এআর

Wordbridge School
Link copied!