• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এক বছরে কিডনি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে তিনগুণ 


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ৬, ২০২৩, ০৮:৪৬ পিএম
এক বছরে কিডনি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে তিনগুণ 

ঢাকা: দেশে এক বছরে কিডনি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে তিনগুণ। এমনকি চিকিৎসকরাও রোগটি থেকে মুক্ত নন, চিকিৎসকদের মধ্যেও কিডনি জটিলতায় মারা যাচ্ছেন। সংখ্যা যাই হোক কিডনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে ধীরে ধীরে কিডনি সমস্যা আক্রান্তের বেড়ে চলেছে। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে কিডনি রোগীর প্রকৃত সংখ্যা কত তার সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান নেই। ২০০৮ সালে কিডনি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঢাকার সাভারে ছোট একটি জরিপের উপর ভিত্তি করে বলা হয়েছিল, দেশে ২ কোটি মানুষ কোনো না কোনো কিডনি রোগে ভুগছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে কিডনি জটিলতায় যতো মানুষ মারা গেছে, ২০২০ সালে একই কারণে মারা গেছে এর চেয়ে ৩ গুণ। 

বিবিএস’র পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে ২০২০ সালে কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে মোট ২৮ হাজার ১৭ জন মানুষ মারা গেছে। কিন্তু ২০১৯ সালে মারা গেছেন ১০ হাজার ৬২২ জন। সাংবাদিকদের রক্ত ও প্রশ্রাব পরীক্ষা করে মগবাজারের ইনসাফ বারাকাহ কিডনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তারা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সদস্যদের ১৯৮ জনের মধ্যে ১৯ শতাংশের মধ্যে কোনো না কোনো কিডনি জটিলতা পেয়েছেন। 

অপরদিকে এই হাসপাতালে ২০২২ সালে কিডনি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মাসব্যাপী মোট এক হাজার ৯৮০ জনের রক্ত ও প্রশ্রাব পরীক্ষা করে ২১ শতাংশের মধ্যে কিডনির সমস্যা পাওয়া গেছে। 

বিবিএস বলছে, ২০২০ সালে দেশে বিভিন্ন রোগে ভুগে মোট ৮ লাখ লাখ ৫৪ হাজার ২৫৩ জন মানুষ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে কিডনি রোগে ভুগে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ১৭ জন। 
 
স্বাস্থ্য অধিদফতর ২০২১ সালে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ৩৯ লাখ ১৪ হাজার ৫৪৪ জন রোগীর তথ্য সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৪০৭ জন রোগী এসেছে কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে। এই রোগীদের ৫৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ২০২২ সালে দেশের ওই হাসপাতালগুলোতে ৩৩ হাজার ৩০৬ জন কিডনি রোগী ভর্তি হয়েছিল। এদের মধ্যে মারা গেছে এক হাজার ২৭ জন। 

ইনসাফ বারাকাহ কিডনি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. এম ফখরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বাংলাদেশে যেসব কিডনি রোগী ডায়ালাইসিস নিতে আসেন এদের ৫০ শতাংশ কিডনি প্রতিস্থাপনের যোগ্য। বর্তমানে দেশে ডায়ালাইসিস সেন্টারের সংখ্যা ও ডায়ালাইসি মেশিন বেড়েছে কিন্তু কিডনি রোগীর সংখ্যার তুলনায় ডায়ালাইসিস মেশিন খুবই স্বল্প। বর্তমানে বাংলাদেশে ১২২টি ডায়ালাইসিস সেন্টার রয়েছে, তবে এই সেন্টারগুলোর ৮০ শতাংশই বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। 

ফলে ডায়ালাইসিসের উচ্চ ফি’র কারণে সবাই ডায়ালাইসিস নিতে পারেন না। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ডায়ালাইসিসসহ কিডনি সমস্যার চিকিৎসক ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বাড়াতে হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও কিডনি দিবসকে সামনে রেখে মগবাজারের ইনসাফ বারাকাহ কিডনি হাসপাতাল আগামী গত ১ মার্চ থেকে আগামী ১৮ মার্চ পর্যন্ত বিনামূল্যে কিডনি রোগীদের সেবা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তারা এ উপলক্ষে কিডনি ক্যাম্পে নিবন্ধিত রোগীদের সিরাম ক্রিয়েটিনিন, ইউনিন আর/ই ও ডেন্টাল চেকআপ ফ্রি করার ঘোষণা দিয়েছে।

ক্যাম্প চলাকালীন বিভিন্ন পরীক্ষায় হাসপাতালে মূল্য রেট থেকে ৫০ শতাংশ ছাড় দেয়ারও ঘোষণা দিয়েছে  সোমবার হাসপাতালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে। এছাড়া ৩ হাজার টাকার ৬ পরীক্ষা (আল্ট্রসনোগ্রাম, ইসিজি, সিবিসি, সিরাম ক্রিয়েটিনিন, আরবিএস, ইউরিন আর/ই) পরীক্ষা মাত্র এক হাজার করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন একুশে পদক প্রাপ্ত ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল। বক্তব্য রাখেন নেফ্রলজি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো: ফিরোজ খান, হাসপাতালে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আলতাফ হোসেন।

সোনালীনিউজ/এআর

Wordbridge School
Link copied!