• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শাসন চলছিল বঙ্গবন্ধুর


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ৪, ২০২২, ০৫:৫৪ পিএম
শাসন চলছিল বঙ্গবন্ধুর

ঢাকা : অগ্নিঝরা মার্চের এই দিনটির ঘটনাপ্রবাহের দিকে তাকালে বোঝা যায় বাঙালি জাতি কী ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল মুক্তিযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। যে প্রস্তুতির সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন আমাদের ‘হ্যামিলনের বংশীবাদক’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কার্যত ৪ মার্চ পূর্ব বাংলায় ইয়াহিয়া-ভুট্টো নয়, চলছিল শেখ মুজিবের শাসন।

এদিন বঙ্গবন্ধু বিবৃতি দেন, হরতালের জন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যেসব কর্মচারী বেতন পাননি তাদের সুবিধার্থে প্রতিদিন দু ঘণ্টার জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে। বাংলাদেশের জন্য অনধিক পনের শ টাকা পরিমাণ বেতনের চেকই কেবল ক্যাশ করা যাবে। স্টেট ব্যাংকের মাধ্যমে অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে বাংলাদেশের বাইরে কোনো টাকা পাঠানো যাবে না। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের বেসামরিক, নিরস্ত্র শ্রমিক, কৃষক ও ছাত্রজনতা বুলেটের সামনে যে সাহস ও প্রত্যয়ের সঙ্গে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন তা বিশ্ববাসীর কাছে লক্ষণীয়। তাই বাংলার সকল শ্রেণিপেশার মানুষের প্রতি অভিনন্দন জানাচ্ছি।

পৃথক এক বিবৃতিতে পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রধান মাওলানা ভাসানী বলেন, ওরা সাম্রাজ্যবাদের দালাল। ওদের শোষণ-নির্যাতনে ৮৫ ভাগ বাঙালি আজ প্রায় মৃত্যুর সম্মুখীন। সুতরাং যে ব্যক্তি, যে রাজনৈতিক দল অথবা যে রাজনৈতিক নেতা পশ্চিমাদের সাথে কিংবা সাম্রাজ্যবাদীদের সাথে কোনো রকমের আঁতাত করবে বা করতে যাবে সে যে শুধু তার নিজস্ব ক্ষেত্র থেকে বিতাড়িত হবে তা নয়, বরং তার জানমালও বিপন্ন হবে। দেশের সকল সমপ্রদায়—মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, বাঙালি বা অবাঙালি সবার মধ্যে সহযোগিতা ও পূর্ণ শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানান মওলানা ভাসানী।

এদিন বাঙালির স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে সামরিক আইন প্রত্যাহারের দাবি জানায় পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়ন। ইউনিয়নের সভাপতি আলী আশরাফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়, ‘মার্চের গণআন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের হত্যার বিচারের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে এবং হতাহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’

সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ওপর যেসব বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় ৪ মার্চের সভায়। সেখানে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, ‘স্বাধীন মতামত প্রকাশের অধিকার না দিলে সাংবাদিকরা বেতার ও টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন না।’

এভাবেই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই চলছিল পূর্ব পাকিস্তান। জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত রাখার প্রতিবাদে প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতাল পালনের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে বাঙালি জাতি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!